বিমানবন্দর তৈরির কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে উপনগরী তৈরির জন্য পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও চলছে। তবু অণ্ডালের প্রস্তাবিত বিমাননগরীর লিজ-চুক্তি নিয়ে জট কাটল না! মহাকরণের খবর, জট কাটাতে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মাথায় রেখে সোমবারে একটি মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরি করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কাল, বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করবে তারা।
প্রকল্পের মূল অংশীদার বেসরকারি সংস্থার দাবি, বিমাননগরীর জন্য ২০০৯-১০ সালে তৎকালীন বাম সরকারের আমলে জমির লিজ-ডিড সই হয়েছে। আর ২০০৯ সালে সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের এই প্রকল্পের জন্য চুক্তি সই হয়েছে। সেই মতো, মোট ১৮১৮ একর অধিগৃহীত জমির মধ্যে ৬৫০ একরে তৈরি হয়েছে বিমানবন্দর। বাকি জমিতে তৈরি হবে উপনগরী। চুক্তি অনুযায়ী, উপনগরীর পরিকাঠামো তৈরি করে তা বিভিন্ন সংস্থাকে বিক্রি (অ্যাসাইন) করবে যৌথ উদ্যোগের সংস্থা। বস্তুত, জমি বিক্রির কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে।
এখানেই প্রশ্ন তুলেছে নতুন সরকার। এই প্রকল্পের জন্য বাম আমলে যে চুক্তি হয়েছে, তা পুরোপুরি মানবে না বলে অংশীদার সংস্থাকে জানিয়ে দেয় সরকার। রাজ্যের বক্তব্য, লিজ জমি বা আবাসন যাদের বিক্রি করা হচ্ছে, তাদের ‘ফি’ দিতে হবে সরকারকে। সংস্থার অভিযোগ, একটি জমির জন্য একবার সরকারকে ৮% স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয়েছে। সেই জমির জন্য আবার ‘অ্যাসাইন ফি’ দিতে হবে ১০% অর্থ। সরকারের বক্তব্য, লিজ জমি বিক্রি করার আগে সরকারের আগাম অনুমতি নিতে হবে। সংস্থার বক্তব্য, চুক্তিতে এমন কোনও শর্ত নেই।
মূলত এই দু’টি বিষয় নিয়ে গত দু’বছর ধরে সরকারের সঙ্গে অংশীদার বেসরকারি সংস্থার বহু আলোচনা হয়েছে। তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। এ প্রসঙ্গে এ দিন শিল্পমন্ত্রী বলেন, “লিজ চুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আমরা বিমানবন্দরের অংশটির অনুমোদন দিয়ে দিয়েছি। কিন্তু লিজ জমি ‘অ্যাসাইন’ করা নিয়ে সমস্যা রয়েছে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কী চাইছেন এবং সরকারের কী করণীয়, মন্ত্রিগোষ্ঠী মূলত সেটাই খতিয়ে দেখবে। শিল্পমন্ত্রী ছাড়াও ওই গোষ্ঠীতে রয়েছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
সংস্থার দাবি, অণ্ডালের বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ শেষ। এখন বিমান মন্ত্রকের তরফে পরিদর্শনের কাজ চলছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী বছরের শুরুতে বাণিজ্যিক ভাবে উন্মুক্ত হয়ে যাবে এই বেসরকারি বিমানবন্দর। কিন্তু উপনগরীর ভবিষ্যৎ কী, তাই নিয়ে সংশয় কাটছে না। যদিও বেসরকারি সংস্থার দাবি, উপনগরীর পরিকাঠামো তৈরির কাজ তারা দু’বছরে শেষ করতে চায়। |