জেলার বিভিন্ন এলাকায় ডায়েরিয়া দেখা দিচ্ছে। গ্রামবাসীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। পরিস্থিতি দেখে মঙ্গলবার জেলার সমস্ত বিএমওএইচদের নিয়ে বৈঠক করলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। সেখানে ডায়েরিয়া ও ম্যালেরিয়ার প্রসঙ্গও ওঠে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ম্যালেরিয়া রোধে বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা-কর্মসূচি হবে। এদিন বিএমওএইচদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। সঙ্গে এলাকার জলাধারগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে শেষে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবু বলেন, “উদ্বেগের কিছু নেই। যে সব এলাকায় ডায়েরিয়া হয়েছে, সেখানে মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।”
জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর সদর, ঘাটাল, শালবনি-সহ কয়েকটি ব্লক থেকে ডায়েরিয়া দেখা দিচ্ছে। বেলপাহাড়ির একটি এলাকায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। কিছু দিন আগে জেলায় অতিবৃষ্টি হয়েছিল। আর তার কিছু দিন পর থেকে ডায়েরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাচরায়। আক্রান্ত হন ৩৬ জন। সকলেই এখন সুস্থ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্বাস্থ্য-কর্তারা দেখেন, এলাকায় সব মিলিয়ে ৫টি নলকূপ রয়েছে। তার মধ্যে ৩টিই খারাপ। এলাকায় একটি পুকুর রয়েছে। এই পুকুরের জলই অধিকাংশ কাজে ব্যবহার করেন প্রায় ৪৮টি পরিবার। পরে অবশ্য নলকূপ সংস্কারের ব্যবস্থা হয়।
এ দিকে, ক’দিন আগে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে লালগড়ের গোবিন্দপুরের এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, মৃত কিশোরীর বাড়ির পাশের বাড়িগুলোয় নজরদারি চালাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে, কেউ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন কি না। আক্রান্ত হওয়ার পর টানা ৫ দিন জ্বর থাকলেই রক্তের নমুণা সংগ্রহ করা হবে। দেখা হবে তাতে ডেঙ্গির জীবাণু রয়েছে কি না। পাশাপাশি, যে সব এলাকায় রোগ ছড়াচ্ছে, সেখানে গিয়ে দেখা হচ্ছে, কোথাও বৃষ্টির জল জমে রয়েছে কি না, কোথাও জলাধারে দীর্ঘদিন ধরে জল জমে রয়েছে কি না প্রভৃতি। কারণ, জমা জলেই ডেঙ্গির জীবাণুবাহিত মশার জন্ম হয়। পাশাপাশি, শালবনির এলাকায় অজানা জ্বরেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি দেখে বিএমওএইচদের এ দিন জানানো হয়, পর্যাপ্ত পরিমাণ এভিএস, ব্লিচিং পাউডার, হ্যালোজেন ব্লকে মজুত রাখতে হবে। কোনটা কত পরিমাণ প্রয়োজন, তা জেলায় জানাতে হবে। জেলা থেকে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “এই সময়ে বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। ডায়েরিয়া, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি রোগ ছড়ায়। আক্রান্তদের যাতে সময় মতো সঠিক চিকিৎসা হয়, সেটাই নিশ্চিত করতে হবে।” বৈঠকে এসিএমওএইচ, ডেপুটি সিএমওএইচ-সহ বিভিন্ন হাসপাতাল সুপারও উপস্থিত ছিলেন। |