গ্র্যান্ড স্ল্যাম টেনিসে সাধারণত সুপারস্টারকে হারিয়ে মহাঅঘটন ঘটানো অখ্যাত রাতারাতি বিখ্যাত হওয়ার চাপ সামলাতে না পেরে পরের ম্যাচেই হেরে বসেন। চলতি উইম্বলডনেই হাতে গরম উদাহরণ রয়েছে। নাদাল-সংহারক দারসিস এবং ফেডেরার-বধকারী স্টাকভস্কি। কিন্তু নিয়ম মাত্রই তার ব্যতিক্রম থাকে। ২০১৩ উইম্বলডনে সেই ব্যতিক্রমের নাম সাবিন লিজিকি।
সেরেনা উইলিয়ামসের বিরুদ্ধে আগের রাউন্ডে যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই আজ শুরু করে জার্মান কন্যা সেমিফাইনালে পৌঁছলেন। স্ট্রেট সেটে ৬-৩, ৬-৩ হারালেন স্থানীয় হাটথ্রব লরা রবসনকে আগের ম্যাচে হারিয়ে ইংরেজদের চোখে ভিলেন হয়ে ওঠা কায়া কানেপি-কে।
লিজিকি তাঁর দ্বিতীয় উইম্বলডন সেমিফাইনাল খেলবেন গত বারের ফাইনালিস্ট অ্যাগনিয়েস্কা রাডওয়ানস্কার বিরুদ্ধে। যিনি বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচ ছাদ ঢাকা সেন্টার কোর্টে জিতলেন ৭-৬ (৭-৫), ৪-৬, ৬-২ না লি-র বিপক্ষে। বুধবার জের্জি জাঙ্কোভিচ আর লুকাস কুবট, দুই পোলিশ মুখোমুখি হয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যামে পুরুষ সিঙ্গলসের ইতিহাসে এই প্রথম পোলিশের সেমিফাইনাল ওঠার ঐতিহাসিক নজির তৈরি করবেন। তার চব্বিশ ঘণ্টা আগে এক পোলিশ মেয়ে পোল্যান্ড-জাত জার্মান মেয়ের বিরুদ্ধে সেমিফাইনাল লাইন আপ তৈরি করলেন! |
নতুন সঙ্গী ভাসেলিনকে নিয়ে উইম্বলডনে দাপট বোপান্নার। ছবি: এপি |
অন্য সেমিফাইনাল ২০০৭ উইম্বলডন রানার্স মারিয়ন বার্তোলি ও ২০১১-র চ্যাম্পিয়ন কিভিতোভাকে এ দিন হারিয়ে আরও একটি অঘটন ঘটানো কারস্টেন ফ্লিপকেন্স-এর মধ্যে। গ্র্যান্ড স্ল্যামে কখনও চতুর্থ রাউন্ড না টপকানো বেলজিয়ান মেয়ে এক সেট পিছিয়ে পড়েও জেতেন ৪-৬, ৬-৩, ৬-৪। বার্তোলির কাছে শেষ আমেরিকার ‘নতুন সেরেনা’ স্লোয়ান স্টিফেন্সের দৌড়। ৪-৬, ৫-৭। ‘বুম বুম’-এর পাশাপাশি লিজিকির ডাকনাম এখন ‘ডরিস বেকার’! লিজিকির দেশোয়ালি টেনিস কিংবদন্তি আশির দশকে যে অবিশ্বাস্য পাওয়ারফুল সার্ভ আর গ্রাউন্ডস্ট্রোকের দাপটে তিন বার উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন, সেই ঢঙেই এ বার অল ইংল্যান্ড ক্লাবের ঘাসের কোর্টে খেলছেন লিজিকি। মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা এ দিন বলেছেন, “কেউ মুখে হাসি ফুটিয়ে কোনও কাজ করলে তার ওপর রাগা মুশকিল। টপফেভারিট সেরেনাকে ছিটকে দেওয়া সত্ত্বেও তাই উইম্বলডন জনতা লিজিকিকে ভালবাসে। মেয়েটা এখানে অন্যতম ফেভারিট হিসেবে এসেছিল। আর এখন তো দেখে মনে হচ্ছে, ও-ই সেই প্লেয়ার যাকে হারানো সবচেয়ে কঠিন।” লিজিকির একের পর এক ‘বুম বুম’ সার্ভিসের সময় ঠোঁটের কোণে মিচকে হাসি লেগে থাকে! যার ব্যাখ্যা স্বয়ং লিজিকির কাছেও নেই। “সত্যিই জানি না, কেন সার্ভিসের সময় আমার মুখটা ও রকম হয়ে যায়!”
পুরুষ ডাবলসে উইম্বলডনে এই প্রথম দুটো ভারতীয় জুটি সেমিফাইনালে। বৃষ্টি বিঘ্নিত কোয়ার্টার ফাইনালে বোপান্না-ভাসেলিন ম্যারাথন পাঁচ সেটে ৭-৫, ৭-৬ (৭-৩), ৬-৭ (৪-৭), ৬-৭ (৩-৭), ৬-২ লিন্ডসটেড-নেস্টরকে হারায়। বোপান্নার এই প্রথম উইম্বলডন সেমিফাইনাল। নতুন ইন্দো-ফরাসি জুটি পরপর তৃতীয় আর ষষ্ঠ বাছাইকে হারাল এখানে। পাক সঙ্গী কুরেশিকে নিয়ে বোপান্নার গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল (২০১০ যুক্তরাষ্ট্র ওপেন) খেলার অভিজ্ঞতা আছে। লিয়েন্ডার-স্টেপানেক, যাঁদের মিলিত বয়স ৭৪ বছর, এক সেট পিছিয়ে পড়েও বেনেতেউ-জিমনজিচকে হারিয়েছেন ৪-৬, ৬-৪, ৬-৩, ৬-৪। মহেশ-নোয়েল জুটি শেষ আটে ব্রায়ান ভাইদের বিরুদ্ধে হারে।
|