আকাশপথে লঙ্কা-কাণ্ড
উড়ন্ত বিমানের দরজা খোলার চেষ্টা ক্রিকেটারের
ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বোয়িং ৭৭৭ যখন ৩৫ হাজার ফুট উঁচুতে, তখন হঠাৎ বিমানের দরজা টেনে হিঁচড়ে খোলার সে কি চেষ্টা তরুণটির। গায়ে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের নীল টি-শার্ট। গোটা দলটাই তখন সেই বিমানে। তাঁদেরই একজন সেই তরুণ।
২২৯ যাত্রীর বেশির ভাগই তখন আরামে ঘুমোচ্ছিলেন। কী কেলেঙ্কারি হতে যাচ্ছিল, তা তাঁরা টেরও পাননি তখন। পরে সেই কিস্সা শুনে তো তাঁদের চুল খাড়া, চক্ষু চড়কগাছ। অনেকে হেসে লুটিয়েও পড়লেন মদ্যপ ক্রিকেটারের কাণ্ডকারখানার কথা শুনে। আর রমিথ রাম্বুকোয়েলার কী দশা? তিনিই তো সেই শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের ক্রিকেটার। প্রকৃতির ডাকে যখন তাঁর শোচনীয় অবস্থা, তখন টয়লেটের দরজা ভেবে বিমানের কেবিন ডোর-টাই টেনে খুলতে গিয়েছিলেন তিনি। খুলছে না দেখে আরও আক্কেল গুড়ুম তাঁর। দরজা ধরে প্রাণপণ টানা-হ্যাঁচড়া শুরু করে দেন তিনি। মিনিট দুয়েক ধরে বিএ ২১৫৮ বিমানের দরজার সঙ্গে রমিথের কোস্তাকুস্তি দেখতে পেয়ে যখন বিমানকর্মীরা ছুটে আসেন, তখন তিনি তাঁদের প্রায় হাত জোড় করে কাকুতি-মিনতি করতে থাকেন, “আমাকে একটু টয়লেটের দরজাটা খুলে দিন না প্লিজ, আর পারছি না যে।” ব্যাপারটা বুঝতে পেরেই তাঁকে সটান ধাক্কা দিয়ে টয়লেটে ঢুকিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন বিমানকর্মীরা।
বেরিয়ে এসে সহযাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন রমিথ। তাঁর সাফাই, “আলো কম ছিল বলে ঠিক বুঝতে পারিনি, ওটা কীসের দরজা।” তবে তাঁর বাবা যে দেশের সরকারের এক মন্ত্রী। তাই এই কীর্তির জন্য কতটা প্যাঁচে পড়বেন, সেটাই প্রশ্ন।

বিতর্কে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার রমিথ রাম্বুকোয়েলা।
জয়বর্ধনে, সঙ্গকারারা যখন ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে খেলতে ব্যস্ত, তখন তাঁদের ‘এ’ দলের ক্রিকেটাররা সেখানে সফর শেষ করে ঘরে ফিরছিলেন। সফর শেষের আনন্দে বিমানে ওঠার আগেই দলের কয়েকজন ক্রিকেটার বেশ কয়েক পাত্র সুরা গলায় ঢেলে নেন। তার পর হয়তো লুকিয়ে লুকিয়ে বিমানেও। এই কেলেঙ্কারি সম্ভবত তারই জের। গ্রেনাডা থেকে সেন্ট লুসিয়া হয়ে গ্যাটউইকগামী বিমানে গোটা ঘটনাটির সাক্ষী ছিলেন ২৬ বছরের ব্রিটিশ মহিলা শারলিন ফ্রান্সিস, যিনি তাঁর এক বছরের কন্যা, তাঁর মা ও ভাই-কে নিয়ে সেই বিমানে সফর করছিলেন। অন্যরা ঘুমোলেও তিনি ঘুমোননি। ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘ডেইলি মেল’-কে শারলিন বলেন, “কী সাঙ্ঘাতিক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ পিছন থেকে এসে ছেলেটা কেবিন ডোরের হ্যান্ডল ধরে তুমুল টানা-হ্যাঁচড়া শুরু করে দিল। দেখে তো মনে হচ্ছিল ও নেশা করে ছিল। বিমানকর্মীরা ছুটে না এলে কী যে হত, ভেবে শিউরে উঠছি।”
বিমানকর্মীরা অবশ্য বলছেন, ৩৫ হাজার ফুট উঁচুতে থাকা অবস্থায় বিমানের দরজা কিছুতেই খোলা সম্ভব নয়। তাই তেমন ঝুঁকির কোনও কারণও ছিল না। তবে ক্রিকেটারদের মদ্যপানের খবর শুনে বেজায় চটেছেন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট কর্তারা। ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ জারি হয়ে গিয়েছে। দলের ম্যানেজার জয়ন্ত সেনেভিরত্নের রিপোর্টও জমা পড়ে গিয়েছে। যদিও শ্রীলঙ্কার বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দোষী সাব্যস্ত হলে শাস্তি পেতে হবে রমিথকে, তবে শেষ পর্যন্ত ২১ বছর বয়সি ৬ ফিট ৩ ইঞ্চি লম্বা এই বাঁহাতি ওপেনারের কড়া শাস্তি হয় কি না, সেটাই দেখার। তিনি যে মন্ত্রীর ছেলে!


৩৫ হাজার ফুট উঁচুতে কোনও ভাবেই বিমানের ‘কেবিন ডোর’ খোলা সম্ভব নয়। এর একমাত্র কারণ হল হাওয়ার চাপ। অত উঁচুতে হাওয়ার যা চাপ থাকে, তাতে বিমানের দরজা খোলা তো দূরঅস্ত, ভাঙাও সম্ভব ছিল না। আকাশ পথে একমাত্র ‘ইমার্জেন্সি ডোর’ ছাড়া বিমানের আর কোনও দরজা খোলা সম্ভব নয়।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.