ভোটের দিন কবে, সংশয়ে সব পক্ষ
মেয়াদ শেষে পুরসভার ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা
ঞ্চায়েতের পর এ বার পুরভোটের আকাশেও অনিশ্চয়তার মেঘ। ২০০৮ সালের ২৯ জুন রাজ্যের অন্য ১২টি পুরসভার সঙ্গে মেদিনীপুরে নির্বাচন হয়েছিল। পুরবোর্ড গঠিত হয় ১৮ জুলাই। সাধারণত, পুরনো বোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর আগেই নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু, এ বার তা হচ্ছে না। সেপ্টেম্বরের আগে নির্বাচন হওয়া অসম্ভব। ফলে, ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে শহরের উন্নয়ন-প্রক্রিয়া কী ভাবে এগোবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। প্রাক্তন পুরপ্রধান নাজিম আহমেদ বলেন, “সরকার নির্বাচন করতে ভয় পাচ্ছে। নির্বাচন হলে তৃণমূল কোনও ভাবেই বোর্ড ধরে রাখতে পারবে না। কারণ, মানুষ ওদের সঙ্গে নেই।” তাঁর আশঙ্কা, “সময়ে নির্বাচন না হওয়ায় পুরসভায় নানা জটিলতা দেখা দেবে। শহরবাসী সমস্যায় পড়বেন।” প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা সিপিএমের শহর জোনাল সম্পাদক কীর্তি দে বক্সীরও বক্তব্য, “মানুষ কত কাজে পুরসভায় আসেন। বোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর পর তাঁদের নানা সমস্যায় পড়তে হবে।”
মেদিনীপুরের পুরভবন। —ফাইল চিত্র।
সময়ে নির্বাচন না হওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকেই দুষছে কংগ্রেস। প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা দলের শহর সভাপতি সৌমেন খান বলেন, “কাউন্সিলররা এলাকায় থাকেন। মানুষ নানা কাজ নিয়ে তাঁদের কাছে যান। বোর্ডের মেয়াদ ফুরোলে সেই সব কাজ করবে কে? সব সময় কি আর পুরসভায় আসা সম্ভব? গরিব মানুষই বেশি সমস্যায় পড়বেন। তাঁদের পেনশন-ভাতা পেতে সমস্যা হবে।”
পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরনোর আগে নির্বাচন না হলে সমস্যা যে হবে, তা মানছে তৃণমূলও। দলের শহর সভাপতি সুকুমার পড়্যা বলেন, “শহরবাসীর পুর-পরিষেবা প্রয়োজন, এ নিয়ে দ্বিমত নেই। সরকার নিশ্চয়ই মানুষের কথা ভেবে ঠিক সময়ে ঠিক পদক্ষেপ করবে। আমরাও মানুষের সুবিধে-অসুবিধের দিকে নজর রাখব।” তাঁর মতে, “পুরবোর্ডের কী হবে, তা ভাবার সময় আসেনি। যদি প্রশাসক বসে, তাহলে এই প্রথম প্রশাসক বসবে না। আগেও এমন হয়েছে।”
মেয়াদ ফুরনোর পর পুরবোর্ডের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি। পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, “মেয়াদ শেষে পুরসভা কী ভাবে চলবে, তা স্পষ্ট নয়। কারণ, এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি নির্দেশ আসেনি।” তাঁর কাছেও কোনও নির্দেশ এসে পৌঁছয়নি বলে জানিয়েছেন মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত। বিভিন্ন মহলের ধারণা, ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে মহকুমাশাসক (সদর) কিংবা তাঁর কোনও প্রতিনিধি পুরসভার কাজকর্ম দেখভাল করবেন। চেকে সই করার ক্ষমতা দেওয়া হবে ওই আধিকারিককে। যাতে উন্নয়ন-প্রক্রিয়া ব্যাহত না হয়।
২০০৮ সালের ৩০ নভেম্বর ঝাড়গ্রাম পুরসভা নির্বাচন হয়েছিল। সময়ে ভোট না হলে ঝাড়গ্রামেও এই পরিস্থিতি দেখা দেবে। নিয়মানুযায়ী, মেয়াদ ফুরনোর পর আর এক মুহূর্তও পুরসভার কাজকর্মের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকতে পারবেন না বিদায়ী বোর্ডের সদস্যরা। তাঁদের আর কোনও সার্টিফিকেট সই করারও ক্ষমতা থাকবে না। পুর-নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি কবে জারি হবে, কবে নির্বাচন হবে, কবেই বা নতুন পুরবোর্ড গঠন হবে, এ সব প্রশ্নেই একরাশ ধোঁয়াশা রয়েছে। পুরসভার এক আধিকারিক মানছেন, “সমস্যা বেশ জটিল। পুরনো বোর্ডের বিদায় এবং নতুন বোর্ডের ক্ষমতায় আসার মাঝের সময়ে শহরের উন্নয়ন-প্রক্রিয়া কী ভাবে অব্যাহত থাকবে, তা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌঁছনো প্রয়োজন। উন্নয়ন-প্রক্রিয়া যাতে ব্যাহত না হয়, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।”
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে পুরভোটের জট কাটাতে সরকার কী নির্দেশ দেয়, সেটাই দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.