পরের বিশ্বকাপে ইতালিও ভয় ধরানো শক্তি
ইতালি-২ (৩) (আস্তোরি, দিয়ামান্তি)
উরুগুয়ে-২ (২) (কাভানি-২)
নফেড কাপ মহাফাইনালের আগে রবিবার রাতে তৃতীয় স্থানের ম্যাচে এমন দুটো দেশের খেলা দেখতে বসেছিলাম যারা প্রথম চারটে বিশ্বকাপ দু’বার করে নিজেদের ঘরে তুলেছিল। ইতালি (১৯৩৪, ১৯৩৮) এবং উরুগুয়ে (১৯৩০, ১৯৫০)।
ফোরলানের দেশ এই ব্রাজিল থেকেই ৬৩ বছর আগে শেষ বার বিশ্বকাপ নিয়ে গিয়েছিল। যা দেখে ছোট্ট পেলে চোখের জল ফেলতে ফেলতে বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিল, এক দিন সে বিশ্বকাপ নিয়ে আসবে। রবিবার সেই পেলের দেশ থেকেই চোখের জলে মাঠ ছাড়লেন উরুগুয়ের দিয়েগো ফোরলান। ১২০ মিনিট ২-২ থাকার পর টাইব্রেকারে প্রথম শট মারতে এসেই অঘটন ঘটালেন তিনি। সেমিফাইনালে ব্রাজিলের পর এ দিনও স্পট কিক থেকে গোল করতে পারল না উরুগুয়ের অন্যতম সেরা বল প্লেয়ার। খেলা দেখে মনে হচ্ছিল জোড়া গোল করা কাভানি ছাড়া জেতার তাগিদটাই ড্রেসিংরুমে ফেলে এসেছে অস্কার তাবারেজের বাকি ছেলেরা।

ইতালির জয়ের নায়ক বুঁফো।
উলটো দিকে ঠিক সেই তাগিদটাকেই সম্বল করে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফের আরও একটা ১২০ মিনিটের ম্যাচ খেলে আন্তঃ মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট থেকে ব্রোঞ্জ পদক গলায় ঝুলিয়ে ব্রাজিল ছাড়ল বুঁফোরা। টাইব্রেকারে ফোরলান-সহ তিনটে স্পট কিক আটকে ইতালি গোলকিপার প্রায়শ্চিত্ত করল সেমিফাইনালের।
এক বছর পরে এই ব্রাজিলেই বিশ্বকাপ ফুটবলে উরুগুয়ে থাকবে কি না তা নিয়ে এখনও কোয়ালিফাইং রাউেন্ডে প্রশ্নচিহ্ন রয়েছে। ব্রাজিল যেহেতু আয়োজক দেশ তাই কনমেবল গ্রুপ (লাতিন আমেরিকান) থেকে সুযোগ পাবে আরও চার দল। কিন্তু ১১ ম্যাচের পর সুয়ারেজরা রয়েছে সপ্তম স্থানে। সিজার প্রান্দেলির দলের অবশ্য বিশ্বকাপে জায়গা পাওয়া নিয়ে কোনও যদি, কিন্তু নেই। বিশ্বকাপে ওরা খেলবেই। কনফেডারেশনে ফাইনাল না খেললেও এক বছর পরে ব্রাজিলে কিন্তু পির্লোদের এতটুকু হেলাফেলা করা যাবে না। কাপ জেতার অন্যতম ফেভারিটও আজুরিরা।
মনে রাখুন বালোতেলিকে ছাড়াই সেমিফাইনালে ইতালির মরিয়া লড়াইটা। বিশ্বকাপ ও ইউরো কাপ চ্যাম্পিয়নদের আটকে রেখে দিয়েছিল পাক্কা ১২০ মিনিট। ম্যাচে পাওয়া সুযোগ ঠিকঠাক কাজে লাগালে ম্যাচটা জিতেও যেতে পারত বুঁফোরা। এ দিন আবার উরুগুয়েকে হারাল প্রথম দলের নিয়মিত পাঁচজনকে বাইরে রেখে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে মন্তোলিভো লাল কার্ড দেখার পর দশ জনে খেলে।

