মেয়াদ ফুরোচ্ছে ১৩টি বোর্ডের
পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি চেয়ে মামলা হাইকোর্টে
ঞ্চায়েত নির্বাচন মামলার নিষ্পত্তি হতে না-হতেই ফের আর এক নির্বাচন নিয়ে মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। এ বারের বিষয়: রাজ্যের ১৩টি পুরসভার ভোট।
১৩টি পুরসভায় নির্বাচন আয়োজনের জন্য অবিলম্বে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারির আর্জি জানিয়ে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ-মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী বাসবী রায়চৌধুরী। ওই সব পুরসভায় শেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০০৮-এর জুলাইয়ে, ক’দিনের মধ্যে সেগুলির বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু নতুন পুরবোর্ড গঠনের জন্য ফের নির্বাচনের কোনও বিজ্ঞপ্তি রাজ্য সরকার এখনও জারি করেনি।
পাঁচ বছরের পালা শেষ হতে চলেছে যে ১৩টি নির্বাচিত পুরবোর্ডের, সেগুলো হল: বর্ধমান জেলার বর্ধমান ও গুসকরা, উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি ও হাবড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, বীরভূমের দুবরাজপুর, জলপাইগুড়ির আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর, নদিয়ার চাকদহ, উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলা এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট। জনস্বার্থ-আবেদনে বলা হয়েছে, পুরসভাগুলোয় নির্বাচনের আয়োজনের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার এখনও সক্রিয় ভূমিকা নেয়নি। এর প্রেক্ষিতে আদালতের কাছে আবেদনকারীর বক্তব্য: পাঁচ বছরের মেয়াদ ফুরনোর আগেই পুরসভাগুলোর ভোটপর্ব সেরে ফেলার কথা। অথচ এখনও বিজ্ঞপ্তি জারি না-হওয়ায় সেখানে সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, একই কারণে পঞ্চায়েত ভোট পিছনোর আর্জি সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার খারিজ করে দিয়েছে। পুরভোট ঘিরেও সেই সাংবিধানিক সঙ্কটেরই প্রশ্ন এ বার বড় হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন আইনজীবী মহলের একাংশ। পুরভোট সংক্রান্ত জনস্বার্থ-মামলাটিতে রাজ্য সরকার, মুখ্যসচিব, পুর-সচিব, স্থানীয় প্রশাসনের অধিকর্তা, রাজ্য নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশনার ও মুখ্য নির্বাচনী অফিসার এবং কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রককে বিবাদি করা হয়েছে। মামলার শুনানি হওয়ার কথা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে।
আবেদনকারীর কৌঁসুলি সুব্রত মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, সংবিধানের ২৪৩(ইউ) ধারা মোতাবেক পাঁচ বছরের বেশি কোনও পুরসভা কাজ করতে পারে না। কাজেই মেয়াদ ফুরনোর আগে নির্বাচন না-হলে সাংবিধানিক সঙ্কট দেখা দেবে। সু্ব্রতবাবুর অভিযোগ, “কলেজ নির্বাচন থেকে পুরভোট সমস্ত ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অমান্য করে চলেছে। সরকার পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করায় শেষ পর্যন্ত রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। পুর নির্বাচনের ব্যাপারেও সরকার এখনও উদ্যোগী হয়নি।”
বস্তুত তিন মাস আগেই সরকারের বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হওয়ার কথা ছিল বলে এ দিন দাবি করেছেন বাদিপক্ষের কৌঁসুলি। তাঁরা বলছেন, কলকাতা-সহ বিভিন্ন পুরসভার বাইশটি ওয়ার্ডে শূন্য আসনে দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন না-হওয়ায় সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ-মামলা হয়েছিল, যার শুনানিতে এই ১৩ পুরসভার নির্বাচনের প্রসঙ্গও ওঠে। মামলাটির রায়ে রাজ্যকে যথাসময়ে পুরসভাগুলোয় নির্বাচন করাতে উদ্যোগী হতে বলা হলেও সরকার তাতে আমল দেয়নি বলে আবেদনকারীর তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন কী বলে?
কমিশন-সূত্রের খবর: ১৩ পুরসভার নির্বাচন আয়োজনের জন্য গত ফেব্রুয়ারি ইস্তক তারা রাজ্য সরকারকে একাধিক বার চিঠি দিয়েছে। কিন্তু সরকারের জবাব মেলেনি। কমিশনের আইনজীবী লক্ষ্মীচাঁদ বিয়ানির কথায়, “নিয়ম অনুযায়ী কমিশন পুরসভাগুলোয় ভোট করাতে রাজ্য সরকারকে বার বার বার্তা দিয়েছে। রাজ্য যে কোনও উত্তর দেয়নি, শুনানির সময় তা আদালতকে জানানো হবে।”
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেও ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতে কমিশন সরকারকে প্রথম চিঠি দিয়েছিল এক বছর আগে, ২০১২-র ১১ এপ্রিল। এবং সে ক্ষেত্রেও রাজ্য প্রায় এক বছর নিরুত্তর ছিল বলে অভিযোগ। শেষমেশ কমিশনকে বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে যেতে হয়। কমিশন-রাজ্য সংঘাত গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। অবশেষে শীর্ষ আদালতেই বিতর্কের নিষ্পত্তি হয়েছে।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.