শিলিগুড়ি পুরসভায় ফের আর্থিক সঙ্কট |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ফের আর্থিক সঙ্কট ঘনীভূত শিলিগুড়ি পুরসভায়। কারণ, বাজেট পাস হওয়া নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধায় রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে ১৬ টি ক্ষেত্রে অর্থ খরচের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ৩০ জুন পর্যন্ত ওই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফলে, সোমবার থেকে পুরসভার দৈনন্দিন খরচ কী ভাবে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই শুক্রবার স্থায়ী কর্মীদের বেতন দিয়ে দেওয়া হয়। আজ শনিবার, অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দেওয়া হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।
পরিস্থিতি সামাল দিতে নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন পুর কমিশনার প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধান। পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে কি হবে তা দেখছি।” কংগ্রেস সূত্রে খবর, সব কাউন্সিলরদের নিয়ে সভা করে সমাধানসূত্র খোঁজা চেষ্টা হবে। তৃণমূলের তরফে কৃষ্ণ পাল জানান, আগেই বোর্ড মিটিঙে মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয়েছে। তাঁর কথায়, “মেয়রের নৈতিক অধিকার নেই ওই চেয়ারে বসার। আমরা রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরে ওই বোর্ড মিটিঙের সিদ্ধান্ত অনুমোদনের বিষয়টি জানিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশ আসার অপেক্ষায় রয়েছি।”
এই পরিস্থিতিতে পুরসভার বেহাল দশার বিষয়টি সামনে রেখে পুর ভবনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন বাম নেতারা। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, “কোনও কাজ হচ্ছে না পুরসভায়। উন্নয়ন থমকে গিয়েছে শহরে। বিধবা ভাতা থেকে প্রতিবন্ধী ভাতা সব বন্ধ হয়ে রয়েছে। নতুন আর্থিক বর্ষে আসেনি কাউন্সিলর খাতের টাকা। এই অরাজক অবস্থার জন্য তৃণমূল ও কংগ্রেস উভয় দলই দায়ী।” তিনি বলেন, “২০০৯ সালে আমাদের থেকে জোটের প্রতি বেশি ভরসা করে তৃণমূল আর কংগ্রেসকে ক্ষমতায় এনেছিল শহরের মানুষ। কিন্তু ভরসা রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন তাঁরা।”
এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে স্বাভাবিক কাজ চলবে তা নিয়ে কোনও নির্দেশ পৌঁছয় নি পুরসভায়। কাজের সংখ্যার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যদিও কী বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে তা নিয়ে কথা বলতে চান নি পুর কমিশনার। বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। তবে এই দু’দিনে কোন নির্দেশ না আসে তবে আইনি পথে যাবে বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর। যদি শনিবারের মধ্যে কোন নির্দেশিকা না আসে তবে সোমবার থেকে কার্যত স্তব্ধ হবে শহর। ১০ লক্ষ মানুষকে অসুবিধেয় পড়তে হবে। আর এর জন্য দায়ী রাজ্য সরকার এমনটাই মন্তব্য করেন সঞ্জয় পাঠক।
অশোকবাবু বলেন, “এই বোর্ড শুধু ব্যর্থ নয়, শিলিগুড়ি শহরকে পিছিয়ে দিচ্ছে এই বোর্ড।” এ দিনের অবস্থান বিক্ষোভে দু’দলের পাশাপাশি পুর কমিশনারের ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিরোধী দলনেতা নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “অচলাবস্থা তৈরির জন্য রাজ্য সরকার। তৃণমূল ষড়যন্ত্র করে এ সমস্ত কাজ করছে।” কংগ্রেসকেও সমান দোষারোপ করেন তিনি। নুরুল বাবু বলেন, “বাতানুকুল গাড়ি, ঘরে বসে রয়েছেন মেয়র, মেয়র পারিষদরা। অথচ গরিব মানুষ টাকা পাচ্ছেন নাতা নিয়ে কোনও চিন্তা নেই।” তবে মেয়র বলেন, “বামেরা নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান থেকে যা মনে করছেন তা বলছেন। তার কোনও প্রতিক্রিয়া দেব না।” |