সিবিআইকে স্বাধীনতা আর
খনি বণ্টন, জোড়া চাপে কেন্দ্র
ক দিকে সিবিআইকে স্বাধীনতা দেওয়ার প্রশ্ন। আর এক দিকে যে মামলায় এই প্রশ্নের উত্থান, সেই কয়লা খনি বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগ দু’দিক থেকেই আজ দেশের শীর্ষ আদালতে চাপের মুখে পড়ে গেল মনমোহন সিংহ সরকার।
সুপ্রিম কোর্ট আজ কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, সিবিআইকে স্বাধীনতা দিতে প্রয়োজনীয় আইন-সংশোধন করা হোক। সংসদে এ নিয়ে বিতর্ক হোক। অন্য দিকে কয়লা খনি বণ্টন দুর্নীতির তদন্তে সিবিআইকে সহযোগিতা না করার জন্যও আজ কেন্দ্রীয় সরকারকে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে। বিচারপতি আর এম লোঢার নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ১৬৪টি কয়লা খনি বণ্টন সংক্রান্ত সমস্ত নথি আদালতে জমা দিতে হবে। সিবিআই সেগুলি খতিয়ে দেখবে। প্রত্যেকটি খনি বণ্টনের যৌক্তিকতা হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে। এ জন্য ৪ সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।
দু’টি ক্ষেত্রেই যথেষ্ট চাপে পড়ে গিয়েছে মনমোহন-সরকার। কারণ সিবিআইকে স্বাধীনতা দিতে সরকার কী চায়, তা আদালতে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট আজ তা নিয়ে বিশেষ আপত্তি করেনি। সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, বাদল অধিবেশনেই সংশোধনী বিল নিয়ে আসা হবে। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল বিজেপি আগেই এ বিষয়ে বেঁকে বসেছে। বিরোধী দল সহযোগিতা না করলে কী ভাবে সংসদে এ নিয়ে বিতর্ক এবং আইন সংশোধন সম্ভব, তা বড় প্রশ্ন। আবার সরকারের হলফনামা নিয়ে সিবিআইয়ের মতামতও জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আইন সংশোধন না হলে শীর্ষ আদালত নিজেই কিছু সাময়িক ব্যবস্থা তৈরি করে দিতে হস্তক্ষেপ করবে বলে সতর্ক করে রেখেছে। কয়লা খনি বণ্টন নিয়েও সুপ্রিম কোর্টের মনোভাবে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ঘরপোড়া মনমোহন-সরকার। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট টু-জি স্পেকট্রাম লাইসেন্স বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ১২২টি লাইসেন্স বাতিল করে দিয়েছিল। এ বার খনি বণ্টন নিয়েও তা হলে লোকসভা ভোটের মুখে বিরোধীরা নতুন অস্ত্র পেয়ে যাবে।
সিবিআই-প্রধান রঞ্জিৎ সিন্হা-ও চিন্তায় রেখেছেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। তিনি সিবিআইয়ের স্বাধীনতা চেয়ে সরকারের কাছে যে সব সুপারিশ করেছিলেন, তার অনেকগুলিই মেনে নেয়নি সরকার। যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল, যুগ্ম-সচিব বা তার থেকে উচ্চপদস্থ আমলাদের বিরুদ্ধে তদন্তের ক্ষেত্রে আগাম অনুমতির বিষয়। সিবিআই চাইলেও কেন্দ্রীয় সরকার অনুমতি ছাড়া তদন্তের ছাড় দেয়নি। এক দিকে সিবিআইকে স্বাধীনতা দেওয়ার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব নিয়ে সিবিআই-প্রধানের মতামত জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সিন্হা আদালতকে কী জানাচ্ছেন, তার উপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে। কয়লা খনি বণ্টনের তদন্তের বিষয়ে আজ সিবিআই যে রিপোর্ট পেশ করেছে, তাতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, কয়লা মন্ত্রক সিবিআইয়ের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না। অন্য দিকে সরকারকে চাপে ফেলে দু’দিন আগেই সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়, তদন্ত রিপোর্ট সরকারকে দেখাতে অনুমতি দেওয়া হোক। না হলে বেশ কয়েক জন আমলার বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমতি মিলছে না। অথচ সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে তদন্ত রিপোর্ট দেখাতে নিষেধ করেছিল। আইনমন্ত্রী হিসেবে অশ্বিনী কুমার ও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আমলারা রিপোর্ট দেখে ফেলাতেই সরকারকে তোপের মুখে পড়তে হয়। সিবিআইকে স্বাধীনতা দেওয়ার নির্দেশ আসে। সিবিআইয়ের কৌশলে কাজ হয়েছে। আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন সিবিআইকে তদন্তের জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে? এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল গুলাম বাহনবতীর জবাবদিহি চায় আদালত। বাহনবতী জানান, বর্তমান আইনে তেমনই বলা রয়েছে।

পুরনো খবর



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.