|
|
|
|
তারাবাজি
|
শ্রাগ দিয়ে গা ঢাকা
খোলামেলা স্প্যাগেটি। টিউব টব পরতে অস্বস্তি? সমস্যা নেই।
ওপরে শ্রাগ চড়িয়ে নিলেই লাস্যময়ী। লিখছেন সংযুক্তা বসু |
• একটা হট প্যান্ট, তার ওপর একটা ছোট্ট স্লিভলেস টপ, তার ওপর একটা শ্রাগ।
• একটা অফ শোল্ডার গাউন, তার ওপর একটা ছোট্ট শ্রাগ।
• একটা স্কার্ট, তার ওপর একটা স্প্যাগেটি টপ, তার ওপর একটা শ্রাগ।
শ্রাগের কারিকুরি
শ্রাগ পরলে শরীর লুকোচুরি খেলবে পোশাকের আড়ালে থেকে। খোলামেলা চনমনে সাজেশaন রেখে। এই মুহূর্তে বলিউডি ছবিতে তো বটেই, টলিউডেও চলে এসেছে শ্রাগের স্টাইল। দেখতে অনেকটা ব্লাউজের মতো, যা কিনা ওই পোশাকের নীচের বক্ষরেখাকে আরও গভীর করে তুলবে এবং সেই সঙ্গে বক্ষের আবরণ হিসেবেও কাজ করবে। গেঞ্জির কাপড়, ডেনিম, সিল্ক, কর্ড বা লেস দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে এই উর্দ্ধ্ববাস। যার নীচে থাকতে পারে শার্ট, টিউব টপ, অথবা অন্য যে কোনও ধরনের খোলামেলা পোশাক। শরীরের খুব অল্প অংশই ঢাকা পড়ে এই পোশাকে। শ্রাগের নীচে থাকা পোশাকটিকে সমৃদ্ধ করাই শ্রাগের মূল কাজ।
ওয়েস্টার্ন ওয়্যার হিসেবে প্রথমে এ দেশে শ্রাগ ব্যবহার করা হলেও, পরে ক্রমশ তা ইন্দো-ওয়েস্টার্ন ফিউশন পোশাকেরও প্রতীক হয়ে ওঠে। শেষমেশ শাড়ির সঙ্গেও শ্রাগ পরার ফ্যাশন চালু হয়ে গিয়েছে। জেন ওয়াইয়ের বিশেষ পছন্দের পোশাক এখন শ্রাগ। |
দীপিকা পাড়ুকোন |
করিনা কপূর |
|
জেন ওয়াইয়ের চোখে
সদ্য কমপ্যারেটিভ লিটারেচার নিয়ে পাশ করে স্কুল শিক্ষিকা হওয়া কাকলি বসুর কাছে শ্রাগ খুব ‘কমফর্টেবল’ একটা পোশাক। ভারী গড়নের শরীরকে ঢেকেঢুকে ছিপছিপে করে তুলতে পারে শ্রাগ। ট্রাউজার, পাতিয়ালা, স্কার্ট কিংবা যে কোনও অধোবাসের উপরেই চলতে পারে এই পোশাক। বললেন, “ইন্দো-ওয়েস্টার্ন ফিউশন হিসেবে দারুণ লাগে শ্রাগের কম্বিনেশন। ঠিকঠাক ক্যারি করতে পারলে ব্যক্তিত্ব একটা অন্য মাত্রা পায়। আজকাল কেবল অল্পবয়সি মেয়েরা পরছে তা নয়। যাঁদের বয়স পঁয়ত্রিশ থেকে চল্লিশের ভেতর, তাঁরাও পরছেন। শরীরের বাড়তি মেদজাতীয় খুঁতগুলো ঢেকে দিতে পারে শ্রাগ।” অন্য দিকে কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী কৃষ্ণা দেব বলছেন, “অনেক সময়ই অফ শোল্ডার পোশাক-আশাক পরে বাড়ি থেকে বেরোতে অস্বস্তি হয়। তখন শ্রাগ পরলে যাতায়াত করতে স্বস্তি লাগে। শ্রাগের ডিজাইনও এখন নানারকম। আমার একটা শ্রাগ আছে, যার পিঠের দিকটা সিল্কের। আর সামনের দিকটা গেঞ্জির কাপড়ের।”
সিনেমা নিয়ে পাঠরতা ছাত্রী শ্রীদেবী অবশ্য কিছুতেই শ্রাগকে স্প্যাগেটি বা টিউব টরের সলাজ আবরণ হিসেবে ভাবতে নারাজ। তাঁর কথা, “শ্রাগ হল একটা এমন পোশাক যা পরলে যে কোনও সাজেই একটা ফর্মাল লুক আসে। বিশেষ করে লং শ্রাগ টি শার্টের ওররে পড়লে কর্পোরেট লুক দেওয়া যায় গ্রীষ্মকালে। স্প্যাগেটি বা টিউব টপ পরলে সেটাই তো পোশাক। সেখানে শ্রাগ দিয়ে গা ঢাকার দরকার নেই।”
শ্রাগ বলিউডে-টলিউডে
‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোনকে পরানো হয়েছিল শ্রাগ। ‘ককটেল’ ছবিতে ডায়ানা পেন্টি এবং ‘ভিকি ডোনর’ ছবির নায়িকা ইয়ামী গৌতমকেও শ্রাগ পরানো হয়েছিল। “আমি তো পাগলু ছবিতে নানা রকম ডিজাইনের শ্রাগ পরেছি। পার্সোনাল কালেকশনেও শ্রাগ আছে। স্প্যাগেটি টপের সঙ্গে লুঙ্গি প্যান্ট বা লুজ প্যান্ট পরলে শ্রাগ ভাল মানায়,” বলছিলেন কোয়েল।
