বুধবার দুপুরে মহাকরণে নিজের ঘরে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠক সরকারি না দলীয়, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটল না রাত পর্যন্ত। মুকুল রায়ের দাবি, বৈঠক হয়েছে কলকাতার সাংসদ তহবিল নিয়ে। সুব্রত মুখোপাধ্যায় কিন্তু জানান, এটা একেবারেই দলীয় বৈঠক। পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি নিয়েই কথা হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে মমতা নিজেই জানিয়েছিলেন, মহাকরণে কোনও দলীয় কাজ তিনি করবেন না। দলীয় কোনও ঘোষণাও করবেন না। সেই ঘোষণায় অবশ্য আগেই ছেদ পড়েছে। এ বারও তেমনটাই হল কিনা, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
এ দিন দুপুর পৌনে একটা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ওই বৈঠকে ছিলেন সাংসদ মুকুল রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পূর্ণেন্দু বসু, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, অরূপ রায়, মদন মিত্র এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এ ছাড়াও ছিলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেন। ঘণ্টাখানেকের বৈঠক শেষে মুকুলবাবু বলেন, “কলকাতার সাংসদ তহবিল নিয়ে বৈঠক ছিল।” কিন্তু সেই বৈঠকে মন্ত্রীরা বা দোলা কেন ছিলেন, সেই প্রশ্নের উত্তরে মুকুলবাবু বলেন, “ওঁরাও তো ভোটার! ওঁরা থাকতেই পারেন।” কিছু ক্ষণ পরে অবশ্য সম্পূর্ণ অন্য কথা জানান সুব্রতবাবু। তিনি বলেন, “এটা পার্টি মিটিং। একেবারেই দলীয় বৈঠক।” মদনবাবুও জানান, পঞ্চায়েত নিয়েই বৈঠক ছিল।
মহাকরণ সূত্রেরও খবর, এ দিনের বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোট নিয়েই দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বিভিন্ন জেলায় প্রচারের দায়িত্ব বিভিন্ন নেতার মধ্যে ভাগ করে দিয়েছেন। বৈঠকেই ঠিক হয়েছে, সারা রাজ্যে প্রচারের সার্বিক দায়িত্ব থাকবে মুকুলবাবুর উপরে।
|
বুধবার সারা দিন নির্বাচন কমিশন |
• ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি
• ২৯ জুলাই ভোটগণনা
• আজ সকালে স্বরাষ্ট্রসচিব, ডিজি-র সঙ্গে বৈঠক
• আজ বিকেলে বৈঠক ১৭ জেলার পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে
• প্রথম তিন দফার ৯ জেলাশাসক, এসপি-র সঙ্গে বৈঠক কাল
• শনিবার সর্বদলীয় বৈঠক কমিশনের
• ১৯ জুলাই, জুম্মাবার, ভোটের সময় বদলের দাবিতে কমিশনে বিভিন্ন দল
• মহাকরণে নেতা-মন্ত্রীদের নিয়ে মমতার বৈঠক
• এর প্রেক্ষিতে মমতা, মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে
আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ সিপিএমের
• গাইঘাটায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভাঙার
অভিযোগ খারিজ ডিএম-এর
• পিংলা থানার ওসিকে সরানো হল না বুধবারও
• বর্ষা, রমজানের জন্য ভোটগ্রহণের সময় এক ঘণ্টা এগোনোর দাবি বামফ্রন্টের |
|
এ বারও দলীয় সভা মহাকরণে কেন?
তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর ব্যস্ততা আছে। আমাদের অনেককেই আজ থেকেই প্রচারে জেলা-সফরে বেরিয়ে পড়তে হচ্ছে। সেই কারণেই মহাকরণে বৈঠক করা হয়েছে।” দলীয় কোনও সিদ্ধান্ত অবশ্য এ দিন মহাকরণ থেকে ঘোষণা করা হয়নি। মহাকরণের বৈঠকের পরে তপসিয়ার তৃণমূল ভবন থেকেই ২১ জুলাইয়ের পরিবর্তে ২১ অগস্ট শহিদ দিবসের সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন সুদীপবাবু।
তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, রমজান মাসে ভোট না-করার জন্য রাজ্য সরকারের আর্জি সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেওয়ার পরে প্রচার ও ভোটের রণকৌশল নিয়ে এ দিন দলনেত্রীর সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের সবিস্তার আলোচনা প্রকাশ্যে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি। তবে মুকুলবাবু প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “রমজান মাসে ভোট হওয়ায় মুসলিমদের অসুবিধা হবে। বিশেষ করে, মহিলাদের।” এর ফলে ভোটের হার কমবে কি না জানতে চাইলে কারও নাম না-করে মুকুলবাবুর কটাক্ষ, “ভোটের হার কমবে না। তবে যাদের জন্য রমজান মাসে ভোট হচ্ছে, তাদের ভোটের হার কমবে!” |