বাস কমছে মেনেও ভাড়া
বৃদ্ধির দাবি ওড়ালেন মন্ত্রী
বাস-মালিকদের দাবি অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করে ভাড়া বৃদ্ধির দাবি ফের নাকচ করলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। আর বাস-মালিকেরা জানিয়ে দিলেন, ভাড়া না-বাড়ালে রাস্তা থেকে আরও বাস উঠে যাবে। কারণ, নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়ে তাঁরা বাস চালাবেন না। ভাড়া নিয়ে রাজ্য সরকার আর বাস-মালিকদের দ্বন্দ্বে নাগরিকদের দুর্ভোগ যে আরও বাড়বে, তা পরিষ্কার।
এর আগে অনেক সময়েই রাজ্য সরকার ভাড়া বৃদ্ধির দাবি না-মানায় বাস-মালিকদের ধর্মঘটের হুমকি দিতে দেখা গিয়েছে। এ বার পরিবহণমন্ত্রী ভাড়া বাড়ানোর দাবি খারিজ করে দেওয়ার পরে মালিকেরা কিন্তু কোনও আন্দোলন কিংবা ধর্মঘটে যাওয়ার ডাক দেননি। তার কারণ ব্যাখ্যা করে বাস-মালিক সংগঠন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটসের নেতা সাধন দাস বলেন, “আমাদের ধর্মঘট ডাকার কোনও প্রয়োজন নেই। ভাড়া না-বাড়ানোয় এমনিতেই রাস্তায় বাস কমে যাচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে খুব শীঘ্রই কোনও বাসই আর রাস্তায় বেরোবে না। তাই আমাদের কোনও ধর্মঘট ডাকতে হবে না।”
ভাড়া বাড়ানোর যুক্তি দেখাতে গিয়ে বারবার জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কথাই বলছেন বাস-মালিকেরা। তাঁরা জানান, ২০১২ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১ জুলাই পর্যন্ত ডিজেলের দাম বেড়েছে আট বার। সাধনবাবু বলেন, “গত নভেম্বরে শেষ বার বাসভাড়া বেড়েছিল। কিন্তু জ্বালানির খরচ যে-হারে বাড়ছে, তাতে বাস চালানো যাচ্ছে না। সারা রাজ্যে রাস্তারও বেহাল অবস্থা। তার জন্য জ্বালানি বেশি খরচ হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমাদের পক্ষে বাস চালানো কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
পরিবহণমন্ত্রীর কাছে এ দিন বাস-মালিকেরা সাধারণ বাসের ন্যূনতম ভাড়া পাঁচ থেকে বাড়িয়ে সাত টাকা করার দাবি জানান। আর মিনিবাসের ন্যূনতম ভাড়া ছয় থেকে বাড়িয়ে ১০ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা অবশেষ দা।ঁ তিনি বলেন, “গত বছর যখন ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল, তখন মিনিবাসের ভাড়া পর্যাপ্ত হারে বাড়েনি। তাই আমরা এ বার ন্যূনতম ভাড়া বাড়িয়ে ১০ টাকা করার দাবি জানিয়েছি।” একই সঙ্গে বাসভাড়ার ক্ষেত্রে দূরত্বের পুনর্বিন্যাস করারও দাবি জানান বাস-মালিকেরা।
এমনিতেই বাস অনেক কমে গিয়েছে। এর পরেও ভাড়া না-বাড়ালে রাস্তা থেকে বাস যে ক্রমশ লোপাট হয়ে যাবে, এই বাস্তব অবস্থাটা মেনে নিচ্ছেন পরিবহণমন্ত্রী। কিন্তু সেই সঙ্গেই তিনি এ দিন ফের পরিষ্কার করে দেন, বাসভাড়া বাড়ানো রাজ্য সরকারের নীতি নয়। বিশেষ করে সামনে পঞ্চায়েত ভোট এবং রমজান।
এই অবস্থায় কোনও ভাবেই যে বাসভাড়া বাড়ানো সম্ভব নয়, তা জানিয়ে মদনবাবু বলেন, “এখন সরকারের বাসভাড়া বাড়ানোর কোনও পরিকল্পনা নেই।”
কিন্তু মালিকেরা বাস তুলে দিলে রাজ্য সরকার কী করবে?
এ বার অবশ্য বাস হুকুমদখল করার হুমকি দেননি পরিবহণমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মালিকেরা বাস তুলে নিলে আমরা দুঃখ পাব।”
আর বাস-মালিক সংগঠনের কর্তা সাধনবাবু বলেন, “মন্ত্রী তাঁর রাজনীতির কথা বলেছেন। তাতে তো আমাদের পেট ভরবে না। পরিবহণ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে বাসের ভাড়া বাড়াতেই হবে।”
ভাড়া বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাস-মালিকেরা এ দিন মোটরচালিত ভ্যানরিকশা নিষিদ্ধ করারও দাবি জানান পরিবহণমন্ত্রীর কাছে। মন্ত্রী বলেন, “মোটরচালিত ভ্যানকে আমরা স্বীকৃতি দিইনি। তা ছাড়া দূষণের জন্য কলকাতা হাইকোর্টই তা নিষিদ্ধ করতে বলেছে। কিন্তু গ্রামে অনেক ক্ষেত্রেই ওই যান যোগাযোগ ব্যবস্থার ‘লাইফলাইন’। তাই ওই সব ভ্যান নিয়ে কী করা যায়, সেই বিষয়ে সরকার ভাবনাচিন্তা করছে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.