টানা ১০ দিন ধরে পুরসভার সাফাই কর্মীরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ায় জঞ্জাল অপসারণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে মালদহের ইংরেজবাজার পুর-এলাকায়। মজুরি দাবিতে ইংরেজবাজার পুরসভার প্রায় বারোশো অস্থায়ী সাফাই কর্মী কাজ বন্ধ করে দিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধিতে রাজি নন পুর তাঁরা। দু’পক্ষের অনড় মনোভাবের কারণে ২০ জুন থেকে শহরের জঞ্জাল সরানোর কাজ বন্ধ হওয়ায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
অস্থায়ী সাফাই কর্মীরা কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় শহর জঞ্জালে ভরে গিয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। শহরময় ছোট-মাঝারি জঞ্জালের স্তূপ জমে রয়েছে। পুর-ওয়ার্ডের অলিগলি থেকে শুরু করে শহরের প্রধান সড়কের পাশে, পুরবাজার জমে থাকা জঞ্জালের দুর্গন্ধে শহর জুড়ে দূষণ ছড়াতে শুরু করেছে। রাস্তায় জমে থাকা জঞ্জালের স্তূপের পাশ দিয়ে চলার সময়ে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে যাওয়ার দৃশ্যও চোখে পড়ছে। কয়েক দিন ধরে নাগাড়ে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে। বৃষ্টির জলে জঞ্জাল ছড়িয়ে পড়ছে। সাফাই বন্ধের জেরে ক্ষুদ্ধ বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এ বিষয়ে ইংরেজবাজার পুরসভা কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই। |
কর্মবিরতি ১০ দিনে পড়ল। পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা কাজে না নামায় যত্রতত্র
আবর্জনার স্তূপ ইংরেজরাজার শহরে। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের তরফে হুমকি দিয়ে জানানো হয়েছে, দৈনিক হাজিরা ৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২২০ টাকা না করা হলে তাঁরা কাজ শুরু করবেন না। প্রতিদিন ২১০ থেকে ২২০ মেট্রিক টন জঞ্জাল শহরে জমতে শুরু করেছে বলে পুর কর্তৃপক্ষ সূত্রেই জানা গিয়েছে। ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন “পুরসভার পক্ষ থেকে অস্থায়ী সাফাই কর্মীদের এখনই মজুরি বৃদ্ধি না করার কথা জানানো হয়েছে। সে কারণে ৮ ঘণ্টার পরিবর্তে দিনে তিন ঘন্টা করে কাজ করতে বলা হয়েছে সাফাই কর্মীদের। দীর্ঘদিন ধরে পুর এলাকায় কর-ফি বাড়ানো হয়নি। খুব শীঘ্রই পুর এলাকায় মূল্যায়ন করে নতুন করে কর-ফি বাড়িয়ে অস্থায়ীদের মজুরি বাড়ানো হবে। ওরা শুনছে না।” চেয়ারম্যানের পাল্টা হুমকি, “এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাইরে থেকে শ্রমিক এনে কাজ চালানো হবে।”
এ দিকে পুরসভার অস্থায়ী সাফাই কর্মী বীণা বাশফোঁড়, সুরেশ ডোমরা বলেন, “এই অল্প টাকায় সংসার চলে না। আমরা বেতন বৃদ্ধির দাবি করছি অথচ চেয়ারম্যান কাজের সময় কমিয়ে দয়ে বেতন বাড়াতে চাইছেন না। তিন ঘণ্টা কাজ করার পর কোথায় কী ভাবে কাজ করব? বাইরে থেকে সাফাইকর্মীর কাজ করতে শহরে ঢুকতে দেব না।”
বিরোধী দলনেতা শুভদীপ সান্যাল বলেন, “কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান নিজের লোকদের অস্থায়ী সাফাই কর্মী হিসাবে নিয়োগ করেছে। প্রয়োজনের তুলনায় ৪-৫ গুণ অস্থায়ী সাফাই কর্মী কাজ করছেন। আমরা মনে করি, আন্দোলনকারীদের কিছু বেতন বাড়িয়ে তাদের কাজ বন্ধের আন্দোলন থেকে সরিয়ে আনা উচিত। না হলে শহর নরকের চেহারা নেবে।” |