|
|
|
|
সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে তপ্ত মাইশোরায় জখম ৭ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
গ্রামীণ সালিশিসভার বিরোধকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও সিপিএম সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পাঁশকুড়া থানার মাইশোরা এলাকার রাধাবল্লভপুর গ্রাম। সোমবার রাত ও মঙ্গলবার সকালে দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৭ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে চার জন সিপিএম ও তিন জন তৃণমূল সমর্থক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। দু’পক্ষই অভিযোগ করলেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়া থানার মাইশোরা বাজার এলাকা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে রাধাবল্লভপুর গ্রামের বাজারে গত রবিবার রাতে গ্রামরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছিলেন। রাতে বাড়ি ফেরার পথে একদল মদ্যপ তৃণমূল সমর্থকের সঙ্গে বচসা বাধে তাঁদের। ওই তৃণমূল সমর্থকরা গ্রামরক্ষী বাহিনীর কয়েকজন সদস্যদকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনার মীমাংসার জন্য সোমবার রাতে রাধাবল্লভপুর গ্রামে সালিশি সভা ডাকা হয়। ওই সভায় গ্রামের সিপিএম সমর্থকরা থাকলেও অভিযুক্ত তৃণমূল সমর্থকরা হাজির ছিলেন না। অভিযোগ, সালিশি সভার একদল লোক অভিযুক্ত তৃণমূল সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের জোর করে সভায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তারক দোলই নামে এক তৃণমূল সমর্থককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই নিয়ে দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। আহত তারককে পাঁশকুড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
এই নিয়ে গ্রামে উত্তেজনা ছিল। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সকালে রাধাবল্লভপুর গ্রামে সিপিএমের বিরুদ্ধে পতাকা ছেঁড়ার অভিযোগ তুলে মিছিল বের করে তৃণমূল। ওই মিছিল ঘিরে ফের তৃণমূল ও সিপিএম সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। অভিযোগ, তৃণমূল সমর্থকরা রাধাবল্লভপুর গ্রামের সিপিএম প্রার্থী চন্দনা দোলই ও লাগোয়া বিগড়া-চন্দনগেড়িয়া গ্রামের সিপিএম প্রার্থী সাগরিকা দোলই-সহ কয়েকজন সিপিএম সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁদের মারধর করেন। তৃণমূলের লোকেদের মারে সিপিএম সমর্থক প্রবেশ দোলইয়ের কোমরে আঘাত লাগে। তাঁর প্রতিবেশী শ্যামলী দোলাইয়ের মাথা ফেটেছে। বাকিদের পাঁশকুড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হলেও গুরুতর আহত প্রবেশ ও শ্যামলীদেবীকে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
অন্য দিকে সিপিএম সমর্থকদের মারে গ্রামের তৃণমূল সমর্থক চণ্ডী দোলই, ঝড়ু দোলই আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁদেরও পাঁশকুড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
সিপিএমের পাঁশকুড়া উত্তর লোকাল কমিটির সম্পাদক কালীপদ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘সোমবার সকালে বহিরাগত তৃণমূল সমর্থকরা মিছিল করে গ্রামে ঢুকে আমাদের প্রার্থী-সহ সমর্থকদের মারধর, বাড়ি ভাঙচুর করেছে।” তৃণমূল যুব কংগ্রেসের পাঁশকুড়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি কুরবান শাহ পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাদের সমর্থকদের সালিশিসভায় ডেকে জরিমানার চেষ্টা করেছিল সিপিএম। সভায় না যাওয়ায় আমাদের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায়। সোমবার সকালে সিপিএমের লোকেরা আমাদের মিছিলে ফের হামলা চালায়। এতে আমাদের দলের দুই সমর্থক আহত হয়েছেন।”
এদিন সকালে গণ্ডগোলের খবর পেয়ে পাঁশকুড়া থানার পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে যায় ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে সিপিএম ও তৃণমূল পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। তা নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। |
|
|
|
|
|