হুল দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে ভোটের প্রচার
ভোট বড় বালাই! নির্বাচনী বিধির জেরে তাই হুল দিবসের সরকারি অনুষ্ঠানে ব্রাত্য থাকলেন রাজনৈতিক নেতা-মন্ত্রীরা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাতে অবশ্য দমলেন না শাসকদলের মন্ত্রী কিংবা বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা। বেসরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন তো বটেই। সেই সুযোগে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারও করে নিলেন!
রবিবার সাঁওতাল বিদ্রোহ স্মরণে জঙ্গলমহল জুড়ে পালিত হয় ১৫৯তম হুল দিবস। ঐতিহাসিক এই দিনটিতে শাসক ইংরেজদের বিরুদ্ধে সিদো ও কানহুর নেতৃত্বে সার্বিক বিদ্রোহের (হুল) সূচনা করেছিলেন সাঁওতালেরা। এ দিন সকালে ঝাড়গ্রাম মহকুমার মূল অনুষ্ঠানটি হয় মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরে। অনুষ্ঠানে সাঁওতাল বিদ্রোহের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন মহকুমাশাসক বাসব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক কুশল চক্রবতী। সাঁওতালি প্রথায় (চুমারা) ‘শহিদ’দের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন আদিবাসী লোকরঞ্জন শাখার শিল্পীরা।
মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদার শ্রদ্ধা। জারালাটা গ্রামে দেবরাজ ঘোষের ছবি।
সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না পেলেও জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক বেসরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা। এ দিন দুপুরে ঝাড়গ্রামের কাশিয়া গ্রামের স্থানীয় এক আদিবাসী ক্লাবের উদ্যোগে হুল দিবসের মধ্যমণি ছিলেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে চিরাচরিত প্রথা মেনে তির, ধনুক ও টাঙি নিয়ে পদযাত্রা করেন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের আবালবৃদ্ধবনিতা। সিদো-কানহুর প্রতিকৃতিতে মালা দিয়ে সুকুমারবাবু বলেন, “বাম জমানায় হুল দিবসকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হয়নি। আমরা ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সাল থেকে হুল দিবস মর্যাদার সঙ্গে পালন করছি।” মন্ত্রীর দাবি, “বর্তমান রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আদিবাসী ও মূলবাসীদের মানোন্নয়ন ঘটানোর লক্ষ্যে জঙ্গলমহল জুড়ে উন্নয়নযজ্ঞ চলছে। তাই আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে উন্নয়নের স্বার্থেই বিরোধীদের দখলে থাকা পঞ্চায়েতগুলিতে ‘পরিবর্তন’ ঘটাতে হবে।” পরে জারালাটা গ্রামে তিনি সিদো ও কানহুর একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন।
হুল দিবসের অনুষ্ঠান ঘাটালে।
এ দিন বিনপুরের রথবেড়া-বিরিডাঙা, মাগুরা, নামোশোল, কাঁকো ও মোহনপুর গ্রামে হুল দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেন ঝাড়খণ্ড পার্টির (নরেন) নেত্রী চুনিবালা হাঁসদাও। মোহনপুর গ্রামে এক অনুষ্ঠানে চুনিবালা বলেন, “রাজ্যের ক্ষমতায় এসে তৃণমূল মাত্র দু’বছরেই সন্ত্রাস ও দলতন্ত্রের নিরিখে সিপিএমকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য আজকের পবিত্র দিনে আমাদের শপথ নিতে হবে।” বিনপুরের মেদিনী গ্রামে সিদো-কানহুর একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন চুনিবালাদেবী। জামবনির বনসরো এলাকায় হুল দিবসেরই এক অনুষ্ঠানে ছিলেন বিনপুরের সিপিএম বিধায়ক দিবাকর হাঁসদা। সভায় দিবাকরবাবুর টিপ্পনি, “রাজ্যের বর্তমান শাসকদের হাতে আদিবাসীরা বিপন্ন। ওরা ক্ষমতায় আসার পর সরকারি ভাবে সাঁওতালি সাহিত্যিক সাধু রামচাঁদ মুর্মুর জন্মজয়ন্তী পালন বন্ধ করে দিয়েছে। উন্নয়নের ঘোষণা ও বাস্তবের মধ্যের ফারাকটাও মানুষ ধরে ফেলেছেন।”
এ দিন সকালে ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ে আলোচনায় যোগ দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তথা বিশিষ্ট গবেষক সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শিক্ষাব্রতী নৃপেন টুডু। এ দিনই বীর বীরসা সিধু-কানহু-জুমিদ গাঁওতা-র উদ্যোগে এগরা শহরের সাঁইতানি কৃষিবন্ধু মাঠে একগুচ্ছ অনুষ্ঠান হয়।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.