মদ-জুয়ার প্রতিবাদ করায় প্রহৃত যুবক
গ্রামের রাস্তার ধারে বাঁশের পাটাতনে প্রকাশ্যে চলে মদ ও জুয়ার আসর। রবিবার রাতে তারই প্রতিবাদ করতে গিয়ে মদের ঠেকের লোকজনের হাতে বেধড়ক মার খেলেন এক যুবক। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট শহর লাগোয়া বড়িষা গ্রামের ঘটনা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে শ্রীধর মাইতি নামে প্রহৃত যুবককেই তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। রাতভর তাঁকে লক-আপে আটকে রাখার পর অবশ্য সকালে ছেড়ে দেওয়া হয়। যদিও কোলাঘাট থানার ওসি বাসুকি বন্দ্যোপাধায় বলেন, “বড়িষা গ্রামে একটা সামান্য ঝামেলা হয়েছিল। এ নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ঝামেলা মিটিয়ে নিয়েছেন গ্রামের লোকেরা। কাউকে লক-আপে রাখাও হয়নি।”
মারধরের ঘটনায় জড়িতরা তৃণমূলের সমর্থক বলে অভিযোগ করেছেন শ্রীধরবাবু। স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বনাথ চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘শ্রীধরবাবুকে মারধরের ঘটনা সাজানো। এদিন রাতে ও আমাদের দলের পতাকা পোড়াতে গিয়েছিল। সেই সময় সামান্য ঝামেলা হয়েছিল বলে শুনেছি। এই ঘটনায় সিপিএমের মদত রয়েছে।”
সিপিএম নেতৃত্ব শ্রীধরবাবুকে দলের লোক বলে মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, অধিকাংশ সময় বাড়িতেই থাকেন না শ্রীধরবাবু। তৃণমূলকে সমর্থন করলেও সক্রিয় ভাবে রাজনীতি করেন না তিনি। সামাজিক সমস্যাকে অযথা রাজনৈতিক করছেন তৃণমূলের নেতারা।

শ্রীধর মাইতি।—নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোলাঘাট শহর থেকে এক কিলোমিটার দূরে বড়িষা গ্রামের বাসিন্দা শ্রীধর মাইতি পেশায় ট্রাক চালক। তাঁর ছেলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। শ্রীধরবাবুর বাড়িতে তাঁর এক আত্মীয় টিউশন করেন। সেই জন্য প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় গ্রামের জনা পনেরো স্কুল ছাত্র-ছাত্রী আসেন বাড়িতে। শ্রীধরবাবুর অভিযোগ, ‘‘বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে রাস্তার ধারে এক জায়গায় বাঁশের মাচায় নিয়মিত মদ ও জুয়ার আসর বসে। মাচায় বসে থাকা লোকজন টিউশনে আসা স্কুল ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে অশালীন মন্তব্য করে। রবিবার রাত ১২টার পরেও ওই মাচা থেকে হই-হট্টগোলের শব্দ শুনে প্রতিবাদ জানাতে যাই। তখন ওখানে থাকা ১০-১২ জন লোহার পাইপ, লাঠি নিয়ে এসে আমাকে মারধর করে।” লোহার পাইপের আঘাতে শ্রীধরবাবুর মাথা ফেটে যায়। শ্রীধরবাবুর স্ত্রী মনিকাদেবী ও বৌদি বীথিকাদেবীকেও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মনিকাদেবী বলেন, “স্থানীয় ১০-১২ জন মিলে মারধর করে। ঘটনার কিছু পরেই কোলাঘাট থানার পুলিশ বাড়ি এসে স্বামীকে আহত অবস্থায় তুলে নিয়ে গিয়ে যায়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করানোর পরে সারারাত লক-আপে রাখে। যারা মারধর করল, তারা কিন্তু ঘুরে বেড়াচ্ছে।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ পাড়ার কয়েকজন থানায় গিয়ে ছাড়িয়ে আনেন শ্রীধরবাবুকে। কিন্তু পাড়ার লোকেরা কেউ ঘটনার প্রতিবাদ করল না কেন? স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ভোটের মুখে ওই মাচায় তৃণমূলের পতাকা লাগানো হয়েছে। ওই ঠেকের লোকজন এ বার ভোটে তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। তাই ওদের ঘাঁটিয়ে অযথা বিপদ ডেকে আনতে চান না কেউ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.