মন্ত্রী আসছেন। তাই সাজ সাজ রব। গোটা স্টেশন চত্বর ঝাঁ চকচকে করে ফেলা হল। এমনটাই দস্তুর। সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া, “রোজ যদি এমনটা হত!”
মঙ্গলবার বেলা ২টো নাগাদ রেলের আধিকারিকদের নিয়ে বিশেষ ট্রেনে বনগাঁ স্টেশনে পৌঁছন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। মন্ত্রী ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নামতেই সেখানে আগে থেকে হাজির কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিতে শুরু করেন। নির্বাচনবিধি লাগু থাকায় অধীরবাবুর নির্দেশে দ্রুত বন্ধ হয় তা। বনগাঁ শহর কংগ্রেসের সভাপতি কৃষ্ণপদ চন্দ মন্ত্রীর কাছে চার দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি তুলে দেন। তাঁদের দাবি, বনগাঁ শহরে যশোহর রোডের উপরে ১ নম্বর রেলগেটে ওভারব্রিজ করতে হবে। বনগাঁ-বাগদা প্রথম পর্যায়ের রেলপথের কাজ শুরু করতে হবে। রেলের প্রস্তাবিত স্টেডিয়াম তৈরির কাজেরও দাবি তোলেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে একটি টিকিট কাউন্টার ও একটি ওভারব্রিজের দাবি আছে তাঁদের। বনগাঁর মানুষের পক্ষ থেকে এই দাবি পেশ করা হল বলে মন্ত্রীকে জানান কৃষ্ণপদবাবু। |
স্টেডিয়াম প্রসঙ্গে অধীরবাবু বলেন, “ওখানে না হয়েছে জমির ব্যবস্থা। না হয়েছে জবরদখল সরানো।” আরএস মাঠে প্রস্তাবিত স্টেডিয়ামের জমিটি দেখতে যাওয়ার অনুরোধ শুনে মন্ত্রী বলেন, “যা পারব না, তা দেখতেও যাব না।” ঠাকুরনগরে একটি ফুটব্রিজ করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের বলেন, “বনগাঁ-বাগদা রেলপথ তৈরিতে জমি সমস্যা আছে। জমি রাজ্যের হাতে। রাজ্য জমি অধিগ্রহণ করে না দিলে কাজ করা সম্ভব নয়।”
প্রসঙ্গত, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ওই স্টেডিয়াম ও রেলপথের শিলান্যাস করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরে কাজ এগোয়নি কিছুই। মমতার নাম না করেও তাঁর উদ্দেশে বর্তমান রেল প্রতিমন্ত্রী তথা কংগ্রেস সাংসদের কটাক্ষ, “আমরা শিলান্যাসে বিশ্বাসী নই। কাজে বিশ্বাসী।”
এ দিন বনগাঁ স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম ঘুরে দেখেন অধীরবাবু। কথা বলেন মহিলা সাফাই কর্মীদের সঙ্গে। তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথা জানতে চান। এক মহিলা যাত্রীর কাছে জানতে চান, কোনও সমস্যা আছে কিনা। আরও ঘন ঘন ট্রেন চললে ভাল হয় বলে উত্তর দেন ওই মহিলা। অন্য এক মহিলা অনুযোগ করেন, মহিলা কামরায় বড্ড ঝগড়াঝাটি হয়। অধীর হেসে বলেন, “ওটা তো হবেই।” |