|
|
|
|
জল বাড়ছে নদীতে, ভাঙছে বাঁধ |
জলের তলায় আমনের বীজতলা |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
টানা বৃষ্টিতে জল জমতে শুরু করল মাঠে-ঘাটে। শনিবার বিকেল থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রায় সর্বত্র বৃষ্টি শুরু হয়। সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়ে। রবিবার দুপুর গড়ালেও বৃষ্টি থামেনি। ছুটির দিন বলে এই দুর্যোগে লোকজনও বাড়ি থেকে বিশেষ বেরোননি। জেলা সদর তমলুক-সহ সর্বত্রই রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা। দোকানপাট বন্ধ।
এ দিকে প্রবল বৃষ্টিতে জল জমে আমন ধানের বীজতলা ডুবে গিয়েছে অনেক জায়গায়। বিশেষ করে কোলাঘাট ব্লকের সিদ্ধা-১, সাগরবাড়, বৃন্দাবনচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য এই সব এলাকায় প্রধান নিকাশি খালের উপর ক্রশ বাঁধ রয়েছে। ফলে বর্ষার জল বের হতে না পারায় বিস্তীর্ণ এলাকায় আমন ধানের বীজতলা ডুবে রয়েছে। স্থানীয় কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক নারায়ণ নায়েক জানান, সেচ দফতর ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানানোর পর রবিবার দুপুরে টোপা খালের উপর থাকা ক্রশ বাঁধ সরানো হয়। তবে, নিচু জমির বীজতলা এখনও জলের তলায়।
জেলা সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রবল বৃষ্টির জেরে ও জোয়ারের স্রোতে এ দিন সকালে কোলাঘাট শহরের জৈন মন্দিরের কাছে রূপনারায়ণের বোল্ডার বাঁধের একাংশ ধসে গিয়েছে। কোলাঘাট শহর লাগোয়া দেনান স্লুইস গেটের কাছে দেনান-দেহাটি খালের বাঁধে ধস নেমেছে। এ ছাড়াও জেলার কাঁসাই, কেলেঘাই, চণ্ডীয়া প্রভৃতি নদীতে জলের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে। তবে জল বিপদসীমার নীচেই রয়েছে। রবিবার বিকেলেও পুরুলিয়া-বাঁকুড়ায় বৃষ্টিপাত চলায় এই সব নদীতে জলসীমা আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। জেলা সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পাঁশকুড়ায় ১২১ মিলিমিটার, তমলুকে ৫৬ মিলিমিটার, ময়নায় ৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। দুপুরের পর বৃষ্টিপাত কিছুটা কমলেও রাতে ফের বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা থাকায় জেলায় সেচ দফতরের আধিকারিক ও কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টিতে আর জোয়ারে খেজুরি ২ ব্লকের সমুদ্র উপকূলবর্তী নিচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ব্লক অফিস সূত্রে খবর, নিচকশবা গ্রাম পঞ্চায়েতে বেশ কিছু নদীবাধেঁর ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়াও নানকার, গোবিন্দপুর, ওয়াশিলচক, পাচুড়িয়া ইত্যাদি উপকূলবর্তী নিচু এলাকাগুলিতে জল দাঁড়িয়ে যাওযায় ৩০ থেকে ৪০টি মাটির বাড়ি ধসে গিয়েছে। নদীর ধারে মৎস্যজীবীদের মাটির বাড়িগুলির অধিকাংশই জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। এ ছাড়াও খেজুরি ১ ব্লকের বীরবন্দর অঞ্চলের আলাইচক গ্রামে নিকাশিখালের বাঁধ ভেঙে বেশ কিছু বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গিয়েছে পুকুর। জলের তলায় চলে গিয়েছে কয়েকশো বিঘার ধানের চারা। এ ছাড়াও জলমগ্ন হয়েছে খেজুরি ১ ও ২ ব্লক ছাড়াও কাঁথি ৩, দেশপ্রাণ ও রামনগর ১ ও ২ ব্লকের নিচু এলাকাগুলি।
দিঘা মোহনা থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া হাজার খানেক ট্রলারের অর্ধেকেরও বেশি ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছেন দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস। সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে সৈকতে শুঁটকিমাছ ব্যবসায়ীদের হোগলাঘর ভেসে গিয়েছে। |
|
|
|
|
|