কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন (কেএলও) অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মালখান সিংহের খোঁজে মালদহ জেলা জুড়ে পুলিশি তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে রবিবার রাতে জেলার দুই এলাকায় দু’জন সন্দেহভাজন কেএলও জঙ্গিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম শিবু টুডু ও সোমনাথ মার্ডি। দুই জনকেই মালখান সিংহ তিন বছর আগে মালদহের কোনও গোপন ডেরায় অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে। রাতে গাজল থানার কদুবাড়ি পেট্রল পাম্পের কাছ থেকে সোমনাথকে ধরা হয়। |
তার হেফাজত থেকে পুলিশ ৫০ হাজার টাকার জালনোট উদ্ধার করেছে। একই সময়ে বামনগোলার ১২ মাইল এলাকা থেকে পুলিশ শিবু টুডুকে গ্রেফতার করে। তার হেফাজত থেকে পুলিশ ৪৯ হাজার ৫০০ টাকার জালনোট উদ্ধার করেছে। ওই এলাকায় তাদের বাড়ি।
জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “মালখান সিংহের খোঁজ চলছে। কয়েক দফায় সে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়েছে। তবে তার ঘনিষ্ট দুই জঙ্গিকে ধরা হয়েছে। ধৃতেরা গত ২৫ জুন রাতে গাজলে বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত। কেএলও-র কোনও ব্যাচে প্রশিক্ষণ না নিলেও তাদের মালখন অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়েছে।” পুলিশ সুপার জানান, সোমবার দুই জনরকে আদালতে তোলা হলে বিচারক সোমনাথকে দুই দিনের এবং শিবুকে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। টানা জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। |
উল্লেখ্য, শনিবার রাতে পুলিশ হবিবপুরের জাজইলের বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীকে খুন করার অভিযোগে মালখান সিংহের ঘনিষ্ট কেপিপির গাজল অঞ্চল সভাপতি অজয় সরকারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। জেলা পুলিশ সুপার জানান, এই নিয়ে মালখান সিংহের ঘনিষ্ট তিনজনকে ধরা হল। তবে এখনও মালখানের সঙ্গে ৬-৭ জন কেএলও জঙ্গি রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ জুন রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের তরফে কেএলও চেয়ারম্যান জীবন সিংহের ঘনিষ্ট মালখান সিংহ, নীলম্বর রাজবংশী এবং তরুণ থাপার বিষয়ে উত্তরবঙ্গের পুলিশ কর্তাদের একটি সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। সেখানে কেএলও অপহরণ, তোলাবাজির চেষ্টা করছে বলে জানিয়ে তাদের গ্রেফতারের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযানে নামে মালদহ পুলিশ। বামনগোলা, গাজল, হবিবপুর ব্লকে অভিযান শুরু হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, এক সপ্তাহ আগে পুলিশের কাছে খবর আসে মালখান পাকুয়াহাটের কাছে দিদির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। পুলিশি হানার মিনিট ১০ মিনিট আগেই দিদির বাড়ি থেকে মালখান পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পুলিশ তার জামাইবাবু শ্যামল মন্ডলকে গ্রেফতার করে। গত শনিবার এর পরে কেএলও তরফে বিভিন্ন জায়গায় ইমেল পাঠিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রত্যাঘাতের হুমকিও দেওয়া হয়।
রবিবার রাতে পুলিশ খবর পায়, পুরাতন মালদহের পোপড়া এলাকায় মালখান গা ডাকা দিয়েছে। কিন্তু সেখানেও পুলিশ তার হদিশ পায়নি। পরে বামনগোলা এবং গাজল থেকে তার ঘনিষ্ট দুই জনকে ধরা হয়। ধৃতেরা জালনোট কোথা থেকে এনেছিল বা কোথায় পাচারের চেষ্টা করচিল তা পুলিশ কর্মীরা খতিয়ে দেখছেন। |