|
|
|
|
বদ্রীনাথের রাস্তা খুলতে পারে সেপ্টেম্বরে |
টানা বৃষ্টিতে ছাদ ধসে মৃত একই পরিবারের ৭ জন |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
দুর্যোগের মেঘ কাটতে না কাটতেই ফের বৃষ্টি উত্তরাখণ্ডে। একটানা বৃষ্টিতে বুধবার ভোরে ভেঙে পড়ল বাড়ির ছাদ। ঘুমের মধ্যে মারা গেলেন এক পরিবারের সাত জন। চামোলির অতিরিক্ত জেলাশাসক সঞ্জয় কুমার জানিয়েছেন, এ দিন ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে ধিকাউনা গ্রামে। ভারী বৃষ্টিতে পাহাড় থেকে বড় বড় পাথর গড়িয়ে এসে বাড়িটির উপর পড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচটি দেহ পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে তিনটি শিশু ও দু’জন মহিলা রয়েছেন। বাকি দু’জনকে খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। পৌঁছেছেন চামোলির জেলাশাসক-সহ অন্য আধিকারিকরা।
অন্য একটি ঘটনায়, রাস্তা সারানোর যন্ত্র খাদে পড়ে যাওয়ায় মৃত্যু হয়েছে চার জনের। সোমবার গঢ়বালের দ্বারিখাল ডেভলপমেন্ট ব্লকে কাজ করছিল যন্ত্রটি। সেটি খাদে পড়ে গেলে তার চালক-সহ চার জনের মৃত্যু হয়। আহত এক জনের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
এ দিকে উত্তরাখণ্ডে বন্যার প্রায় এক মাস পর সরকারি হিসেব মতো নিখোঁজের সংখ্যা ছুঁল প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারের গণ্ডি। উত্তরাখণ্ড প্রশাসনের তরফে এ দিন জানানো হয়েছে, এখনও নিখোঁজ ৫৩৬০ জন। এর মধ্যে সাড়ে চার হাজারের বেশি মানুষ অন্য রাজ্যের বাসিন্দা।
টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ি রাস্তায় ধস নামায় কৈলাস-মানস সরোবার যাওয়ার পথে গুঞ্জিতে এক মাসের উপর আটকে ছিলেন ৫২ জন পর্যটক। আজ তাঁদের সকলকে আকাশপথে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা হয়েছে। পিথোরাগড়ের আশপাশে ১৫টি গ্রামে এখনও আটকে প্রায় ৫০০ বাসিন্দা।
এ সবের মধ্যেই অবশ্য আজ আশার কথা শুনিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় বহুগুণা। সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখ নাগাদ বদ্রীনাথ, গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রী যাওয়ার রাস্তা ফের খুলে দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। বন্যাকবলিত উত্তরাখণ্ডে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজ কেমন চলছে তার তদারকি করতে মন্ত্রিদের নিয়ে একটি বিশেষ কমিটি তৈরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। বিপর্যয় মোকাবিলায় ১০০০ কোটির সাহায্যও ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
উত্তরাখণ্ডের কিছু জায়গায় নতুন করে বৃষ্টি শুরু হলেও আগের মতোই উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে রামকৃষ্ণ মিশন। বুধবার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সহ-সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে গত ২৩ জুন রুদ্রপ্রয়াগ থেকে ২৫ কিমি দূরে অগস্ত্য মুনি এলাকায় একটি ত্রাণ শিবির চালু করেছিলেন হরিদ্বার সেবাশ্রম, কনখল এর সন্ন্যাসীরা। এর গুপ্তকাশীর কাছে ফাটা এলাকাতেও শিবির চালু হয়েছে। অগ্যস্ত মুনি ত্রাণ শিবির থেকে প্রায় ৫ হাজার দুর্গতকে শুকনো খাবারের প্যাকেট, শিশুদের খাবার ও জলের বোতল দেওয়া হয়েছে। সহজে যাতায়াত করা যাচ্ছে না, রুদ্রপ্রয়াগ ও গুপ্তকাশীর এমন ৩০টি গ্রামের কয়েক হাজার পরিবারের কাছেও ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। দেহরাদূন আশ্রম যোশীমঠে শিবির খুলে শুকনো খাবার, জামা, কাপড় ও কম্বল দিচ্ছে।
স্বামী সুবীরানন্দ বলেন, “আমাদের ২০ জন সন্ন্যাসী উত্তরাখণ্ডে রয়েছেন। ত্রাণের পাশাপাশি দুর্গতদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও রয়েছে।” দুর্গতদের সাহায্যার্থে নগদে কিংবা চেক এর মাধ্যমে রামকৃষ্ণ মিশনের নামে অনুদান দেওয়া যাবে এবং বেলুড় মঠের ওয়েবসাইটের (www.belurmath.org/donation_cca/donation.php) মাধ্যমে অন লাইনেও অনুদান দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষ। উত্তরাখণ্ডের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের তুফানগঞ্জেও বন্যা দুর্গতদের সাহায্যে ত্রাণ শিবির করেছে কুচবিহার রামকৃষ্ণ মিশন। |
|
|
|
|
|