সেবক রোডে এক পানশালায় গানের আসরে রক্তারক্তির ঘটনায় ফের শিলিগুড়ি শহরে আলোড়ন পড়েছে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে একটি শপিং মলের চতুর্থ তলের একটি পানশালায়। ঘটনার জেরে একজনকে গ্রেফতার করেছে ভক্তিনগর থানার পুলিশ। ঘটনায় ওই বারের দুজন কর্মীর হাত ও মুখে ভাঙা কাঁচ দিয়ে আঘাত করা হয়। এ ছাড়াও কয়েকজন জখম হন বলে ওই বারের অন্যতম কর্ণধার বিজয় শর্মা জানান। তিনি অভিযোগ করেন, “রবিবার রাত ১১টা নাগাদ ২০-২৫ জন যুবক এসে জোর করে ভিতরে ঢুকতে চায়। কিন্তু তারা বারের নিয়ম অনুযায়ী এন্ট্রি করে পয়সা দিতে চায়নি। তাতেই বিরোধ বাঁধে। এর জেরে হাতাহাতি শুরু হয়। আমাদের দুজন কর্মী ওই যুবকদের বাধা দিতে গিয়ে আহত হন। তাদের মাথায় মুখে ও হাতে আঘাত লাগে।” পুলিশ এসে ওই যুবকদের নিয়ে যায়। শিলিগুড়ির সহকারী ডেপুটি পুলিশ কমিশনার আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, “আমরা এক জনকে ওই মারামারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” জেলা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, “আমরা বারবার এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশকে বলেছি। যারা এই ব্যবসা করে তাঁদের যেমন নিয়ম মেনে ব্যবসা করা জরুরি, তেমনই পুলিশেরও নজর রাখতে হবে যাতে তাঁরা যেন নিরাপদে ব্যবসা করতে পারে।” এলাকাটি পুরসভার ৫ নম্বর বরোর অধীন। বরোর চেয়ারপার্সন শর্মিলা শর্মা বলেন,“কিছু পানশালায় অসামাজিক কাজ হয় বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করেন। এ সব দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের।” তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র কুণ্ডুও ঘটনায় উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কথা বলেছি পানশালার মালিক পক্ষের সঙ্গেও। কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধী যেন ছাড়া না পায় তা দেখতে হবে।”
পুরো বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত বিভিন্ন সিঙ্গিং বারে গান গেয়ে রোজগার করা বেশ কয়েক জন গায়িকা। সেবক রোডের নাম একটি পানশালার এক গায়িকা বলেন, “আমরা গান গাই ঠিকই। কিন্তু সব সময় ভয়ে থাকি। নানা রকম লোক আসে। তারা বিভিন্ন ভাবে জোর করার চেষ্টা করে। তাতে সাড়া না দিলেই ঝামেলা শুরু হয়।”
এর পাশাপাশি সেবক রোডেরই একাধিক পানশালায় নাচ গানের পাশাপাশি দেহ ব্যবসা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে বারবার। এ ধরনের পানশালা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষও। তিনি বলেন, “শিলিগুড়ি শহরে পানশালায় নাচগান তো মাঝে বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। বেশ কিছু পানশালা গানের নামে আপত্তিকর কাজকর্ম হলে তা বন্ধ করতেই হবে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে ফের কড়া পদক্ষেপ করার অনুরোধ করব।” |