ছাত্র বিক্ষোভ, বারান্দাতেই কাজ করলেন অধ্যক্ষ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
ছাত্ররা ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখানোয় প্রায় সাড়ে ৭ ঘণ্টা কলেজের বারান্দাতে বসেই অফিস করলেন অধ্যক্ষ ধীরাজ বসাক। প্রথম বর্ষে ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে ছাত্র সংসদের কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে অভিযোগে শুক্রবার সকালে জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষের ঘরের সামনেই ছাত্র পরিষদ বিক্ষোভ শুরু করেন। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পরে বারান্দায় চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসে অফিসের কাজ শুরু করেন অধ্যক্ষ। সকাল থেকে এদিন সন্ধ্যে ৭ টা পর্যন্ত কলেজে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্র পরিষদ। |
কলেজের বারান্দাতে কাজ করছেন অধ্যক্ষ। ছবি: সন্দীপ পাল। |
চলতি বছর আনন্দচন্দ্র কলেজ কর্তৃপক্ষ ‘অনার্স’ বিষয়ের মতো ‘পাস’ অর্থাৎ সাধারণ বিভাগের বিষয়েও প্রথম বর্ষে ভর্তির ক্ষেত্রে কাউন্সিলিং চালু করার সিদ্ধান্ত নেন। ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের অভিযোগ, ভর্তির ফি বাড়ানো, কাউন্সিলিঙের সিদ্ধান্ত সহ অন্য কোনও সিদ্ধান্তই তাদের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া হয় নি। ছাত্র পরিষদের দাবি, সাধারণ বিভাগে কাউন্সিলিং চালু হলে সব আবেদনকারী ভর্তির সুযোগ পাবেন না। অন্য দিকে, কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে বিক্ষোভকারীদের জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রথম বর্ষে ভর্তিতে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে কাউন্সিলিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে কলেজের সময়ও বাঁচবে। যদিও, বিক্ষোভ চালাতে থাকায়, অধ্যক্ষ ঘরে ঢুকতে পারেন নি। প্রায় আঘধণ্টা অপেক্ষার পরে সকাল সাড়ে দশটা থেকে অধ্যক্ষ বারান্দাতে বসেই অফিসের কাজ শুরু করেন। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তিনি ছিলেন। ছাত্র পরিষদও ততক্ষণ পাশে বিক্ষোভ চালিয়ে যান।
কলেজের অধ্যক্ষ ধীরাজবাবু বলেন, “আমাকে ঘরে ঢুকতে দেওয়া হয় নি। তবে অফিসের কাজ তো চালাতে হবে। সে কারণে বারান্দাতে বসেই অফিস করছি।” বিক্ষোভকারীদের দাবি প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ জানান, “ভর্তি সংক্রান্ত যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, নির্দেশ মেনেই নেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলিং করে ভর্তি হলে দু-তিন দিনের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। আর এমনতো নয়, যে কাউন্সিলিং করে ভর্তি হলে সকলে সুযোগ পাবেন না। যত আসন থাকবে ততজন পড়ুয়া ভর্তি হবে, কাউন্সিলিং হলেও, না হলেও। বিক্ষোভকারীদের দাবি নিয়ে আলোচনা করব।”
ছাত্র পরিষদ নেতা শৌভিক চৌধুরী বলেন, “কাউন্সিলিং শুধু বিষয় নয়, কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনওরতকম সিদ্ধান্তই ছাত্র সংসদের সঙ্গে আলোচনা করছেন না। গণতান্ত্রিক ভাবে ছাত্র সংসদ তৈরি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সেটি না মানলে দুর্ভাগ্যজনক। আমরা চাই যাতে সব ছাত্র কলেজে ভর্তি হতে পারে।” যদিও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকেই স্বাগত জানানো হয়েছে। দলের জেলা সভাপতি অরিন্দম ভট্টাচার্য বলেন, “এতদিন আনন্দচন্দ্র কলেজে ছাত্র ভর্তি নিয়ে ছাত্র সংসদ স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে এসেছে। অনেক ছাত্রছাত্রী যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কলেজে ভর্তি হতে পারেননি। কাউন্সেলিং হলে সকলে সুযোগ পাবেন, এটা যারা মানতে পারছে না তারাই প্রতিবাদ করছে।”
|