তিস্তায় পরপর বিদ্যুৎকেন্দ্র, সেচে ঘাটতির আশঙ্কা মন্ত্রীর
সিকিমে তিস্তা নদীর উপরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ন্যাশনাল হাইড্রো পাওয়ার কর্পোরেশন বা এনএইচপিসি একের পর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তুলছে। এতে ভবিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গে সেচের জলের আকাল হতে পারে বলে মনে করছেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেচমন্ত্রী বুধবার মহাকরণে বলেন, “তিস্তা সিকিম থেকে নেমে পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে। তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার জন্য আমাদের সরকারের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু এনএইচপিসি তা নেয়নি। বিষয়টি আমরা কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রককে জানিয়েছি।” মন্ত্রীর আশঙ্কা, এ ভাবে তিস্তার উপরে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়লে বিপদ আসবে দু’দিক থেকে।
• শুখা মরসুমে ওই নদীর জল মিলবে না।
• বর্ষায় ওই সব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জল ছাড়লে রাজ্যে বন্যা-পরিস্থিতি তৈরি হবে।

মন্ত্রী মতোই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন-সহ কিছু পরিবেশপ্রেমী সংস্থা। তাদের আশঙ্কা, তিস্তায় পরপর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ায় আগামী দিনে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
এনএইচপিসি অবশ্য মন্ত্রীর অভিযোগ মানতে নারাজ। সংস্থার এক পদস্থ কর্তা জানান, সিকিমে তিস্তা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দু’টি পর্যায়ের কাজ চলছে। আগামী দিনে মাঝিটাঁড়ে একটি অর্ধসমাপ্ত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া ছোট কয়েকটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরির প্রস্তাবও এনএইচপিসি-র পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। ওই কর্তার বক্তব্য, তাঁরা রাজ্য ও কেন্দ্রের পরিবেশ-ছাড়পত্র না-নিয়ে কোনও কাজ করেন না। তাই ওই সব প্রকল্পের জন্য বিপর্যয়ের আশঙ্কা অমূলক।
এনএইচপিসি-র বক্তব্যের সমর্থন মিলছে রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যুৎকর্তার বক্তব্যে। সেচমন্ত্রী আশঙ্কার কথা বললেও রাজ্যের বিদ্যুৎকর্তারা জানান, এনএইচপিসি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। প্রতিটি পদক্ষেপে তাদের আইন মেনেই চলতে হয়। পশ্চিমবঙ্গে যেমন তারা সব ধরনের অনুমতি এবং পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র নিয়ে প্রকল্প গড়ছে, সিকিমের ক্ষেত্রেও সংস্থা-কর্তৃপক্ষ নিয়ম মেনে প্রকল্প গড়ার কাজে হাত দিয়েছেন। সিকিম ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গে তিস্তায় দু’টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ছে এনএইচপিসি। বিদ্যুৎ শিল্পমহল সূত্রের খবর, ওই দু’টি প্রকল্পের জন্য বাম আমলে সেচ দফতরের ছাড়পত্র নেওয়া হয়েছিল। অনুমতি নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় জল কমিশনেরও।
কেন্দ্র অনুমতি দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধেও আঙুল তুলেছেন সেচমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র এক দিকে বাংলাদেশকে তিস্তার জল দিতে বলছে, আবার সেই নদীর উপরেই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার অনুমতি দিয়ে যাচ্ছে! নির্মীয়মাণ প্রকল্প ছাড়াও তিস্তার উপরে আরও ১০টি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সে-ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গেও আগামী দিনে উত্তরাখণ্ডের মতো বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে মন্ত্রীর আশঙ্কা।
রাজ্যে সম্ভাব্য বন্যা-পরিস্থিতির মোকাবিলায় দু’টি টাস্ক ফোর্স গড়া হয়েছে বলে জানান সেচমন্ত্রী। একটি উত্তরবঙ্গ, অন্যটি দক্ষিণবঙ্গের জন্য। জোড়া টাস্ক ফোর্সের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দু’জন চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে। ২৪ ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোল রুমও খোলা রয়েছে। ১৮০০৩৪৫৩২৩১ এবং ১৮০০৩৪৫০১১৭ এই দু’টি নম্বরে ফোন করলে বন্যা-পরিস্থিতির যাবতীয় খবর জানা যাবে। রাজীববাবু জানান, যে-কোনও জলাধার থেকে জল ছাড়ার আগে রাজ্যকে জানাতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.