গত কয়েক দিন ধরে অসম ও উত্তরবঙ্গে লাগাতার বৃষ্টি হওয়ায় জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি-সহ ডুয়ার্সে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, অসমে লাগাতার বৃষ্টি হয়ে চলেছে। এর ফলে অসম থেকে হুড়মুড়িয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদীতে জল নেমে আসছে। জলস্তর বেড়ে গিয়েছে বহু নদীতে। সেই সঙ্গে উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টি হয়ে চলেছে। তিস্তায় ইতিমধ্যেই লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে বলে সেচমন্ত্রী জানিয়েছেন। রাজীববাবু বলেন, “রায়ডাক, তোর্সা, জলঢাকা-সহ কালজানি নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে।” তিনি জানান, সিকিম ও ভুটানেও ভাল বৃষ্টি হচ্ছে।
টানা বৃষ্টিতে নদীর জল যেমন বেড়েছে, তেমনিই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন শহরের সড়ক-গলিও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। |
শিলিগুড়িতে পঞ্চনই নদী থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের পলাশবাড়ি এলাকায় সঞ্জয় নদীতে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গিয়েছেন সুরজ মুন্ডা (২৪) নামে এক যুবক। দু’ক্ষেত্রেই পুলিশের আশঙ্কা, জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। কোচবিহারের তুফানগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকে প্রায় ৭০ হাজারের বেশি মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন বলে প্রশাসন জানিয়েছে। হলদিবাড়ির কাকপাড়া এলাকায় একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের রান্নাঘরের দেওয়াল বৃষ্টির জলের তোড়ে ধসে গিয়ে এক মহিলা আহত হয়েছেন। আলিপুরদুয়ার পুরসভার অনেক এলাকায়ও জল জমে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নিয়েছেন। সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান ও সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি।” উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল আটটা পর্যন্ত আলিপুরদুয়ার ও শিলিগুড়িতে ২৭২ মিলিমিটার, জলপাইগুড়িতে ১৫৬ মিলিমিটার, কোচবিহারের মাথাভাঙায় ১৪৪ মিলিমিটার এবং তুফানগঞ্জে ১৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ডুয়ার্সের বারবিসা এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ২৭৯ মিলিমিটার, ময়নাগুড়িতে ১০১ মিলিমিটার, হলদিবাড়িতে ২০৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, তিস্তা, কালজানি, চেল, জলঢাকার জল বিপদসীমা ছুঁয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “আগামী দু’দিন বৃষ্টি চলবে। জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।” |