তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনার পরে কাঁকরতলা থানা এলাকায় উত্তেজনা ছিল। যে পার্টি অফিস থেকে বেরিয়ে আক্রন্ত হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ নামে ওই তৃণমূল নেতা, শুক্রবার সেই অফিসে কর্মী-সমর্থকদের দেখা গেলেও তাঁরা বেশ মনমরা ছিলেন। মনমরা ছিলেন নিহতের ছেলে শেখর ঘোষও। তবে তিনি প্রথমে দাবি করেছিলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে আসন সমঝোতাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ ছিল। সেই কারণে বাবাকে খুন হতে হল।” একই কথা শোনা গিয়েছিল নিহতের স্ত্রী মঙ্গলাদেবী ও মেয়ে মালা মণ্ডলের মুখেও। তবে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে তাঁরা জানিয়েছেন, সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই দিলীপবাবুকে খুন করেছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সাধন ঘোষ বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। উল্টে আমরাই মার খাচ্ছি। সঠিক তদন্ত হলে আসল সত্য প্রকাশ পাবে।” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দাবি, “সিপিএমই খুন করেছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।” |
প্রসঙ্গত, দলীয় সভা সেরে ফেরার পথে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাঁকরতলা থানার হজরতপুরে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। সিউড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান দিলীপবাবু। তাঁর কাঁধে ও বাঁ কানের পেছনে গুলি লাগে। তবে ময়না তদন্ত করার সময়ে গুলি খুঁজে পেতে সমস্যা হওয়ায় শুক্রবার দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেরি হয় দলের কর্মী-সমর্থকদের। এ দিন নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে কাঁকরতলায় আসেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিহতের বাড়িতে আসার আগে বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন শিল্পমন্ত্রী। তিনি সেখানে বলেন, “রাজ্যে সিপিএম, কংগ্রেস ও এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যম অপপ্রচারের ডালি সাজিয়ে বসেছেন। রাজ্যে হিংসা ছড়াচ্ছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচন রাজ্যে বন্ধ করতে শেষ পর্যন্ত কোর্টেও গিয়ে সফল হননি। এখন নির্বাচন বন্ধ না করতে পেরে সিপিএম, কংগ্রেস উস্কানি দিচ্ছে, হিংসা, সন্ত্রাস করছে। তৃণমূলকে আক্রমণ করে খুন করছে।” তিনি আরও বলেন, “রাজ্যে মমতা বান্দ্যোপাধায়ের নেতৃত্বে শান্তি, প্রগতি, উন্নয়ন হচ্ছে। চক্রান্ত করে কেন্দ্র সরকার সাহায্য বন্ধ করে দিচ্ছে।”
কাঁকরতলায় পার্থবাবু আসার আগেই ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত ও জেলা পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মা। মন্ত্রীর সঙ্গে আইজি ও এসপি নিহতের বাড়িতে যান। দোষীরা যাতে শাস্তি পায় তা আইজি ও এসপিকে দেখতে বলেন মন্ত্রী। এসপি বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে, ভাড়াটে কোনও দুষ্কৃতীদের দিয়ে খুন করা হয়েছে। তদন্ত এগোচ্ছে।”
|