|
|
|
|
প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করল পরিচালন সমিতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দাঁতন |
আর্থিক তছরুপ, বেআইনি কার্যকলাপ ও শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্বব্যবহার করার অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করল পরিচালন সমিতি। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন ১ ব্লকের বাইপাটনা বিদ্যাসাগর হাইস্কুলে। প্রধান শিক্ষক হরিশঙ্কর খাটুয়া অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে আনা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “পদ্ধতি না মেনে, অন্যায় ভাবে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে পর্ষদে ও আদালতে আবেদন জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সঙ্ঘমিত্র মাকুড় অবশ্য বলেন, “পরিচালন সমিতি প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করতেই পারে। তারপর মধ্যশিক্ষা পর্ষদই আইনগত ব্যবস্থা নেবে।”
পরিচালন সমিতি ও শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, ২০০৪ সালে হরিশঙ্করবাবু প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রদীপ মাইতি বলেন, “স্কুলের বিভিন্ন খাতের টাকার হিসেব না দেওয়া, স্কুলের উন্নয়নের টাকা তুলে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা, খরচের ভুয়ো বিল দেখানো, স্কুলে নিয়মিত না এসেও হাজিরা খাতায় সই করা-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।” অভিযোগ পেয়ে স্কুলে একাধিকবার তদন্তে আসেন বিডিও। তদন্ত রিপোর্টে অভিযোগের সত্যতা থাকায় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিডিও চিঠি করেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে। তারপর তদন্ত করা হয় সর্বশিক্ষা ও বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর থেকেও। এ দিকে, বিনা নোটিসে চলতি বছরের ৯ মে থেকে স্কুলে আসা বন্ধ করে দেন প্রধানশিক্ষক। ১৫ মে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পরিচালন সমিতির সম্পাদককে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন। ওই নির্দেশের পর সমিতির সম্পাদক প্রধান শিক্ষককে দু’বার শো-কজ করলেও তিনি সে ব্যাপারে গুরুত্বই দেননি। ৪ জুন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রধান শিক্ষকের বাড়ি ও স্কুলের ঠিকানায় চিঠি পাঠিয়ে জানতে চান স্কুলে দীর্ঘ দিন অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তিনি কী ভাবে স্কুলের প্যাড, সিল ও মেমো নম্বর ব্যবহার করছেন। অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক এরও সদুত্তর দেননি। সমিতির তরফে এরপর স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক ও এলাকার শিক্ষানুরাগীদের নিয়ে একটি সভা করে পরামর্শ চাওয়া হয়, এ ক্ষেত্রে সমিতির করণীয় কী? সমিতির দাবি, ৮ জুনের ওই সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী ২২ জুন প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত করার চিঠি পাঠায় তারা।
প্রধান শিক্ষক হরিশঙ্কর খাটুয়ার অবশ্য দাবি, “কয়েক জন শিক্ষক অন্যায় সুযোগ চেয়েও তা পাননি। তাঁদের আমার উপর ক্ষোভ ছিল। সম্পাদক আমার প্রতি ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ওই শিক্ষকদের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিপাকে ফেলেছেন। অসুস্থতার কারণে মে মাসে আমি অনুপস্থিত ছিলাম। কিন্তু, পরে স্কুলে গেলেও আমাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।”
পরিচালন সমিতির সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের বিরোধে সমিতির পাশেই দাঁড়িয়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বিক্রম প্রধান ও সিপিএমের দাঁতন জোনাল কমিটির সম্পাদক অনিল পট্টনায়কদের কথায়, “ওই শিক্ষকের আচরণ সমর্থনযোগ্য নয়। ওঁর বিরুদ্ধে অনেক আগেই আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।”
|
|
|
|
|
|