দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে পুরসভার চেয়ারম্যান -সহ তিন নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে রাস্তায় নামল সিপিএম। শুক্রবার বিকেলে গঙ্গারামপুর শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে অন্যায় ভাবে নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে সিপিএম। আজ, শনিবার বিকেলে গঙ্গারামপুরের হাই রোডে অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে সিপিএম। সিপিএমের অভিযোগ, ‘সার্চ ওয়ারেন্ট’ ছাড়াই পার্টি অফিসে ঢুকে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।
গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল বসাক সে সময় পার্টি অফিসে ছিলেন। তখন তিনি বিষয়টি জানতে চাইলে তাঁকে জোর করে পুলিশের জিপে তোলা হয় বলে সিপিএমের আইনজীবী সেলের অভিযোগ। আইনজীবী সেলের বক্তব্য, “৩ জনকে গ্রেফতার করে গঙ্গারামপুর থানার বদলে তাদের হরিরামপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে কেন তা স্পষ্ট নয়।” আইনজীবী শিবতোষ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ করেন, “পুর চেয়ারম্যান সুবল বসাককে কি অপরাধে ধরা হলো সন্ধ্যা পর্যন্ত তা পুলিশ জানাতে পারেনি।” পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তা আইন মেনেই গ্রেফতার করা হয়। আমাদের কাছে অভিযুক্ত ওই নেতাদের গ্রেফতারে আদালতের আদেশ ছিল।” |
বাম আমলে একাধিক ফৌজদারি মামলায় ফেরার থেকেও বিশেষ আমল না দেওয়ায় পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জেলে যেতে হয় মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাস, মানবেশ চৌধুরীকে। ফলে, তৃণমূলের পরিবর্তনের সরকারের আমলে একই ভুল তারা করবেন, এমনটা গঙ্গারামপুরবাসীর একাংশ মনে করেন না। এ দিন বাসস্ট্যান্ড এলাকার চা মিষ্টির দোকানি থেকে হোটেল ব্যবসায়ী এবং শিক্ষক সরকারি কর্মীর একাংশের মধ্যে পুর চেয়ারম্যান গ্রেফতার এবং প্রাক্তন মন্ত্রীর খোঁজে তার বাড়িতে তল্লাশি অভিযানের খবরে অবাক হয়েছেন অনেকে।
মানবেশ চৌধুরী অভিযোগ করেন, “৫০ -৬০ জন রাফ ও কমব্যাট ফোর্স নিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাসের বাড়িতে হানা দেয়। তাঁর বৃদ্ধা মাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। পার্টি অফিসে ঢুকে পুর চেয়ারম্যান -সহ তিন জেলা নেতাকে গ্রেফতার করার সময় গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখাতে পারেনি।”
ধৃত পুর চেয়ারম্যান সুবলবাবু বলেন, “ঘটনার দিন আমি দমদমায় ছিলাম না। পুলিশ কোনও গ্রেফতারি পরোয়ানা না দেখিয়ে আমাকে গ্রেফতার করেছে।” প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণবাবুও গোটা বিষয়টিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে সেটা জানতামই না। আমরা তো কোথাও পালাইনি। তা হলে আজালতের কাছে আমাদের ফেরার বলা হল কেন? এটা চক্রান্ত।”
অভিযুক্তরা যেখানে দাবি করছেন, তাঁরা কখনও ফেরার ছিলেন না। নিয়মিত পুরসভা, সরকারি দফতর, দলীয় অফিসে যাতায়াত করেছেন। তা হলে আগে কেন তাঁদের গ্রেফতার করা হয়নি? এই প্রসঙ্গে পুলিশ সুপারের প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জবাব, “ফেরার বলেই আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। তা ছাড়া, কাকে, কখন গ্রেফতার করা হবে সেই ব্যাপারে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ ছাড়া অন্য জায়গায় কৈফিয়ৎ দেওয়া সম্ভব নয়।” প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাসের বৃদ্ধা মা নিরূপমাদেবী ও স্ত্রী জয়শ্রীদেবীর বক্তব্য, “হঠাৎ একদল পুলিশ হুড়মুড় করে বাড়িতে ঢুকে পড়ে। চারদিক তল্লাশি শুরু করে। কারণ জানতে চাইলে কোনও উত্তরই তারা দেননি। আমরা আতঙ্কে আছি।” এদিন সন্ধ্যার পর থেকে গঙ্গারামপুরে সিপিএমের পার্টি অফিসের সামনে প্রচুর পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়। বালুরঘাটে জেলা সিপিএমের পার্টি অফিসেও সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারি রয়েছে। |