শ্রাগের কথা উঠতেই উচ্ছ্বসিত হলেন পাওলি। বললেন, “শ্রাগ পরতে ভাল লাগে টিউবটপের ওপর লেয়ারিং হিসেবে। তবে আমি ফুলহাতা শ্রাগই বেশি পছন্দ করি। দরকার হলে হাতা গুটিয়ে নিই।” সম্প্রতি ‘আমি আর আমার গার্লফ্রেন্ডস’ ছবিতে রাইমা সেনও পরেছিলেন শ্রাগ। শ্রাগের মহিমা এমনই যে কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রাগের আদলে তৈরি লেসের জামা পরে সোনম কপূর র্যাম্পে হাঁটলেন। সেই ডিজাইন করেছিলেন অনামিকা খন্না। |
ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন |
রাইমা সেন |
সোনম কপূর |
|
ডিজাইনার শ্রাগ
“শ্রাগের ঝুল ক্রমশ বাড়ছে। এখন উরু পর্যন্ত লম্বা শ্রাগও মেয়েরা পড়ছেন খোলামেলা পোশাকের ওপর আব্রু হিসেবে। তা ছাড়া শ্রাগ শুধু ফ্যাশন ওয়্যারই নয়, ইউটিলিটি অ্যাটায়ারও বটে। গরমের দিনে সহজেই কাঁধ খোলা বা স্লিভলেস পোশাক পরা যায়। তার ওপর শ্রাগ চাপিয়ে দিলে রোদে পোড়ে না। বর্ষাকালে স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচাতে পারে এই শ্রাগ,” বলছেন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পল। “তা ছাড়া ধরা যাক কেউ একটু রিভিলিং পোশাক পরে ডিস্কে যেতে চান। ট্যাক্সি চড়বেন বা বাসে উঠবেন। সেক্ষেত্রে ওই ধরনের পোশাক পরতে দ্বিধা হয়। তখন শ্রাগ পরা থাকলে অস্বস্তিটা কেটে যায়।” স্টাইলিস্ট অজপা মুখোপাধ্যায় বলছেন, “যাঁরা বেশ রোগা, তাঁদের গড়নে একটু ভারিক্কি ভাব আনতে শ্রাগ খুবই কাজের। আমি ‘কেয়ার করি না’ সিরিয়ালের নায়িকা মধুমিতাকে শ্রাগ পরিয়েছিলাম, ওর রোগা চেহারাটাকে ক্যামেরার লেন্সে মানানসই করার জন্য। কাঁধে প্যাডও লাগানো হয়েছিল। যাতে কাঁধের জায়গাটা একটু ভারী দেখায়।”
অন্য দিকে অভিষেক দত্ত বলছেন শ্রাগ এমনই একটি পোশাক, যার কাটিং অনেকটা কত্থক নাচের পোশাকের ওপরের কোটের মতো। যে কোনও সাধারণ সাজকে আড়ম্বরময় করে তুলতে পারে শ্রাগ। বিশেষ করে লেস ও সাটিনের শ্রাগ দেখতে খুবই উজ্জ্বল হয়। এখন ভাল চলছে কুরুশে বোনা শ্রাগও।
এই বর্ষার মরসুমে ভিজে ভিজে হাওয়ায় আপন মনে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে হলে, কিংবা ঝমঝম বৃষ্টির বাদলা বাতাসে নিশ্চিন্ত থাকতে হলে, ছাতা বা রেনকোটের বদলে শ্রাগকে ভরসা করুন। ঠান্ডা লাগবে না। ফ্যাশনও হবে।
|
মিনি জ্যাকেটের গল্প |
• গরম বা বর্ষাকালেও শ্রাগ পরা যায়। তাতে ঠান্ডা লাগবে না। রোদেও পুড়তে হবে না
• গেঞ্জির কাপড়, সুতি, লেস, কুরুশে বোনা শ্রাগের পাশাপাশি এখন চলছে ডেনিম শ্রাগ, সিল্ক আর সাটিনেরও শ্রাগও
• শ্রাগের ভেতরে টিউব টপ বা স্প্যাগেটি পরলেও অস্বস্তি হবে না
• খুব সাধারণ পোশাককেও ঝলমলে করে তুলতে পারে একটা জমকালো শ্রাগ
• সাধারণ শ্রাগের দাম ২০০ টাকা থেকে শুরু
• ডিজাইনার শ্রাগের দাম আড়াই হাজার টাকা থেকে শুরু। ডিজাইনার শ্রাগে অ্যাপ্লিক, কাটওয়ার্কের নকশা এমনকী জরির কাজও হয়
• কুরুশে বোনা শ্রাগ লেটেস্ট স্টাইল স্টেটমেন্ট
• শাড়ির সঙ্গেও অনায়াসে শ্রাগ পরতে পারেন |
|
|
|
|
|
|