সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিল, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরিবর্তিত নির্ঘণ্ট নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে কাল, সোমবারই তারা চিঠি দেবে রাজ্য সরকারকে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে শনিবার এই কথা জানান। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারির পরে কমিশনও একটি বিজ্ঞপ্তি দেবে।” কমিশন সূত্রের খবর, সর্বোচ্চ আদালতের রায় ঘোষণার পর থেকে এ দিন পর্যন্ত তাদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের কোনও আলোচনা হয়নি।
কিন্তু রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করতে যদি দেরী করে? মীরাদেবী সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেন, “আশা করি রাজ্য সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। কারণ, প্রথম দফার ভোট ১১ জুলাই হওয়ায় হাতে আর বেশি সময় নেই। সরকার বিজ্ঞপ্তি জারির পরে জেলাশাসকদের কাছে কিছু নির্দেশ পাঠাতে হবে কমিশনকে।” তবে ভোটের গণনা কবে হবে, এ দিন তা জানাতে পারেননি কমিশনার। যদিও কমিশন সূত্রের খবর, শেষ দফার ভোট হবে ২৫ জুলাই। তাই ২৮ বা ২৯ জুলাই ভোট গণনা হতে পারে।
জুলাই মাসে বিভিন্ন জেলায় বর্ষা হবে ধরে নিয়ে কিছু বিশেষ এলাকায় নৌকা, স্পিডবোট রাখার জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দেবে কমিশন। সেই সঙ্গে বর্ষার কথা মাথায় রেখে কমিশন ১৭টি জেলার জেলাশাসকদের প্রয়োজনীয় বিশেষ ব্যবস্থা রাখারও নির্দেশ দেবে। কমিশনের এক মুখপাত্র জানান, সাধারণ ভাবে নির্বাচনের আগের দিন ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটকর্মীদের পাঠানো হয়। কিন্তু বর্ষার কথা মাথায় রেখে রাজ্যের বেশ কিছু এলাকায় ভোটের দু’দিন আগে ভোটকর্মীদের পাঠানোর জন্য ব্যবস্থা করতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
পঞ্চায়েতে কোন দফার ভোটে কত বাহিনী থাকবে, তা ঠিক করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বাহিনী মোতায়েন করার দায়িত্ব কমিশন না রাজ্য সরকারের? নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডে এই প্রশ্নের জবাবে বলেন, “কমিশন এবং রাজ্য যৌথ ভাবেই সেই সিদ্ধান্ত নেবে। এ ব্যাপারে যেমন কমিশনেরও কিছু পরামর্শ থাকবে, তেমনই রাজ্য সরকারেরও কিছু মতামত থাকবে। দুই তরফের আলোচনা ভিত্তিতেই বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হবে।”
কমিশন ঠিক করেছে, সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন করার জন্য একটি সর্বদল বৈঠক করবে। এ ছাড়া ভোটের কাজে যুক্ত পর্যবেক্ষকদের নিয়েও একটি বৈঠক করবে তারা। প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী সোমবার রাজ্য সরকারকে চিঠি দেওয়া ছাড়াও ১৭টি জেলায় নিযুক্ত জেলা পর্যবেক্ষকদের বৈঠকে ডাকবে কমিশন। পরের দিন, অর্থাৎ মঙ্গলবার সকালে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা)-এর সঙ্গে বৈঠক করবে কমিশন। ওই দিনই বিকালে সর্বদলীয় বৈঠক করা হবে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার যথাক্রমে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের নিয়ে বৈঠক করবেন নির্বাচন কমিশনার।
ভোটের নির্ঘণ্ট বদল হলেও ইতিমধ্যে নির্বাচন বিধি চালু হয়ে যাওয়ায় সরকারি জায়গায় রাজনৈতিক প্রচারে কোনও দেওয়াল লেখা বা নেতা-নেত্রীর ছবি লাগানো যাবে না বলে ফের প্রার্থীদের সতর্ক করে দিয়েছে কমিশন।
|