জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল
গরমে হাঁসফাঁস রোগীরা, পাখার আরামে চিকিৎসকেরা
লোডশেডিং চলছে, গরমে বিছানায় এপাশ-ওপাশ করছেন রোগীরা। কোনও রোগীর মাথার কাছে বসে থাকা পরিজনেরা হাতপাখা দিয়ে হাওয়া করছেন। তাঁরাও ঘেমে অস্থির। পাশেই, চিকিৎসা কর্মীদের বসার জায়গা, সেখানে এসে বসেন চিকিৎসকরাও। তার উপরে বনবন করে পাখা ঘুরছে। ওয়ার্ডের একপাশে চিকিৎসা কর্মীদের বিশ্রাম ঘর, সেখান থেকেও ভেসে আসছে সিলিং পাখা ঘোরার শব্দ।
দিন-রাত যে কোনও সময়ে লোডশেডিং চলাকালীন এমনই বিপরীত দৃশ্য দেখা যায় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে। হাসপাতালের জেনারেটরের সংযোগে ওয়ার্ডের ভেতরে কিছু আলো জ্বললেও, রোগী-শয্যার উপরে থাকা সিলিং পাখায় জেনারেটরের সংযোগ নেই। লোডশেডিং-এ হাসপাতালে শুধুমাত্র রোগীদেরই গরমে কষ্ট পেতে হয় বলে অভিযোগ। ওয়ার্ড মাস্টার অফিস থেকে শুরু করে গরমে চিকিৎসক-কর্মীদের বসার বা বিশ্রামের সব ঘরেই পাখা ঘোরার জন্য জেনারেটরের সংযোগ রয়েছে। এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিরা। হাসপাতালে থাকা জেনারটের দিয়ে লোডশেডিঙের সময়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের প্রশাসনিক ভবনের বেশ কয়েকজন পদস্থ আধিকারিকদের ঘরে ২-৩টে করে পাখার সংযোগ রয়েছে।
হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, “বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। প্রয়োজনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ক্ষুব্ধ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিও। সমাজকর্মী সুব্রত সরকারের কথায়, “এতো রীতিমতো সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থা। বিছানার উপরে থাকা সিলিং পাখা বন্ধ আর পাশের অন্য পাখার নিচে বসে চিকিৎসা কর্মী হাওয়া খাচ্ছেন, এই দৃশ্য দেখেই তো রোগী মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন।”
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, আইটিইউ, এসএনসিইউ, ব্লাড ব্যাঙ্ক এবং ওটিতে লোডশেডিঙের সময়েও বাতানুকুল যন্ত্র চালাতে হয়। প্রসূতি বিভাগে বেশ কয়েকটি স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রও সর্বক্ষণ চালিয়ে রাখতে হয়। সে কারণে জেনারেটরের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে বলে হাসপাতালের রোগাদের শয্যার ওপরে সিলিং ফ্যানগুলির জেনারেটর সংযোগ দেওয়া হয়নি। যদিও সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দুটি অত্যাধুনিক শব্দহীন জেনারেটর দেওয়া হয়।
সুপার ব্রজেশ্বর মজুমদার বলেন, “এত দিন পুরোনো একটি জেনারেটর ব্যবহার হতো, যার ক্ষমতা বেশি না থাকায় ওই ব্যবস্থা চলে এসেছে। পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলে দেখা যাক কী ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যুক্তি, ঠান্ডা মাথায়, সুস্থভাবে যাতে রোগীদের চিকিৎসা এবং সাহায্য করা যায়, সে কারণেই চিকিৎসা কর্মীদের বসার এবং বিশ্রাম ঘরের পাখাগুলিকে জেনারেটর সংযোগ দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “গরমে রোগীদের কষ্ট পাওয়ার আশঙ্কা বেশি, তাদের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতিও ঘটতে পারে। রোগীদের সিলিং পাখায় সংযোগ দেওয়ার ক্ষমতা না থাকলে ওয়ার্ডের সব পাখাতেই সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হোক।”
হাসপাতালের ১৩টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়পড়তা এগারোশো রোগী থাকেন। লোডশেডিং-এর পুরুষদের মেডিক্যাল বিভাগের সাধারণ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেল বিছানায় তো বটেই, মেঝেতেও ঠাসাঠাসি করে রোগী শুয়ে রয়েছেন। ঘরে ১৬টি পাখা লাগানো থাকলে একটিও চলছে না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.