|
|
|
|
প্রচারের টুপিতে হাত চিহ্ন, বিড়ম্বনা তৃণমূলে
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
নাকের বদলে নরুন পেলাম!
পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারের জন্য সরঞ্জাম নিতে এসে লালগড়ের কাঁটাপাহাড়ির এক তৃণমূলকর্মীর এমনটাই মনে হয়েছিল। বস্তা থেকে টুপি বের করতে গিয়ে তিনি দেখেন ঘাস-ফুল নয়, রয়েছে হাতের ছবি। অন্য পাশে সনিয়া ও রাহুলের উজ্জ্বল মুখ। তা দেখে যিনি সরঞ্জাম দিচ্ছিলেন, তৃণমূলের সেই ছাত্র নেতা সুশোভন মাইতিরও চক্ষু চড়কগাছ।
ঘটনাটি শুক্রবার দুপুরের। মেদিনীপুরে ফেডারেশন হলে তৃণমূলের অস্থায়ী নির্বাচনী অফিসে তখন জেলা সভাপতি দীনেন রায়, কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ থেকে শুরু করে গোপাল সাহা, স্বপন পাল, সঞ্জিত তোরই নেতা-কর্মীদের সরগরম ভিড়। সুশোভন বলে ওঠেন, “দীনেনদা, টুপিতে যে জোড়াফুল নেই। হাতের ছাপ। কী হবে?” আঁতকে ওঠেন দীনেনবাবু, “বলিস কী রে! টুপিতে হাতের ছাপ? দেখি একটা নিয়ে আয় তো।” প্রদ্যোৎবাবু বলেন: “হতেই পারে। ভুল করে একটা প্যাকেট ঢুকে গেছে।” স্বপন: “ভুলই তো। না হলে এতোগুলো প্যাকেটের মধ্যে মাত্র একটা প্যাকেটের টুপিতেই কেন হাতের ছাপ থাকবে?” গোপাল: “এগুলো ফেরত পাঠানোই ভাল। এখানে রেখে লাভ কী?” সঞ্জিত: “যা বলেছো!”
পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য তৃণমূল ভবন থেকে প্রতিটি জেলাতেই প্রচার সরঞ্জাম পৌঁছেছে। যেমন, পোস্টার-ফেস্টুন-পতাকা-টুপি প্রভৃতি। নির্বাচনের সময় এমনটা হয়েই থাকে। বিভিন্ন দলই জেলায় প্রচার সরঞ্জাম পাঠায়। তৃণমূলেরই এক সূত্রে খবর, কলকাতা থেকে সবমিলিয়ে ৪ লক্ষ পোস্টার, ছোট-বড় মিলিয়ে ১ লক্ষ পতাকা, ১০ হাজার টুপি মেদিনীপুরে পৌঁছয়। এগুলো রাখা হয় তৃণমূলের ওই অস্থায়ী অফিসের একটি ঘরেই। পরে ব্লক থেকে কর্মীরা এসে তা সংগ্রহ করে নিয়ে যান। তেমনটাই নিতে এসেছিলেন কাঁটাপাহাড়ির ওই তৃণমূল কর্মী।
পরে তৃণমূল নেতৃত্ব বোঝেন, একটা ভুল হয়েছে। তবে তা তাঁদের নয়। যে সংস্থা টুপি সরবরাহ করেছে, তাদের ভুল। বস্তায় ভরার সময় জোড়াফুলের ছাপ থাকা টুপির সঙ্গে অজান্তে হাতের ছাপওয়ালা এক প্যাকেট টুপি ঢুকে গিয়েছে। পরে ওই বস্তা তপসিয়ার তৃণমূল ভবনে যায়। সেখান থেকে মেদিনীপুরে আসে। তবে, এতে তৃণমূল নেতৃত্বের বিড়ম্বনা কাটছে না। হাতের ছাপ থাকা টুপিগুলোর কী হবে, সেটাই এখন প্রশ্ন। সোমবার দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎবাবু অবশ্য বলেন, “ওগুলো ফেরত পাঠানো হচ্ছে।” আর পুরো ঘটনাটা শুনে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মৃগেন মাইতি বলছিলেন, “তাই? এমনটা হয়েছে না কি? যাক, শুরুতেই ভুলটা ধরা পড়েছে!”
তৃণমূলের এক কর্মী অবশ্য বলছিলেন, “টুপিগুলো ফেরত পাঠিয়ে কী লাভ? তার চেয়ে বরং এখানেই থাকুক। যদি লোকসভা ভোটের সময় কাজে লাগে!” |
|
|
|
|
|