সিপিএম ভেঙে পিডিএস গঠনের ১২ বছর পর দু’দল কাছাকাছি আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পুরুলিয়ার ২ নম্বর ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে পিডিএসের সঙ্গে আসন রফা হয়েছে সিপিএমের। মঙ্গলবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু এ কথা জানিয়ে বলেন, “বামফ্রন্টের শরিক দলের বাইরে পিডিএসের সঙ্গে জেলা স্তরে ঐক্য হয়েছে।”
জন্মলগ্ন থেকেই সৈফুদ্দিন চৌধুরী, সমীর পুততুণ্ডদের পিডিএস দল সিপিএম-বিরোধী। এই প্রথম দু’দলের আসন-রফা হল। সোমবার মহাজাতি সদনে জ্যোতি বসুর জন্মশতবর্ষ অনুষ্ঠানে বসুর প্রতিকৃতিতে মালা দেওয়ার পর প্রবল করতালি দিয়ে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকরা অভিনন্দন জানান সমীরবাবুকে। আগামী দিনে পিডিএসের বামফ্রন্টের শরিক হওয়ার সম্ভাবনা কি রয়েছে? জবাবে বিমানবাবু জানান, “তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ওঁদের তরফে বামফ্রন্টের শরিক হওয়ার জন্য আবেদন আসেনি। এলে দেখা যাবে।”
অন্য দিকে, পিডিএসের রাজ্য সম্পাদক সমীর পুততুণ্ড জানান, তাঁদের দলের রাজ্য সম্মেলনে ঠিক হয়েছিল, পঞ্চায়েত ভোটে জেলা স্তরে ধর্মনিরপেক্ষ দলের সঙ্গে ঐক্য করা যেতে পারে। সেই সূত্র ধরেই পুরুলিয়া ২ নম্বর ব্লকে সিপিএমের সঙ্গে ঐক্য হয়েছে। আর কোনও জেলায় দু’দলে ঐক্য হয়নি, তা জানিয়ে সমীরবাবু বলেন, “পারা, রঘুনাথপুর-২ নম্বর ব্লক ও হুড়াতে পিডিএস একাই লড়ছে। মানবাজারে অবশ্য কংগ্রেস-সিপিএম-পিডিএসের মধ্যে আসন-রফা হয়েছে।” তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের একাংশের ক্ষোভ বাড়ছে বুঝতে পেরেই সংগঠন ধরে রাখতে আগামী দিনে বামফ্রন্টের দিকে ঝুঁকতে পারে পিডিএস। তারই প্রাথমিক ধাপ এই আসন সমঝোতা।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ব্যক্তিগত ভাবে চান সৈফুদ্দিন-সমীররা সিপিএমে না ফিরলেও ফ্রন্টে যোগ দিন। বিমানবাবুও একমত। দুই নেতার ঘনিষ্ঠরা পিডিএসকে সেই বার্তাও দিয়েছেন। কিন্তু এক দিকে রেজ্জাক মোল্লার নেতৃত্বাধীন দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাংশ ও মদন ঘোষদের নেতৃত্বাধীন বর্ধমান লবির এ ব্যাপারে প্রবল আপত্তি। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ে যে ভাবে পিডিএস নেতারা মমতার পাশে দাঁড়িয়ে বামফ্রন্ট সরকারের বিরোধিতা করেছিলেন, সেই উদাহরণ তুলেই রেজ্জাক-মদনরা পিডিএস বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিমানবাবু জানান, ফ্রন্ট প্রার্থী না থাকলে নির্দলদের সমর্থন করা হবে। তবে, তৃণমূল বা অন্য দলের টিকিট না পেয়ে যাঁরা নির্দল, তাঁদের সমর্থন করা হবে না বলে বিমানবাবু জানান। |