এক বছর আগে যে মঞ্চ থেকে দল ও দলনেত্রীকে আক্রমণ করে সাসপেন্ড হয়েছিলেন, সোমবার সেই মঞ্চ থেকেই ফের সরব হলেন তৃণমূল সাংসদ সোমেন
মিত্রের স্ত্রী বিধায়ক শিখা মিত্র। পাশাপাশি, রাজনীতিতে সবই সম্ভব বলে তাঁর কংগ্রেসে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা আরও উস্কে দিলেন সোমেনবাবু নিজে।
সোমবার কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনে বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে শিখাদেবী অভিযোগ করেন, “এ রাজ্যে খালি বাক্যস্রোত চলছে। কোনও কাজ হচ্ছে না। নোংরামি ছাড়া আর কিছু দেখতে পাচ্ছি না। খালি ভাষণ দিলে কিছু হয় না। কাজ দরকার কাজ।” অন্য দিকে কামদুনি প্রসঙ্গে কার্যত মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে তিনি বলেন, “কামদুনির মহিলাদের হ্যাটস অফ! এ ভাবেই আপনারা বারবার প্রতিবাদ করুন।” |
বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম-মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে (বাঁ দিক থেকে) সোমেন মিত্র,
প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং শিখা মিত্র। সোমবার বিধান ভবনে। —নিজস্ব চিত্র |
শিখাদেবী যখন ফের দল ও নেত্রীর প্রতি খড়্গহস্ত, তখন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন সোমেনবাবু নিজেও। এ দিনের অনুষ্ঠানের পরে তাঁর কংগ্রেসে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘রাজনীতিতে অসম্ভব কিছু হয় না। কোনও দিন কংগ্রেসে ফিরতেই পারি!” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “স্ত্রী এক দিন বললেন, মমতা ওঁকে বলেছে আমি নাকি কয়েক জন বিধায়ককে ভাঙিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছি। স্ত্রীকে বলেছি মমতাকে ফোন করে বলো, আমি কখনও পিছন থেকে মানুষকে ছুরি মারব না। যেতে হলে মমতাকে বলেই চলে যাব।”
গত বার ১ জুলাই বিধান ভবন থেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করায় শিখাদেবীকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। যদিও দলের পক্ষ থেকে সেই মর্মে কোনও চিঠি তিনি পাননি বলে শিখাদেবীর দাবি। তিনি বলেন, “আমি তো চাইছি দল ব্যবস্থা নিক। নিচ্ছে না কেন!” এ বিষয়টি নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় এবং দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর দল স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে তাঁর অবস্থান কী হবে, সে প্রশ্নে সোমেনবাবুর জবাব, “আগে তো দল ব্যবস্থা নিক। তার পর ভেবে দেখব, দল রাখব না স্ত্রী রাখব!”
‘বিধান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’ আয়োজিত এ দিনের সভায় তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান ইদ্রিশ আলি ও প্রাক্তন বিধায়ক তারক বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন। তাঁদের সামনেই প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “এখনকার মুখ্যমন্ত্রী তো কোনও সমালোচনাই শুনতে চান না। তাঁর সম্পর্কে কেউ কিছু বললেই তাঁদের সিপিএম বা মাওবাদী বলেন। গণতন্ত্রে এমনটা হয় নাকি!”
একই মঞ্চ থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের মন্তব্য, “আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ কি কামদুনি? বাংলায় যে সঙ্কট ঘনীভূত, তার থেকে কী ভাবে মুক্তি পাব? এই প্রশ্নটা ঘুরে ফিরে এলে অন্যায়?” |