দুর্দশা ঘোচাতে নির্দেশ
ট্রেন-বাহনে বনগাঁ শাখার বারোমাস্যার সাক্ষী অধীর
রেল পরিষেবা নিয়ে বনগাঁ লাইনের অভাব-অভিযোগ দীর্ঘদিনের। প্রাণ হাতে নিয়ে, বাদুড়ঝোলা হয়ে মানুষের নিত্য যাতায়াত। পরিস্থিতি ঠিক কেমন, তা যাচাই করতে মঙ্গলবার আচমকাই পূর্ব রেলের বনগাঁ শাখার বিভিন্ন স্টেশন পরিদর্শন করেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী। কথা বলেন যাত্রীদের সঙ্গে। শোনেন তাঁদের অভিযোগ। সেখানে দাঁড়িয়েই রেলকর্তাদের নির্দেশ দেন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সহানুভূতির সঙ্গে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
বনগাঁ যাওয়ার জন্য কাউকে আগাম না-জানিয়ে রেল প্রতিমন্ত্রী এ দিন সকালে হঠাৎই শিয়ালদহে হাজির হন। তড়িঘড়ি জোগাড় করা হয় ‘ইনস্পেকশন কার’। চলে আসেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার জ্ঞানচন্দ্র অগ্রবাল, ওই রেলের মুখ্য বাস্তুকার এবং অন্যান্য অফিসার। সকলকে নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টায় শিয়ালদহ থেকে বিশেষ ট্রেন ছাড়ে বনগাঁর দিকে। সোজা বনগাঁয় পৌঁছে গোটা স্টেশন এলাকা ঘুরে দেখেন অধীরবাবু। শৌচাগার থেকে শুরু করে প্রতীক্ষালয় কিছুই বাদ যায়নি।
পরে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন রেল প্রতিমন্ত্রী। বিশেষ করে মহিলা যাত্রীরা অভিযোগ করেন, এই শাখায় ট্রেন চলাচলের অবস্থা খুব খারাপ। সময়মতো ট্রেন চলে না। বিশেষ করে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত কোনও ট্রেনের উল্লেখ নেই টাইম টেবিলে। ফলে যাত্রীদের চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। এক মহিলা বলেন, ‘‘বনগাঁ স্টেশনের একমাত্র শৌচাগারটির দুর্দশা চোখে দেখা যায় না। ঢোকা তো দূরের কথা, পাশ দিয়েও যেতে গেলেও নাকে রুমাল চাপতে হয়।’’ স্টেশনে দাঁড়িয়েই অধীরবাবু রেলকর্তাদের নির্দেশ দেন, অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে হবে। রেল প্রতিমন্ত্রী বলেন, “শিয়ালদহ থেকে লালগোলা শাখা খুঁটিয়ে দেখেছি। কিন্তু বনগাঁ শাখায় আসা হয়নি। দিনের যে-সময়টায় ট্রেনের ব্যবস্থা নেই, তখনকার জন্য কী করা যায় দেখছি।” পূর্ব রেলের শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার সুচিত্র দাস পরে জানান, মন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী বনগাঁয় যে-দেড় ঘণ্টা ট্রেন থাকছে না, সেই সময় ট্রেন দেওয়া যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থির হয়েছে, হাবরা স্টেশন ভবন সংস্কার করা হবে।
ফিরতি পথে রেলমন্ত্রীর নির্দেশে বিশেষ ট্রেন থামানো হয় ঠাকুরনগর ও হাবরা স্টেশনে। সেখানেও যাত্রীরা সময়সূচি মেনে ট্রেন চালানো এবং ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানান। ঠাকুরনগরে মতুয়া মেলার জন্য অতিরিক্ত টিকিট কাউন্টার এবং একটি ফুটব্রিজ তৈরির দাবি জানানো হয়। অনিয়মিত ট্রেন চলাচলের অভিযোগও ওঠে। অধীরবাবু স্টেশনে দাঁড়িয়েই রেলকর্তাদের বলেন, “রেলের পক্ষ থেকে যা যা করা সম্ভব, সেগুলো খতিয়ে দেখুন।” বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ বিধাননগর স্টেশন নেমে যান মন্ত্রী। সেখান থেকে বিমানবন্দরে।
শিয়ালদহের ট্রেন চলাচলে ঝামেলা প্রায় রোজকার ব্যাপার। গত পাঁচ বছরে যাত্রী-সংখ্যা বেড়েছে বহু গুণ। ফলে ট্রেনগুলিতে পা রাখার জায়গা মেলে না। লাইন যা আছে, তাতে এই মুহূর্তে ট্রেন বাড়ানোর পরিস্থিতিও নেই এই শাখায়। তাই ঠিক হয়, নয়ের বদলে ১২ কামরার
ট্রেন চালানো হবে। কিন্তু সেই পরিকল্পনাও পুরোপুরি রূপায়ণ করতে পারেনি রেল। তাই যাত্রীদের রোজই চিঁড়ে-চ্যাপটা হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। কিন্তু রেল প্রয়োজনীয় সংখ্যায় ১২ কামরার ট্রেন চালাতে পারছে না কেন?
রেলকর্তাদের কথায়, ১২ কামরার ট্রেন চালাতে হলে প্ল্যাটফর্ম লম্বা করতে হবে। কিন্তু কিছু স্টেশনে দখলদারদের এমনই রমরমা যে, প্ল্যাটর্ফম বাড়ানো যাচ্ছে না। রেল প্রতিমন্ত্রী এ দিন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। সরেজমিনে দেখেছেন বিভিন্ন স্টেশনের অবস্থা। কী ভাবে সমস্যা মেটানো যায়, তার পথ খুঁজতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.