|
|
|
|
ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা, আগাম ত্রাণ মজুত করছে প্রশাসন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আর ঠিক এক সপ্তাহ। আগামী বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই পশ্চিম মেদিনীপুরে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ওই সময় জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ারও আশঙ্কা রয়েছে। যাতে ভোটের কাজের মধ্যে ত্রাণ পৌঁছতে সমস্যা না হয়, তাই আগাম প্রস্তুতি সেরে রাখছে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ব্লকে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো শুরু হয়েছে। বুধবারই যেমন কেশপুর, শালবনি, মেদিনীপুর সদর প্রভৃতি ব্লকে ত্রিপল, ধুতি, শাড়ি, লুঙ্গি এবং বাচ্চাদের জামাকাপড় পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিওরা যোগাযোগ করেন মহকুমাশাসক (সদর) অমিতাভ দত্তর সঙ্গে। মহকুমাশাসক তাঁদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “বর্ষা শুরু হয়েছে। টানা বৃষ্টি হলেই কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েন। সামনে নির্বাচন রয়েছে। তখন বৃষ্টি হলে অফিসাররা নির্বাচনের কাজকর্ম দেখভাল করবেন না ত্রাণের তদারকি করবেন? তাই আগে থেকে ব্লকগুলোয় ত্রাণ সামগ্রী মজুত করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
বন্যাপ্রবণ জেলা বলেই পরিচিত পশ্চিম মেদিনীপুর। টানা বৃষ্টি হলে সবং, পিংলা, ঘাটাল, কেশপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়। কখনও কখনও নদী ছাপিয়ে জল ঢুকে পড়ে এলাকায়। ফলে, গ্রামবাসীরা সমস্যায় পড়েন। আগাম প্রস্তুতি না থাকলে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেও হিমসিম খেতে হয়। তখন গ্রামবাসীদের রোষের মুখে পড়েন প্রশাসনের আধিকারিক-কর্মীরা। মাঝেমধ্যে আবার ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হয়। তখন সমস্যা আরও জটিল হয়। জুনের গোড়ায় টানা দু’দিনের বৃষ্টিতে যেমন ডেবরার কিছু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছিল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কেশপুর, মেদিনীপুর সদর, খড়্গপুর-২ ব্লকের কিছু এলাকা। ডেবরার রাইপুর, ট্যাবাগেড়িয়া, মোকারিনপুর এবং গোপালপুর— চারটি জায়গায় বাঁধও ভাঙে। সাধারণত, ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হলে এমন পরিস্থিতি হয়। অতিবৃষ্টির ফলে বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকে যায়। সে ক্ষেত্রে জল ছাড়ার আগাম সতর্কবার্তা থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে তেমন কোনও বার্তাই ছিল না। ফলে, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়।
এই অতি বৃষ্টির সময়ে ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ ওঠে। তবে অপর্যাপ্ত ত্রাণের অভিযোগ মানতে চায়নি প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, শুরুতে ওই সব এলাকায় তিনশোরও বেশি ত্রিপল বিলি করা হয়েছে। এখনও মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও কখনও টানা বৃষ্টি চলছে। পরিস্থিতি দেখেই ব্লকগুলোয় ত্রাণ সামগ্রী মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনেরই এক সূত্রে খবর, কেশপুরে ৮০০টি ত্রিপল, ১০০টি ধুতি, ১০০টি শাড়ি, ৭৫টি লুঙ্গি এবং ৭৫টি শিশুদের পোশাক পাঠানো হয়েছে। একই ভাবে শালবনি, মেদিনীপুর সদর, গড়বেতা-১ ব্লকেও ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হচ্ছ। জানা গিয়েছে, সদর মহকুমার অন্তর্গত ৬টি ব্লকে সব মিলিয়ে ২ হাজার ৮০০টি ত্রিপল, ৪৫০টি ধুতি, ৪৫০টি শাড়ি, ৩৫০টি লুঙ্গি এবং ৩৫০টি বাচ্চাদের পোশাক পাঠানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “যখন তখন ভারী বৃষ্টি হতে পারে। হঠাৎ করে এলাকায় জল ঢুকলে সমস্যা হবে। তাই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে এই পদক্ষেপ।” |
|
|
|
|
|