অরুণোদয় ভট্টাচার্য • কলকাতা |
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মঙ্গলবারের রায় থেকে প্রশাসনের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী সমরাদিত্য পাল। তাঁর বক্তব্য, কোনও আদালতই যে সংবিধানকে অবজ্ঞা করা কখনই সহ্য করবে না, তা এ দিনের রায় থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সংবিধানের মর্যাদা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এ দিন যে কড়া মনোভাব নিয়েছে, তা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন সমরাদিত্যবাবু। তাঁর কথায়, “সুপ্রিম কোর্টের রায় আমি খুঁটিয়ে পড়েছি। সুপ্রিম কোর্টকে বার বার বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হয়েছে। সেটা তারা সহজ
ভাবে নেয়নি। সংবিধানের মর্যাদা যে তাদের কাছে প্রাধান্য পেয়েছে, এ দিনের রায়ে সেটা পরিষ্কার হয়েছে।”
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রথম জয়টা এসেছিল শুক্রবারে। সে দিন সমরাদিত্যবাবু বলেছিলেন, এটা সংবিধানের জয়। আজকের রায়ও নির্বাচন কমিশনের কাছে এক রকম জয়-ই। আজকের রায়ের পরে প্রবীণ এই আইনজীবীর মন্তব্য, “এটা সুপ্রিম কোর্টের জয়। সংবিধানের জয়। সেটাই সব থেকে খুশির ব্যাপার।”
সমরাদিত্যবাবুর অভিযোগ, মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা অসত্য কথা বলছেন। কমিশন ভোট বন্ধের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রী যা বলেছেন, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে এ দিন দাবি করেছেন সমরাদিত্যবাবু। তিনি বলেন, “কমিশনের আবেদনপত্র পড়লেই বোঝা যাবে কমিশন বাহিনী চাইতে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। সেখানে কমিশন বলেছিল, হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, সেই অনুযায়ী বাহিনী না পেলে পঞ্চায়েত নির্বাচন করা সম্ভব নয়। কাজেই ভোট স্থগিত করার কোনও আবেদন নির্বাচন কমিশন জানায়নি।”
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবীর অভিযোগ, রাজ্য সরকার প্রথম থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি করেছে এবং সর্বোচ্চ আদালত সেটা রায়েও বলেছে। তাঁর বক্তব্য, সরকার যদি মনে করত যে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কমিশন সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ করেনি, তা হলে তারা নিজেরাই আদালতের শরণাপন্ন হতে পারত। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার কিন্তু আদালতে যায়নি। কলকাতা হাইকোর্ট কিংবা সুপ্রিম কোর্টেও তারা নির্বাচন কমিশনকে বিব্রত করার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারেনি।” |