|
|
|
|
সরকারি পদ ছাড়তে নারাজ বিজেপি বিধায়করা
স্বপন সরকার • পটনা |
বিজেপির সঙ্গে জেডিইউ-এর ছাড়াছাড়ি হয়েছে দু’সপ্তাহ আগে। বিজেপি-র হাতে থাকা ১৩টি বিভাগের ১১ জন বিজেপি মন্ত্রীকে নীতীশ কুমার বরখাস্তও করেছেন। কিন্তু ব্যতিক্রম রয়ে গিয়েছে এখনও। বিজেপির ১৪ জন নেতা-বিধায়ক সরকারের বিভিন্ন কমিটি এবং কমিশনে এখনও থেকে গিয়েছেন। তাঁদের পদত্যাগের ব্যাপারে জেডিইউ যেমন কোনও তাড়া দিচ্ছে না, তেমনই বিজেপিও এই নিয়ে এখনও নীরব।
রাজ্যে বিজেপি এবং জেডিইউ এখন একে অন্যের বিরুদ্ধে বিবৃতির প্রতিযোগিতায় নেমেছে। অথচ বিরোধী দলে থেকে নীতীশের সরকারে তাঁদের নেতারা এখনও কেন পদ আঁকড়ে বসে আছেন তা নিয়ে বিজেপির তরফে স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে দলের রাজ্য সভাপতি মঙ্গল পাণ্ডে বলেছেন, “দলে আলোচনা চলছে। সময় মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
১৭ বছরের এনডিএ-র সঙ্গে সম্পর্ক এবং সাড়ে সাত বছর ধরে সরকার চালানোর পরে নীতীশ কুমার যে রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েছেন তাতে বিরোধী দল হয়েও এই ১৪ জন বিজেপি নেতাকে এখনও তা স্পর্শ করতে পারেনি। তাই মহিলা কমিশন, কিষাণ কমিশন, শিশু শ্রমিক কমিটি বা উচ্চ শ্রেণির জন্য ওয়েলফেয়ার কমিটির মতো বেশ কয়েকটি কমিটি-কমিশনের পদে ১৪ জন বিজেপি নেতা বহাল তবিয়তে বসে রয়েছেন। লাল আলো লাগানো গাড়িতে যাতায়াত করেছেন, সরকারি সুবিধা নিচ্ছেন। এই নিয়ে নীতীশ কুমার কোনও উচ্যবাচ্য যে করছেন না বিজেপি রাজ্য সভাপতির কথাতেই তা স্পষ্ট। সরকারের তরফে বা জেডিইউ-এর পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই সব কমিটি বা কমিশন থেকে পদত্যাগের জন্য কিছু বলা হয়নি। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে পদত্যাগ করা নিয়ে এখনও কিছু বলা হয়নি।”
জেডিইউ-এর মুখপাত্র সঞ্জয় সিংহ বলেন, “বিজেপির লোকজন এখনও সরকারি কমিটিতে থেকে সরকারের সমালোচনা করছেন। পদত্যাগ করতে তাঁদের অসুবিধা হচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে, বিজেপি ক্ষমতার জন্য সব করতে পারে।” বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান বিজেপির অবধেশ নারায়ণ সিংহ তাঁর পদে বহাল থেকেই বলছেন, “এটা সাংবিধানিক পদ। সুতরাং হঠাৎ করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। যদি দল থেকে কোনও নির্দেশ আসে তখন এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।” এই সব সরকারিু লাভজনক পদ থেকে ইস্তফার ব্যাপারে প্রকাশ্যে বিজেপি যাই বলুক না কেন, সত্যি কী এই সব নেতা-বিধায়করা ক্ষমতা ছাড়তে চায়? প্রশ্নের জবাবে এক প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, “আমরা এখনই এই নিয়ে কিছু বলছি না। তবে নীতীশ কুমার যদি মন্ত্রীদের বরখাস্ত করতে পারেন, তা হলে কেনও এই সব কমিটি থেকে আমাদের প্রতিনিধিদের বরখাস্ত করছেন না? আমরা সেটাই চাইছি।” ওই নেতার কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে আমাদের পদত্যাগের সুযোগ না দিয়ে বরখাস্ত করেছেন তাতে আমরা রাজনৈতিক সুবিধা পাব। এ ক্ষেত্রেও আমরা চাইছি, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বরখাস্ত করুন। তাতে আগামী দিনে আমরা এগিয়ে থাকব।”
১১ জন বিজেপি মন্ত্রীর ইস্তফার পরে বিভিন্ন দফতরে পূর্ণ সময়ের মন্ত্রী নেই। দফতরগুলি মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই রয়েছে। কবে নতুন মন্ত্রীরা শপথ নেবেন? মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ কবে করবেন নীতীশ? একই প্রশ্নে বিরক্ত নীতীশ কুমার। সরকারি ভাবে ১৯ জুন এনডিএ থেকে নীতীশ কুমার বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে তিনি এখন ১১ জন বিজেপি মন্ত্রীর ১৮টি দফতর সামলাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “যথা সময়ে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হবে। তবে এখন কোনও সমস্যা নেই। কাজ তো করছি আমি। যারা এই সব নিয়ে আলোচনা করছেন তাঁদের কী সমস্যা হয়েছে তা আমি বুঝতে পারছি না!” |
|
|
|
|
|