আজ মত জানাবে সুপ্রিম কোর্ট
দায়বদ্ধতার অস্ত্রে পাল্টা চাপ সিবিআইয়ের
‘খাঁচার তোতা’ সিবিআই-কে রাজনৈতিক প্রভুদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে আগামিকাল নিদান দেবে সুপ্রিম কোর্ট। তার ঠিক আগে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাদের আইনি দায়বদ্ধতার প্রসঙ্গ কৌশলে উস্কে দিয়ে সরকারের উপরেই চাপ বাড়াল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
সিবিআই কয়লা খনি দুর্নীতির তদন্ত রিপোর্ট আইনমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের কর্তাদের দেখানোয় ক্ষুব্ধ হয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তখনই শীর্ষ আদালতের নির্দেশ ছিল, সরকারকেই সিবিআই-কে স্বাধীনতা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে সরকার ইতিমধ্যেই কোর্টে হলফনামা দিয়েছে। আগামিকাল চূড়ান্ত শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট এ ব্যাপারে তার মত জানিয়ে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সোমবার আবার তদন্ত রিপোর্টের একাংশ সরকারকে দেখানোর জন্য আদালতের অনুমতি চেয়ে বসেছে সিবিআই। সংস্থাটির যুক্তি, বর্তমান আইন অনুযায়ী ওই তদন্ত রিপোর্ট দেখিয়েই সরকারের কাছ থেকে বেশ কিছু আমলার বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমতি আদায় করতে হবে তাদের।
‘দিল্লি পুলিশ এসট্যাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট’ (সিবিআই যার আওতায়) অনুযায়ী, যুগ্মসচিব এবং তার উপরের স্তরের আমলাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হলে সিবিআই-কে সরকারের অনুমতি চাইতে হয়। স্বভাবতই, তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কেও জানাতে হয়। এর আগে সিবিআই প্রধান রঞ্জিত সিন্হা সরকারের কাছে দাবি করেছিলেন, আইন সংশোধন করে সিবিআই-কে আগাম অনুমতি ছাড়াই ওই স্তরের আমলাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার অনুমতি দেওয়া হোক। সরকার তা মেনে নেয়নি।
এ বার সিবিআই সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, কয়লা খনি বণ্টন দুর্নীতিতে যুগ্মসচিব এবং তার উপরের স্তরের বেশ কয়েক জন আমলার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই তিন জন উচ্চপদস্থ আমলার বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমতি মিলেছে। বাকিদের বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমতি পাওয়ার জন্যই প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া প্রমাণগুলি সরকারের সামনে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরা হবে। এ দিকে, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, তদন্ত রিপোর্ট আদালত ছাড়া আর কাউকে দেখানো যাবে না। তাই তাদের সামান্য ছাড় প্রয়োজন।
কাজেই অনেকে মনে করছেন, বর্তমান আইন মানতে গেলে যে দুর্নীতির তদন্ত-রিপোর্ট সরকারকে না দেখিয়ে উপায় নেই, সেই বার্তাই দিতে চাইলেন সিবিআই-প্রধান। সরকারি সূত্রে আবার বলা হচ্ছে, দুর্নীতির অভিযোগে কারও বিরুদ্ধে তদন্ত হলে তার আগাম অনুমতি নিয়ে থাকে সিবিআই। তাদের পুরোপুরি ছাড় দেওয়া হলে সেই ক্ষমতার অপব্যবহার হতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর সিবিআইকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া নিয়ে মন্ত্রিগোষ্ঠী গঠন করা হয়েছিল। তাদের সুপারিশে সিলমোহর দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। ওই সুপারিশে বলা হয়েছিল, কোনও সরকারি আমলার বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমতি চেয়ে তিন মাসের মধ্যে না পেলে সিবিআই নিজেই মামলা করতে পারবে। বলা হয়েছিল, সিবিআই প্রধান নিয়োগে প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী দলনেতা এবং প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে একটি কলেজিয়াম গঠন করা হবে। একমাত্র কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনের সুপারিশেই রাষ্ট্রপতি সিবিআই প্রধানকে অপসারিত করতে পারবেন। সিবিআইয়ের তদন্তে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্বে থাকবে তিন জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত একটি ‘দায়বদ্ধতা কমিশন’।
বিরোধীদের অভিযোগ, ঘুরেফিরে কেন্দ্র সেই সিবিআইকে নিয়ন্ত্রণেরই রাস্তা খুঁজছে। সিবিআই-ও মনে করছে, বিরোধী দলের আপত্তিতে সরকারের এই সমস্ত প্রস্তাব আইনে পরিণত হতে পারবে না। সংসদেই আটকে থাকবে। দায়বদ্ধতা কমিশন সিবিআইয়ের নতুন প্রভু হয়ে উঠতে পারে বলেও সংস্থার কর্তাদের আশঙ্কা।
বিরোধী দল বা সিবিআই-কে সন্তুষ্ট করতে পারেনি সরকারের প্রস্তাব। সুপ্রিম কোর্ট সন্তুষ্ট হয় কি না, সেটাই দেখার।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.