জাতীয় ক্রীড়া বিল-এর সংশোধিত খসড়াকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের সঙ্গে আরও এক বার সংঘাতের পথে হাঁটতে পারে ভারতীয় বোর্ড। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মুকুল মুদগল কমিটির তৈরি এই খসড়া যদি শেষ পর্যন্ত আইনে পরিণত হয়, তা হলে ‘ভারত’ শব্দটা নিজেদের নামে ব্যবহার করার অধিকার হারাতে পারে ভারতীয় বোর্ড। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মঞ্চে আর ‘ভারত’-এর প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার থাকবে না মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের।
বোর্ডের অন্তর্বর্তী প্রধান জগমোহন ডালমিয়া অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কোনও তড়িঘড়ি মন্তব্যে নারাজ। বুধবার তিনি বলেছেন, “ক্রীড়া বিল-এর খসড়া হাতে না পাওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না। খসড়া খুঁটিয়ে দেখে বোর্ডের অন্য সদস্যদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করব। তার পরেই সিদ্ধান্ত নেব।”
বুধবার জাতীয় ক্রীড়া উন্নয়ন বিল-এর নতুন খসড়া কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। খসড়ার নবম অধ্যায় অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মঞ্চে সরকারি ভাবে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করতে চাইলে এবং নিজেদের নামে ‘ভারত’ শব্দটি ব্যবহার করতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ফেডারেশনকে তথ্যের অধিকার আইনের (আরটিআই) অন্তর্গত হতে হবে। একইসঙ্গে খেলাধুলোয় অনৈতিক কাজকর্ম সংক্রান্ত অধ্যায়ে ডোপ পরীক্ষা এবং আচরণবিধি সংক্রান্ত যা যা নিয়ম রয়েছে, সেগুলি মানতে হবে। এ দিকে বোর্ডের ঘোষিত অবস্থান, তারা আরটিআই মানবে না।
প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী অজয় মাকেনের জমানাতেই এ নিয়ে ক্রীড়া মন্ত্রকের সঙ্গে একপ্রস্ত লেগেছিল বোর্ডের। বিলটি সরাসরি তাদের স্বাধিনতায় সরকারি হস্তক্ষেপের চেষ্টা বলে দাবি করে ঘোরতর বিরোধিতা করেছিল বোর্ড। বোর্ডের সর্বসম্মত ঘোষিত নীতি ছিল, যেহেতু তারা কেন্দ্রীয় সরকারের নথিবদ্ধ ফেডারেশন নয় এবং কোনও সরকারি অনুদান পায় না, তাই তারা আরটিআই মেনে চলতে বাধ্য নয়। তবে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সচিব পি কে দেব মনে করছেন, সংসদে বিলটি পাস হয়ে আইন হয়ে গেলে বোর্ডকে তা মেনে নিতেই হবে। তবে বোর্ড যদি তথ্যের অধিকার আইন মানতে অস্বীকার করে তা হলে কি ধোনিরা আর ভারতের হয়ে মাঠে নামতে পারবেন না? প্রশ্নের উত্তরে ক্রীড়া সচিব বলেছেন, “খসড়া তো সবে ওয়েবসাইটে রয়েছে। আমরা সব মহলের বক্তব্যের অপেক্ষায় আছি।”
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ক্রীড়া বিলের প্রাথমিক খসড়া পাস না করে তাতে সংশোধন ঘটাতে বলেছিল। বর্তমান ক্রীড়া মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ দায়িত্ব নেওয়ার পর বিল-এর সংশোধিত খসড়া তৈরির জন্য বিচারপতি মুদগলের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেন। |