বিরাট আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং সংস্থার অন্যতম অধিকর্তা দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে জেল-হাজতে রাখার জন্য বিভিন্ন আদালত বিভিন্ন সময়ে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু কাশ্মীরে ধরা পড়ার পর থেকে ওই দুই অভিযুক্ত ৭০ দিন ধরে পুলিশি হেফাজতেই রয়েছেন। সেটাও বিভিন্ন আদালতের নির্দেশেই। অথচ প্রতারণার মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে চার্জশিট পেশ করার কথা বলে আইনজীবীদের অভিমত।
এই অবস্থায় সুদীপ্ত-দেবযানীকে জামিন দেওয়ার জন্য তাঁদের আইনজীবীরা মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে আবেদন জানান। বিচারক জামিনের আর্জি খারিজ করে অভিযুক্তদের ২৩ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
সারদা মামলায় মূল দুই অভিযুক্তকে এ দিন আলিপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করানোর কথা ছিল। কিন্তু শিলিগুড়ি আদালতের নির্দেশে অভিযুক্তেরা পুলিশি হেফাজতে থাকায় তাঁদের আলিপুর আদালতে হাজির করানো যায়নি। অভিযুক্তদের আইনজীবী সমীর দাস ও অনির্বাণ গুহঠাকুরতা আলিপুর আদালতের বিচারক ইন্দিবর ত্রিপাঠীর এজলাসে জানান, আদালত অভিযুক্তদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিলেও তাঁরা সেখানে থাকতেই পারছেন না। রাজ্যের বিভিন্ন আদালতের নির্দেশে অভিযুক্তদের পুলিশি হাজতে রাখার মেয়াদও শেষ হচ্ছে না। তদন্তের স্বার্থে সুদীপ্ত-দেবযানীকে ৭০ দিন ধরে পুলিশি হেফাজতেই রাখা হয়েছে। অথচ যে-সব মামলা দায়ের করা হয়েছে তাতে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে চার্জশিট পেশ করার কথা পুলিশের।
সুদীপ্ত ও দেবযানীকে গত ২৩ এপ্রিল কাশ্মীর থেকে গ্রেফতার করে বিধাননগর পুলিশ। ২৫ এপ্রিল তাঁদের কলকাতায় আনা হয়। তার পর থেকে অভিযুক্তদের ক্রমাগত বিধাননগর, বারুইপুর, আলিপুর, কলকাতা মেট্রোপলিটন, বালুরঘাট এবং শিলিগুড়ির আদালতে হাজির করানো হচ্ছে বলে আইনজীবীরা জানান। তাঁরা এ দিন আদালতে আর্জি জানান, তাঁদের মক্কেলদের বিরুদ্ধে আনা সব মামলার বিচার যাতে একটি আদালতে হতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হোক।
ওই আবেদনের বিরোধিতা করে সরকারি আইনজীবী পীযূষকুমার মণ্ডল এ দিন আদালতে জানান, সারদা কাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলার বিচার প্রক্রিয়া এক আদালতে চালানো সম্ভব নয়। কারণ, প্রতিটি মামলারই তথ্য আলাদা, তাৎপর্যও আলাদা। বিভিন্ন মামলার মধ্যে তথ্যের ফারাকও আকাশ-পাতাল। জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, “এখনও তদন্ত চলছে। অভিযুক্তেরা জামিন পেয়ে গেলে সাক্ষ্যপ্রমাণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।” |