টাকার বাজারে দোলাচল চলছেই। আর, ডলারে টাকার দাম স্থিতি খুঁজে না-পাওয়ায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে শিল্পমহল ও শেয়ার বাজারে।
সোমবার সকালের লেনদেনে ডলারে ৬১-রও নীচে নামল টাকা। প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬১.২১ টাকা। যা শুক্রবারের বাজার বন্ধের দর ৬০.২২-র চেয়ে ৯৯ পয়সা কম। ফের নজির ভেঙে টাকা এই নতুন তলানি ছোঁয়ায় শিল্পমহল এতটাই উদ্বিগ্ন যে, তাদের সঙ্গে বিষয়টি মুখোমুখি আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ বৈঠকে বসছেন আগামী ২৯ জুলাই। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এ দিনই বৈঠক করেছে তেল সংস্থাগুলির সঙ্গে, কারণ তাদের ডলারের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। এই চাহিদার চাপই টাকার দাম পড়ার অন্যতম কারণ। |
এই পরিস্থিতিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নতুন দাওয়াই প্রয়োগ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে।
সেটি হল: তেল সংস্থাগুলি শীর্ষ ব্যাঙ্কের বিশেষ কাউন্টার মারফত ডলার কিনুক। ওই কাউন্টার থেকেই তেল আমদনির জন্য ডলার কিনবে ওই সব সংস্থা, বৈদেশিক মুদ্রার বাজার থেকে নয়। সে ক্ষেত্রে বাজারে টাকার দামের উপর চাপ কম পড়বে। ব্যাঙ্কের মাধ্যমে থোক ডলার বিক্রি না-করে এই ভাবে নিয়ন্ত্রণ আনার পথই শীর্ষ ব্যাঙ্ক বেছে নেবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের ইঙ্গিত।
শিল্পমহলের দুশ্চিন্তা কমাতে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন ২৯ জুলাই। টাকার পতনের প্রবণতা কমানো এবং চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতি (বৈদেশিক মুদ্রার আয়-ব্যয়ের ফারাক) বাগে আনার উপায় নিয়ে আলোচনাই বৈঠকের লক্ষ্য। বৃদ্ধির সড়কে অর্থনীতিকে ফিরিয়ে আনার কোন পথ শিল্পপতিরা বাতলান, সেটাও খতিয়ে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী।
বাজার বন্ধের সময়ে সোমবার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মাধ্যমে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডলার বিক্রির জেরে কিছুটা হাল ফেরে টাকার। ফলে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়ায় ৬০.৬১ টাকা। টাকা এ দিন পড়েছে ৩৯ পয়সা। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শেয়ার বাজার পড়েছে ১৭১ অঙ্ক। বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স ছিল ১৯,৩২৪.৭৭ পয়েন্টে। দুর্বলটাকা বিদেশি লগ্নিকারীদের ভারতের বাজার থেকে দূরেই রাখবে বলে আশঙ্কা লেনদেনকারীদের। পাশাপাশি, চলতি খাতে লেনদেন ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ ছায়া ফেলে শেয়ার বাজারে। এই ঘাটতি বাড়তে থাকলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে তার ঋণনীতি ফিরে দেখতে গিয়ে সুদ কমানোর পথে না-ও হাঁটতে পারে বলে বাজারের ধারণা। বিশেষজ্ঞরাও ইঙ্গিত দিয়েছেন, এ যাত্রায় শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ কমানো থেকে বিরতই থাকবে। |