বারাসতের কামদুনিতে কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তেরা ধরা পড়ার পর থেকে প্রতিবাদীদের শাসানি দিয়ে চলেছে। অভিযুক্তেরা ছাড়া পেয়ে গেলে তাঁদের জীবন বিপন্ন হতে পারে বলে মনে করছেন টুম্পা ও মৌসুমী কয়ালের মতো প্রতিবাদী তরুণী ও অন্যেরা। এই আতঙ্কই তাঁদের ফের পথে নামার রসদ জোগাচ্ছে। বড় আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কামদুনি।
শুক্রবার টুম্পা বলেন, “সিআইডি অসম্পূর্ণ চার্জশিট পেশ করার পর থেকেই আমরা খুব ভয়ে ভয়ে আছি। ওই দুষ্কৃতীগুলো পুলিশের জিপে ওঠার আগে বলে গিয়েছে, ‘ছাড়া পেলে দেখে নেব’। যদি ছাড়া পেয়ে যায়, তা হলে কী হবে?” টুম্পার পাশে দাঁড়ানো মৌসুমীর গলাতেও ত্রাস। সেই সঙ্গে লড়াই চালানোর দৃঢ়সঙ্কল্পও। মৌসুমী বলেন, “অভিযুক্তেরা বাইরে বেরিয়ে এলে আমাদের ছাড়বে না। তাই ওরা যাতে ছাড়া না-পায়, তার জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালাতে হবে। |
এ দিন কামদুনির প্রতিবাদীদের কাছে গিয়ে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন মহকুমা আদালতের শ’পাচেক আইনজীবী। ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের কয়েক জন আইনজীবীও। এ দিন কামদুনিতে যান প্রাক্তন আইএএস-আইপিএসদের একটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। লড়াই চালাতে গেলে কী পথে চলতে হবে, তা নিয়ে কামদুনির বাসিন্দাদের পরামর্শ দেন তাঁরা। হাইকোর্টের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ধর্ষিতার পরিবারকে বলেন, “এই অবস্থায় দ্রুত বিচার পেতে গেলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হবে।” রাজ্যের প্রাক্তন আইনমন্ত্রী নিশীথ অধিকারীও বিক্ষোভকারীদের বলেন, “আমরা সবাই কামদুনির মানুষদের পাশে আছি। প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাব।”
আইনজীবীরা জানান, সিআইডি নিহত কলেজছাত্রীর দুই ভাইকে ভবানী ভবনে ডেকে জবানবন্দি নিয়েছে। জবানবন্দি গ্রামে বসেই নেওয়া যেত। কামদুনির বাসিন্দাদের আশঙ্কা, ভবানী ভবনে জবানবন্দি নেওয়ার সময় দুই ভাইয়ের মুখে সুবিধামতো কথা বসিয়ে নিয়েছে সিআইডি। প্রাক্তন আমলাদের সংগঠনের অন্যতম নেতা, মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যসচিব দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “কামদুনির আন্দোলন গোটা দেশের নজর কেড়েছে। আমরাও তাই ওদের সঙ্গে আছি।”
|