নির্মাণ সামগ্রীর মালপত্র সরবরাহ করা নিয়ে গোলমাল, আর তার জেরে মারামারি। পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার সকালে দুই গোষ্ঠীর এই সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নারকেলডাঙা থানার বেলেঘাটা মেন রোড। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ওসি-কে ধাক্কা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দুই গোষ্ঠী মিলিয়ে সাত জন গ্রেফতার হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত কয়েক দিন ধরেই এলাকার দুই প্রোমোটার গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চলছিল। অভিযোগ, এলাকার দখল কে নেবে, তা নিয়ে দুই প্রোমোটার গোষ্ঠীর তরফে ওমপ্রকাশ সিংহ এবং রামবাবু যাদবের ভাই জয়রাম যাদবের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। প্রথম দিকে কথা-কাটাকাটির মধ্যে থাকলেও সোমবার তা বড় আকার নেয়।
অভিযোগ, ওই রাতেই সাড়ে এগারোটার পরে রামবাবু যাদবের ভাই জয়রাম যাদব দলবল নিয়ে বেলেঘাটা মেন রোড সংলগ্ন এন্টালি থানার মোমবাতি গলিতে ওমপ্রকাশের আশ্রিত সন্তোষ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে হামলা চালায়। সন্তোষ এলাকায় নির্মাণ সামগ্রীর মালপত্র সরবরাহ করেন। অভিযোগ, তাঁর অনুপস্থিতিতে ভাঙচুর করা হয় তাঁর বাড়িতে। |
সংঘর্ষের বিবরণ দিচ্ছেন এক মহিলা। মঙ্গলবার।—নিজস্ব চিত্র |
পুলিশ জানায়, রাতে ভাঙচুরের পরে কোনও ঝামেলা না হলেও, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ আগের দিনের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ সামনাসামনি বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। প্রথমে বাদানুবাদ হলেও পরে তা হাতাহাতিতে গড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, মঙ্গলবারের ঘটনায় গুলিও চলে। যদিও পুলিশ গুলি চলার ঘটনা অস্বীকার করেছে।
এই ঘটনা ঘিরে এলাকার চেহারা থমথমে হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে দেখে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নারকেলডাঙা থানার পুলিশ। পুলিশের মধ্যস্থতায় মঙ্গলবারের ঘটনা বেশিদূর গড়াতে পারেনি বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। তবে এই সংঘর্ষকে এলাকার সাধারণ বাসিন্দারা শুধুমাত্র গোষ্ঠী সংঘর্ষ বলতে রাজি নন। তাঁদের অভিযোগ, পুরো ঘটনাটিই আসলে তৃণমূলের অর্ন্তদ্বন্দ্ব। তাঁদের অভিযোগ, এলাকার তৃণমূল নেতা ওমপ্রকাশ সিংহ এবং রামবাবু যাদবের মধ্যে এই ঝামেলা আসলে এলাকা দখলের লড়াই। এলাকাবাসীদের দাবি, ওমপ্রকাশ পরেশ পালের নেত্ৃত্বে এলাকা দেখভাল করেন এবং রামবাবু চলেন শিখা মিত্রের কথায়।
ওমপ্রকাশ সিংহ নিজেও বলেন, “আমি পরেশ পালের নেতৃত্বে এলাকায় দলের কাজ করি।” যদিও পরেশবাবু সেই দাবি অস্বীকার করে বলেন, “আমি ওমপ্রকাশ নামে কাউকেই চিনি না। ওখানে যারা ঝামেলা করেছে, তারা সকলেই এলাকার দুষ্কৃতী। তৃণমূলের সঙ্গে এদের কোনও যোগাযোগ নেই।” অন্য দিকে শিখা মিত্র বলেন, “আমি রামবাবু যাদব কিংবা জয়রাম যাদব নামের কাউকে চিনি না।” তিনি আরও জানান, পুলিশ মঙ্গলবার যাদের গ্রেফতার করেছে, তাদের মধ্যে পঙ্কজ আর মানুয়াকে তিনি আগে থেকে চিনতেন। শিয়ালদহ কেন্দ্রে থাকার সময় থেকে তাদের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তাদের গ্রেফতারের পিছনে কী কারণ, তা জানতেই তিনি থানায় ফোন করেন বলে জানান শিখাদেবী। |