শশা ফেলে অবরোধ জাতীয় সড়কে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ধূপগুড়ি |
শুক্রবার সঠিক দাম না পেয়ে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে শসা ফেলে চারঘণ্টা অবরোধ করলেন ধূপগুড়ির শতাধিক চাষি। স্থানীয় প্রশাসন অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য চাষিদের অনুরোধ করলেও কাজ না হওয়ার ঘটনা মহাকরণে পৌঁছায়। এর পরে রাজ্যে কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন। মন্ত্রীর নির্দেশে তাঁর দফতরের কর্তারা বিক্রি না হওয়া শসা কিনে কলকাতার বাজারে নিয়ে যাওয়া হবে বলে বিডিওকে জানান। চাষিদের সঙ্গে বৈঠক করে সরকারের উদ্যোগের কথা জানানোর পর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপবাবু বলেন, “দ্রুত শীগ্রী আমরা শসা কিনে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করব। কৃষকরা যে শসা বিক্রি করতে পারবেন না তা পাঁচ টাকা কিলো দরে আমরা কিনে কলকাতার বাজারে বিক্রি করব। সমস্ত খরচ সরকার বহন করবে। নিয়মিত বাজার পরিদর্শন করার জন্য অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” |
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধূপগুড়ি ব্লকে ২১৫ হেক্টর জমিতে শসা চাষ করেছে স্থানীয় কৃষকেরা। তাঁদের বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ১৫-১৮ হাজার টাকা। শুক্রবার ধূপগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে ৩০ টন শসা চাষিরা আনেন। চাহিদার তুলনায় যোগান বেশি হতেই সমস্যা শুরু হয়। ভোরে পাঁচ টাকা কিলো দরে কিছু কৃষক শসা বিক্রি করতে পারলেও বাকিদের শসা কেউ কিনতে চাইছিলেন না বলে অভিযোগ। সকাল ৮টা নাগাদ এক কিলো শসার দাম নেমে আসে দু টাকায়। ক্ষুব্ধ চাষিরা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে কয়েক টন শসা ফেলে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। নিয়ন্ত্রিত বাজারে ফটকা কারবার চলছে বলে তাঁরা অভিযোগ করতে থাকেন। বাজারে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি শসার দামের তালিকা ঝোলানোর দাবি তোলা হয়।
অবরোধে অসম-শিলিগুড়ি যাতায়াতের কয়েকশ গাড়ি আটকে পড়ে। যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। ধূপগুড়ির বিডিও সৌমেন্দ্র দূতরাজ বলেন, “গত বৃহস্পতিবার দাম না পাওয়ায় ঘটনায় বাজারে কৃষকদের বিক্ষোভ হয়। এদিন বৈঠকের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।” ব্লক কৃষি আধিকারিক দেবাশিস সর্দার বলেন, কৃষি বিপণ দফতর উদ্যোগ নেওয়ার পর কৃষকরা শান্ত হয়েছেন। গতবারের তুলনায় ৪৫ হেক্টর জমিতে শসা চাষ কম হলেও উৎপাদন বেশি হওয়ার জন্য ক্রেতা তেমন না পাওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
কালিহাট গ্রামের কৃষক নিত্যানন্দ রায় বলেন, “দেড় বিঘা জমিতে ২৫ হাজার টাকা খরচ করে শসা ফলিয়েছি। গত হাটে ১ কুইন্টাল শসা তিন টাকা কিলো দরে বিক্রি করি। এদিন দেড় কুইন্টাল আনার পর কেউ কিনতে না চাওয়ায় রাস্তায় ফেলে দিয়েছি।” ধূপগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারের ব্যবসায়ী মেহের আলি অবশ্য বলেন, “আমদানী বেশি হলে আমরা বাড়তি শসা কিনে কী করব? রাস্তার অবস্থা ভাল নয়। পরিবহণ খরচ অনেক। তা ছাড়া বর্ষা কালে দু তিন দিনের বেশি শসা ভাল থাকে না। তাই বাইরে কোথাও পাঠানোর ঝুঁকিও রয়েছে।”
|