পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের মানুষকে সম্মান করার পরামর্শ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। পাশাপাশি, দলে কারও ভুল হলে মানুষের কাছে তা স্বীকার করে নেওয়ারও পরামর্শ দিলেন তিনি। শুক্রবার রায়গঞ্জে বিধানমঞ্চে উত্তর দিনাজপুর জেলার পঞ্চায়েত ভোটের দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে আয়োজিত কর্মিসভায় সুব্রতবাবু ওই পরামর্শ দেন। তবে কামদুনিতে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের প্রসঙ্গে বা কামদুনির বাসিন্দা প্রতিবাদী দুই মহিলা টুম্পা কয়াল ও মৌসুমী কয়ালকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাওবাদী বলে চিহ্নিত করার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। সুব্রতবাবুর বক্তব্য, “বিষয়টি আমার বলার নয়।” তার আগে অবশ্য তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি বলেছেন, “গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের সঙ্গে ভাল করে কথা বলুন। সম্মান করুন। কোনও ভুল হয়ে থাকলে তা স্বীকার করে নিন। মনে রাখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ মেনেই কাজ করতে হবে।” পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে এদিন উদ্বেগ প্রকাশ করেন সুব্রতবাবু। তিনি বলেন, “জেলায় কংগ্রেস ও সিপিএমের ভূত ঘুরে বেড়াচ্ছে। গত পাঁচ বছরে জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েতগুলিতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। ভবিষ্যতে সরকার সব কিছুর বিচার করবে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস এবং সিপিএমকে ক্ষমতাচ্যুত করতে জেলা সভাপতি অমল আচার্যকে সামনে রেখে এক হয়ে কাজ করুন।” তাঁর অভিযোগ, জেলার বেশিরভাগ গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ বিরোধীদের দখলে থাকায় রাজ্য সরকার উন্নয়ন করতে পারেনি। তাঁর দাবি, “জেলার সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ তৃণমূলের দখলে থাকা অত্যন্ত জরুরি।” রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সির নাম না করে সুব্রতবাবুর কটাক্ষ, “২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল পাশে না থাকলে ঘরের বউকে ঘরে ঢুকে যেতে হত।” তাঁর অভিযোগ, “নানা মহল থেকে অপপ্রচার করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার ও তৃণমূল পঞ্চায়েত নির্বাচনে করার পক্ষে নয়। তাঁর কথায়, “দল নির্বাচন করানোর পক্ষে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করানোর দাবিতে যথাস্থানে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও।” দীপাদেবী এই প্রসঙ্গে বলেন, “মুখে জোটের কথা বললেও লোকসভা নির্বাচনে কারা গোঁজ প্রার্থী দিয়ে আমাকে হারানোর চেষ্টা করেছিলেন তা সবাই জানেন। কারণ সেই গোঁজ প্রার্থীকেই বিধানসভা নির্বাচনের পরে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলের পর জেলায় শেষ হাসি হাসবে কংগ্রেসই।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব পাল জানান, তাঁরা তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ ও দাবি নিয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না। |