গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা আটকে যাত্রীদের মাথায় রিভলভার ধরে অবাধে লুঠপাট চালাল দুষ্কৃতীরা। প্রতিবাদ করায় দুষ্কৃতীদের রিভলভারের আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন এক ব্যবসায়ী। স্বপন মণ্ডল নামে ওই ব্যবসায়ীকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে লুঠপাটের ঘটনা ঘটেছে বসিরহাটের বড়জিরাফপুরের শশিনা রাস্তায়। প্রায় আধঘণ্টা ধরে লুঠপাট চালিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে যান বসিরহাটের এসডিপিও, আই সি। এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে শীঘ্রই তাদের ধরা যাবে।”
শুধু রাস্তা আটকে ছিনতাইই নয়, ওই রাতেই বসিরহাট স্টেশন সাগোয়া গোডাউনপাড়ায় একটি মুদির দোকান ও বদরতলায় একটি মন্দিরে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। বিগ্রহের অলঙ্কার-সহ অন্যান্য জিনিসপত্র এবং নগদ টাকা লুঠ করে। |
গত কয়েক মাস ধরে বসিরহাটের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক মন্দির এবং সোনার দোকান ও বাড়িতে লুঠপাটের ঘটনা ঘটে চলেছে। ওই সব ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারের পরে মাঝে কিছুদিন চুরি-ছিনতাই কমে গিয়েছিল। কিন্তু ফের তা বাড়ছে। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন রাত ১১টা নাগাদ বসিরহাটের টাকি থেকে কুমারপুকুর যাওয়ার পথে শশিনায় বড় জিরাফপুরের কাছে এক দল দুষ্কৃতী গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা আটকে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কালো কাপড়ে মুখ বাঁধা জনা চারেক দুষ্কৃতী রাস্তায় যাত্রীদের মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে অবাধে লুঠপাট শুরু করে। বসিরহাটের পুরাতন বাজারে সোনার দোকানে কাজ সেরে বাবাই কর্মকার, দেবনাথ দাস সাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। দুষ্কৃতীরা তাঁদের আটকে নগদ কয়েক হাজার টাকা, সোনার আংটি, মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। পুরাতন বাজারে মুড়ি বিক্রি করে তেঘরিয়া গ্রামে বাড়ি ফিরছিলেন স্বপন মণ্ডল। স্বপনবাবু বলেন, “শশিনা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি কয়েকজন যাত্রীদের ধরে লুঠপাট চালাচ্ছে। বেগতিক দেখে পালানোর চেষ্টা করলে দুষ্কৃতীরা ধরে ফেলে। চিৎকার করে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে আমার মাথায় রিভলভারের বাঁট দিয়ে মেরে নগদ ৪০ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।” ইতিমধ্যে খবর পেয়ে পুলিশ রওনা দেয়। কিন্তু তারা যাওয়ার আগেই পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। আহত স্বপনবাবুকে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, শশিনা রাস্তায় প্রায়ই চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এলাকায় চোলাইয়ের ঠেক ও হেরোইনের কারবার চলে। ফলে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা লেগেই রয়েছে। প্রতিবাদ করতে মাঝেমধ্যে কিছুদিন বন্ধ থাকলেও ফের তা চালু হয়ে যায়। রাস্তাঘাটে বেরোলে মহিলাদেরও উদ্দেশ্যে চলে কটূক্তি। পুলিশকে বার বার জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। সন্ধ্যা নামলেই তাই আতঙ্কে থাকতে হয়। |