|
|
|
|
অবসরপ্রাপ্ত অফিসার ধৃত রাজারহাটে |
সরকারি কোষাগারের টাকা লোপাট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলচর ও কলকাতা |
সরকারি কোষাগারের কোটি কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল কাছাড় জেলা পরিষদের অবসরপ্রাপ্ত মুখ্য কার্যবাহী অফিসার (সিইও) বহ্নিশিখা দত্তকে। মঙ্গলবার সকালে নিউ টাউন থানার পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে রাজারহাটের একটি বহুতলে হানা দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করেন আসাম পুলিশের অফিসাররা। পুলিশ জানায়, বারাসত আদালতে পেশ করা হলে বিচারক বহ্নিশিখাদেবীকে ৭ দিনের ‘ট্রানসিট রিমান্ডে’ অসমে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আসাম সিভিল সার্ভিসের ওই অফিসার ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসর নেন। তার পরই তিনি পশ্চিমবঙ্গে চলে এসেছিলেন। থাকতে শুরু করেন রাজারহাটের ফ্ল্যাটে। অভিযোগ, ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসর নেওয়ার পর তিনি নিজে চেক-এ স্বাক্ষর করে সরকারি তহবিল থেকে টাকা তোলেন।
প্রাথমিক তদন্তের পর জেলা প্রশাসন জানায়, তার পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা। পরে তদন্তকারী ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়ে দেন, জেলা পরিষদের কয়েক কোটি টাকার হিসাব মিলছে না। সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী,পঞ্চায়েত ভবন নির্মাণ, বিধবা-বিকলাঙ্গ-প্রসূতি ভাতার টাকা মিলিয়ে লোপাট হওয়া টাকার পরিমাণ কত হতে পারে, তদন্ত শেষ হলেই তা জানা যাবে।
অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ প্রথমে কাছাড় জেলা পরিষদের দু’জন কর্মীকে গ্রেফতার করে। হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানান বহ্নিশিখাদেবী। আবেদন খারিজ করে শিলচর আদালতে তাঁকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। আগাম জামিনের বিষয়ে কিছু না-জানালেও ৪ জুন একটি নির্দেশে সর্বোচ্চ আদালত জানায়, এখনই তাঁর আত্মসমর্পণ করার প্রয়োজন নেই।
রায়ের ফাঁক ধরেই এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ নিউ টাউন থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে রাজারহাটের টিএস ব্লকে বহ্নিশিখাদেবীর পাঁচতলার ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় আসাম পুলিশ। স্বামীর সঙ্গে তখন সেখানেই ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ওই অফিসার। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন কাছাড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব বরা। সঙ্গে ছিলেন মামলার তদন্তকারী অফিসার মুকুট কাকতি। কাছাড়ের পুলিশ সুপার দিগন্ত বরা জানিয়েছেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে বহ্নিশিখাকে শিলচরে নিয়ে আসা হচ্ছে। সেখানেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
বহ্নিশিখা কাণ্ড-সহ ২০০৬ থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তহবিলে কাছাড়ে কত টাকা এসেছে, কোথায় কী ভাবে তা খরচ হয়েছে, সিবিআই-কে দিয়ে তার তদন্ত করানোর দাবি তুলেছে রাজ্য বিজেপি। দলের মুখপাত্র রাজদীপ রায় জানান, শীঘ্রই তাঁরা এই দাবি নিয়ে রাজ্যপালের কাছে যাবেন।
|
|
|
|
|
|