ফাইনালের জন্য তৈরি মারাকানা।
এ বার আসি কেন ইতালিকে বিশ্বকাপে অন্যতম ফেভারিট ধরছি। প্রান্দেলির এই দলটায় চোখ বুজে এমন চার-পাঁচ জনের নাম বলে দেওয়া যায়, যারা নিজের দিনে অন্যকে রাজত্ব করার জায়গা দেবে না। বালোতেলি, পির্লো, ডি রোসি, বুঁফো, চিয়ালিনি। আর কে না জানে এ রকম অভিজ্ঞতা যাদের দলে তাঁরা সব সময়ই বিশ্বকাপ শুরু করে অন্য দলগুলোর চেয়ে একটু এগিয়ে থেকেই। বালোতেলি নিজের দিনে একাই একশো। আর পির্লো মাঝমাঠ থেকে খেলাটা কী ভাবে রিমোট কন্ট্রোলের মতো নিয়ন্ত্রণ করে তার ঝলক কনফেড কাপেই দেখা গিয়েছে। আরও বড় কথা প্রান্দেলি এই ইতালির খেলায় একটা বড়সড় বিবর্তন এনে দিয়েছেন। এই ইতালি আক্রমণ এবং রক্ষণ দুটোতেই সমান গতিতে যায়। সমান গতিতে নামে।

চলছে সরকার বিরোধী আন্দোলন।
অভিজ্ঞদের সঙ্গে দুরন্ত তারুণ্যও আজুরিদের সম্পদ। লোরেঞ্জো ইনসাইন, মার্কো ভেরাত্তি, এল শারউইরা ইউরোপের ফুটবলে এক একটা নতুন তারা। যারা সিজার প্রান্দেলির ৪-৪-২ বা ৪-৩-৩ বা ৩-৪-২-১ কিংবা ৪-৩-২-১ সব ছকেই অভ্যস্ত। যা দেখা গেল ব্রাজিলেই।
জানি, অনেকে বলবেন গ্রুপ লিগে যারা জাপানের কাছে তিন গোল হজম করে, ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ১-১ করেও ২-৪ হারে, এ দিনও দু’বার এগিয়ে গিয়ে ২-২ করে তাঁদের আবার বিশ্বকাপে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কী? মনে রাখবেন ইতালির ফুটবল ঐতিহ্যের কথা। তাই ইতালিকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সমীহ করতে হবেই।

দৌড়ে নেইমার, পওলিনহো
কনফেডারেশন কাপে সোনার বল দখলের লড়াইয়ে রয়েছেন নেইমার। তবে ব্রাজিলের তারকা ফুটবলারকে এ বারের কনফেডের ‘মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার’-এর পুরস্কার ছিনিয়ে নিতে হলে লড়াইয়ে হারাতে হবে আন্দ্রে পির্লো (ইতালি), আন্দ্রে ইনিয়েস্তা (স্পেন), সুয়ারেজ (উরুগুয়ে), পওলিনহো (ব্রাজিল) আর সের্জিও র্যামোস (স্পেন)-কে। ফিফার টেকনিক্যাল স্টাডি গ্রুপ কনফেডের সোনার বল দখলের লড়াইয়ে থাকা এই ছয় ফুটবলারের নাম ঘোষণা করেছে শনিবার। চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করা হবে ফাইনালের পর। এর আগে মোট ছ’বারের মধ্যে চার বারই ব্রাজিলের ফুটবলাররা কনফেডের সোনার বল জিতেছেন। কাকা (২০০৯), আদ্রিয়ানো (২০০৫), রোনাল্ডিনহো (১৯৯৯) আর ডেনিলসন (১৯৯৭)-এর মতো নেইমার বা পওলিনহো এ বার সেই দাপট দেখাতে পারবেন তো?

ছবি: এএফপি




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.