এবার বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের মামলায় জড়ালেন ধৃত সিপিএমের জেলা নেতা অচিন্ত্য চক্রবর্তী। শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুরে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে ধৃত পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল বসাক, প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলার বলরাম ঘোষ এবং জেলা কমিটির সদস্য অচিন্ত্য চক্রবর্তীকে হাজির করায়। পুলিশ আদালতের নির্দেশে তারা ৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এ দিন সকালে ধৃত সিপিএম নেতা অচিন্ত্য চক্রবর্তীকে জেরা করে গঙ্গারামপুরের সর্বমঙ্গলা এলাকায় সিপিএমের অঞ্চল পার্টি অফিস থেকে একটি পাইপগান ও একটি গুলি উদ্ধার করে। তাঁর বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র লুকিয়ে রাখার অভিযোগে একটি মামলা রুজু করে আদালতে জানানো হয়।”
এ দিন বিকেলে মামলার শুনানির পরে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশিস চৌধুরী ধৃত তিন সিপিএম নেতার জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। সরকারি আইনজীবী জনার্দন প্রসাদ সিংহ বলেন, “আগামী ১২ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন বিচারক।”
গত ২৪ জুন ধৃত ৩ সিপিএম নেতাকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নেওয়ার পরে জেলা সিপিএমের তরফে আগ্নেয়াস্ত্র মামলায় তাদের ফাঁসানোর আশঙ্কা করা হয়েছিল। গত ৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের পর এদিন হরিরামপুর থানা থেকে দুপুরে ওই তিন নেতাকে মহকুমা আদালতে তোলা হয়। জেলা সিপিএম নেত্রী মিনতি ঘোষ অভিযোগ করেন, “আমাদের আশঙ্কাই সত্যি হল। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে তৃণমূলের নির্দেশে পুলিশ নেতাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “পুলিশকে প্রভাবিত করার অভিযোগ ঠিক নয়। আইন আইনের পথেই চলছে।”
গত বছর গঙ্গারামপুরের দমদমায় সমবায়ের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের হামলার প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে সিপিএম অবরোধ তুলতে পুলিশ লাঠি চালায়। ঘটনার জেরে পুলিশের উপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের মতো একাধিক ফৌজদারি মামলায় সিপিএমের জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরী ও প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাস-এর নাম জড়িয়ে যায়। গত ২১ জুন গঙ্গারামপুর পার্টি অফিস থেকে অভিযুক্ত পুর চেয়ারম্যান সুবল বসাক, প্রাক্তন চেয়ারম্যান বলরাম ঘোষ ও জেলা নেতা অচিন্ত্য চক্রবর্তীকে পুলিশ ধরে।
এদিন ধৃত সিপিএম নেতাদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন তড়িত ওঝা, শেখর দাশগুপ্ত এবং গণতান্ত্রিক আইনজীবী সঙ্ঘের জেলা সম্পাদক শিবতোষ চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের দাবি, ধৃত অচিন্ত্যবাবুর বিরুদ্ধে পুলিশ এদিন আগ্নেয়াস্ত্রের সাজানো মামলা দায়ের করেছে। সে কথা তাঁরা আদালতে জানিয়ে ধৃতদের জামিনের আবেদন করেন বিচারক আবেদন নাকচ করে তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আইনজীবী শিবতোষবাবু অভিযোগ করেন, “আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের সিজার লিস্টে অচিন্ত্যবাবু সই করতে অস্বীকার করেছেন বলে জানিয়ে তদন্তকারী নথিতে উল্লেখ করে আদালতে জমা দেন।” গণতান্ত্রিক আইনজীবী সঙ্ঘের জেলা সম্পাদকের বক্তব্য, “চার দিনের পুলিশি হেফাজত থাকাকালীন ধৃত ৩ জনের কাউকে জেরা করা হয়নি আদালতের কাছে লিখিতভাবে অচিন্ত্যবাবুরা জানিয়েছেন।”
|