চার বছর আগের একটি ফৌজদারি মামলায় আগাম জামিন পেলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুঙ্গ তাঁর স্ত্রী আশা দেবী সহ মোর্চার প্রথম সারির ৫ নেতা। সোমবার জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে মোর্চা নেতাদের আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। তবে এদিন কেউই আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। জেলা আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গুরুঙ্গ দম্পতি ছাড়াও মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি সহ রমেশ আলে এবং বিনয় তামাং এদিন আগাম জামিন পেয়েছেন। সোমবার জেলা বিচারকের দায়িত্বে থাকা জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা বিচারক সুখদেব সিংহ আনন্দ আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
২০০৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ডুয়ার্সের গরুবাথান থেকে নাগরাকাটার ভগৎপুর পর্যন্ত পৃথক গোর্খাল্যাণ্ডের দাবিতে পদযাত্রার কর্মসূচি ছিল মোর্চার। সেই পদযাত্রা বন্ধ করতে অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদ ডুয়ার্সে পাল্টা বন্ধ ডাকে। অশান্তি এড়াতে প্রশাসনের তরফে ডুয়ার্সে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সেদিন ডুয়ার্সে মোর্চার জমায়েত থেকে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানো সহ ঢিল ছোঁড়া গোলমাল পাকানোর অভিযোগে গুরুঙ্গ সহ ১৩ জন মোর্চা নেতা কর্মীর নামে নাগরাকাটা থানায় মামলা দায়ের হয়। তৎকালীন জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের ডিএসপির (অপরাধ) দায়ের করা অভিযোগে, বন্ধের দিন ১৪৪ ধারা ভেঙে ডুয়ার্সের মিন গ্লাস চা বাগান মোড়, ডামডিম মোড়, গুরজংঝোরা মোড়ে মোর্চা সমর্থকরা জড়ো হন। সেই জমায়েত থেকেই পুলিশের গাড়ি জ্বালানো, পুলিশকর্মীদের ঢিল ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠে। মোর্চা নেতাদের নামে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, খুনের চেষ্টা সহ একাধিক মামলায় অভিযোদ দায়ের হয়।
গত বছর পুলিশের জমা দেওয়া চার্জশিটেও প্রাথমিক ভাবে তাঁদের অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে বলে উল্লেখ্য করা হয়েছে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, মামলার চার্জশিট জমা পড়ে যাওয়ার পরে প্রমাণ লোপাটের কোনও আশঙ্কা তাকে না। সে কারণে আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে বলে আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন। আদালতে জামনিনের আবেদনের শুনানির সময়ে সরকারের তরফে বিরোধিতা বা সমর্থন কোনওটাই করা হয় নি। সরকারি আইনজীবী সোমনাথ পাল বলেন, “সরকারের পক্ষের তরফে মাননীয় বিচারকের সিদ্ধান্তকেই মেনে নেওয়া হয়েছে।” মোর্চার তরফে অবশ্য এদিন জানানো হয়েছে, ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে ডুয়ার্সের গোলমালে কোনও মোর্চা নেতা জড়িত নয়। সে সময়ে মিথ্যে মামলা দায়ের করে মোর্চা নেতা-কর্মীদের ফাঁসানোর চক্রান্ত হয়। |