‘ছিল রুমাল। হয়ে গেল অন্যকিছু’।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকে মণ্ডলপাড়া লালকুঠি সুসংহত শিশু বিকাশ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে এমনটাই ঘটেছে। গ্রামের মানুষের অভিযোগ, রাতারাতি ওই কেন্দ্রের ঘর দখল করে এবং সেটি তাদের বলে দাবি করে সেখানে বাস করতে শুরু করে দিয়েছে একটি পরিবার। ফলে কেন্দ্রটি চালপ রাখা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ওই ব্লকের সুসংহত শিশুবিকাশ কেন্দ্রের আধিকারিক (সিডিপিও)-কে সমস্যার কথা জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে ওই শিশু বিকাশ কেন্দ্রটির অনুমোদন মেলে। প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লাবঘরে কেন্দ্রটি চলত। বছর দুয়েক পরে গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল মণ্ডল নিজের চাক শতক জমি ওই কেন্দ্রের ঘর তৈরির জন্য দান করেন। ওই জমিতে এক কামরার একটি খড়ের চাল দেওয়া বেড়ার ঘর তৈরি করে দেন গোপালবাবু নিজেই। তার পর থেকে সেখানেই চলছিল সুংহত শিশুবিকাশ কেন্দ্র। কেন্দ্রটিতে ৩০ জন পড়ুয়া রয়েছে। |
গত ২০ জুন কেন্দ্রে কাজ সেরে বাড়ি চলে যান কর্মী মীরা সর্দার ও সহায়িকা সুষমা বাউর। পরদিন তাঁরা গিয়ে দেখেন গ্রামেরই একটি পরিবার ওই ঘর দখল করে সেখানে বাস করছে। তাঁরা গ্রামের লোকজনকে ডেকে সব জানিয়ে চলে যান ব্লকের সিডিপিও-র কাছে। তাঁদের বক্তব্য, সেখানে তাঁদের বলা হয়, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিকে যিনি ওই ঘরটি দখল করেছেন তিনি গোপালবাবুর খুড়তুতো ভাই অমল মণ্ডল। কাজের সূত্রে তিনি কলকাতায় থাকতেন। গত ২০ জুন তিনি গ্রামে ফেরেন। তারপরেই এই ঘটনা। কেন শিশুবিকাশ কেন্দ্রের ঘর দখল করলেন? প্রশ্নের উত্তরে অমলবাবু বলেন, “আমার জমিতে আমি ঘর বেঁধে রেখেছিলাম। ওরা সেই ঘরে কেন্দ্রের কাজ চলছিল। এখন আমি গ্রামে ফিরেছি। থাকার জন্যই এখানে রয়েছি।”
গোপালবাবুর বক্তব্য, “জীবিকার প্রয়োজনে বছর দুয়েক আগে কলকাতায় চলে যাই। অমল এই ঘর জোর করে দখল করেছে। সব ঘটনা আমি সিডিপিওকে জানিয়েছি।”
এদিকে ঘর না পাওয়ায় বন্ধ রয়েছে কেন্দ্রের কাজকর্ম। এতে গ্রামবাসীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। সুষমাদেবী জানান, কেন্দ্রটি তৈরির পর জেলা পরিষদের টাকায় সেখানে নলকূপ ও শৌচাগার তৈরি করা হয়। ঘর দখল হয়ে যাওয়ায় কচিকাঁচা ও অভিভাবকেরা সমস্যায় পড়েছেন। তাঁদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও করা যাচ্ছে না।
মথুরাপুর-২ ব্লকের সুসংহত শিশুবিকাশ কেন্দ্রের আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, “জমির মালিকানা নিয়ে বিবাদের কারণে সমস্যা দেখা দিয়েছে। শিশুবিকাশ কেন্দ্রের জন্য জমি দান করা হলেও সরকারি বাবে তার নথি নেই। এতে কেন্দ্রটি যাতে অন্য জায়গায় করা যায় তার চেষ্টা হচ্ছে। তা ছাড়া পঞ্চায়েত নির্বাচন না মেটা পর্যন্ত জমির মালিকানার বিষয়টির মীমাংসা করা যাবে না।” |