যেত ডাক্তার ও আইনজীবীর কাছে
শহরে ঘনঘন আসত ধৃত জঙ্গি আনোয়ার
ন্ডিয়ান মুজাহিদিনের চাঁই ইয়াসিন ভটকলের হাতে বিস্ফোরক তুলে দেওয়া নদিয়ার আনোয়ার হুসেন মল্লিক সল্টলেকের এক মহিলা আইনজীবীর সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতে আসত। তা ছাড়া, আনোয়ারকে জেরা করে হাওড়ার এক চিকিৎসকের নামও জেনেছেন কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর গোয়েন্দারা।
এসটিএফ সূত্রের খবর, ওই দু’জনকেই গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। আনোয়ারের দাবি, ২০০৬ সালে হাওড়ার ওই চিকিৎসকের কাছে সে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে এসেছিল। আর পারিবারিক জমি সংক্রান্ত একটি বিবাদের নিষ্পত্তির বিষয়ে পরামর্শ করতে ওই মহিলা আইনজীবীর কাছে আসত আনোয়ার। কিন্তু কী সূত্রে আনোয়ারের সঙ্গে ওই দু’জনের যোগাযোগ, তা গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন। আইএম-এর মতো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে আনোয়ারের সম্পর্কের বিষয়টি আইনজীবী ও চিকিৎসক জানতেন কি না, গোয়েন্দারা তা জানার চেষ্টা করছেন। কলকাতা বা তার আশপাশে এলে তিলজলার কাছে ভিআইপি নগরে দুই মহিলার বাড়িতে এসে উঠত আনোয়ার। ওই দুই মহিলা আদতে আনোয়ারের গ্রামেরই বাসিন্দা। পরবর্তী সময়ে তাঁরা কলকাতায় বাড়ি করে উঠে আসেন। ওই দুই মহিলার মধ্যে এক জন পেশায় নার্স। তাঁদেরও গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
ভারতে বিভিন্ন নাশকতা ঘটানোর জন্য বিস্ফোরক সরবরাহে জড়িত হিসেবে সন্দেহভাজন, বাংলাদেশের নাগরিক কাঞ্চন ওরফে সরিফুল এবং মুতালিব ওরফে বড়ে ভাইয়ের সঙ্গে আনোয়ারের যোগাযোগ ছিল কি না, দেখছে এসটিএফ। ওই দু’জনের নাম কয়েক বছর ধরে এসটিএফ জানলেও এখনও তাদের গ্রেফতার করা যায়নি।
তবে আনোয়ারকে জেরা করে গোয়েন্দারা নিশ্চিত, শুধু ২০০৯-এর সেপ্টেম্বরেই নয়, বেশ কয়েক বার সে আইএম-এর জন্য বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে নদিয়ার চাপড়ার গোংরা সীমান্ত দিয়ে বিস্ফোরক এনে কলকাতায় ‘ডেলিভারি’ দিয়েছে। অর্থাৎ, দেশের বেশ কয়েকটি নাশকতা ঘটানোর জন্য বিস্ফোরক সরবরাহ করেছিল এই আনোয়ার। সে জন্য ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইনটেলিজেন্স ব্যুরো ছাড়াও মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, দিল্লি ও অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের দল লালবাজারে এসে আনোয়ারকে জেরা করবে। আসলে আনোয়ার নিজে স্বীকার করার আগেই এসটিএফ জানত, ২০০৯-এর সেপ্টেম্বরে কলকাতায় সায়েন্স সিটি-র কাছে এসে ইয়াসিন ভটকল তার কাছ থেকে বিস্ফোরক নিয়ে গিয়েছে। আর ২০০৯-এর নভেম্বরে একই জায়গায় ইয়াসিনের হাতে বিস্ফোরক তুলে দেওয়ার কথা থাকলেও তার দু’দিন আগে ভটকল ধরা পড়ে যায়।
আনোয়ারের সরবরাহ করা বিস্ফোরক দিয়ে জার্মান বেকারি ছাড়াও চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামেও বিস্ফোরণ হয়েছিল কি না, সেই ব্যাপারেও তদন্ত চলছে। ওই ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত, বর্তমানে বেঙ্গালুরুর জেলে বন্দি কামাল হাসান ওরফে বিলালকে আনোয়ারের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করলে আরও নিখুঁত তথ্য পাওয়া যাবে বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন।
বাংলাদেশের চুয়াডাঙা জেলার কুতুবপুর-মুন্সিপুর গ্রামের কে তাকে বিস্ফোরক দিয়েছিল, সে বিষয়ে আনোয়ার এক জনের নাম বলেছে। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে। এক গোয়েন্দা অফিসারের কথায়, “আমরা জেনেছি, আনোয়ার ২০০০ সাল থেকে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে যাতায়াত করছে। বিস্ফোরক সরবরাহকারী ওই ব্যক্তির সঙ্গে আনোয়ারের সম্পর্কও তখন থেকেই। কাজেই শুধু ২০০৯ সালের সেপ্টেম্বরে সে বিস্ফোরক সরবরাহ করেছে, আনোয়ারের এমন দাবি বিশ্বাস করার যৌক্তিকতা নেই। ২০০৯-এর নভেম্বরে বিস্ফোরক সরবরাহের আগেই ইয়াসিন গ্রেফতার হয়ে যাওয়ায় সেটা আনোয়ার কাকে দিল, তা জানাও জরুরি।”

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.